মরিশাসের রাজধানীতে বঙ্গবন্ধুর সম্মানে সড়কের নামকরণ

দ্বীপ দেশ মরিশাসের রাজধানী পোর্ট লুইসে বাংলাদেশেরজাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সম্মানে একটি সড়কের নামকরণ করা হয়েছে।

বৃহষ্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) অনলাইন প্লাটফর্মে মরিশাস সরকারের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও স্থানীয় সরকার ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হসনু এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন যৌথভাবে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্ট্রিট’ এর উদ্বোধন ও ফলক উন্মোচন করেন।

এ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর ভিডিও বার্তায় বলেন, বঙ্গবন্ধুর নামে পোর্ট লুইসে এই রাস্তার নামকরণ মরিশাস এবং বাংলাদেশের মধ্যে বহুমাত্রিক সম্পর্কের নিদর্শন তৈরি করেছে। তিনি মরিশাসের স্থানীয় ভাষায় বলেন যে, “হাতে হাত রেখে (লামে দা লামে)” সম্পর্কের নতুন দিগন্তে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

Travelion – Mobile

মরিশাসের উপ-প্রধানমন্ত্রী ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হসনু তাঁর বক্তব্যে বলেন, রাস্তার নামকরণের মাধ্যমে বাংলাদেশের জাতি জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পেরে মরিশাস সরকার ও জনগণ গর্বিত। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার মূল চালিকা শক্তি হিসেবে বিবেচিত এবং বাংলাদেশের ইতিহাসে তিনিই শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।

মরিশাসের রাজধানী পোর্ট লুইসে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্ট্রিট’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান
মরিশাসের রাজধানী পোর্ট লুইসে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্ট্রিট’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান

তিনি মরিশাসের ধারাবাহিক উন্নয়নে প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের দৃষ্টান্তমূলক অবদানের কথাও স্মরণ করেন এবং পোর্ট লুইস সিটি কাউন্সিলের সহযোগিতায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের এই মহতী উদ্যোগের প্রশংসা করেন।

বছরব্যাপী বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর আয়োজনে মরিশাস সরকার অংশগ্রহণ করায় মরিশাস সরকার ও জনগণ এর প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন এমপি।

বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্ন পূরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন যে, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা রধানমন্ত্রী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশের কাতারে সামিল হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন এবং তাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আমরা সে দিকেই এগিয়ে যাচ্ছি।

মরিশাস-প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন দ্বি-পাক্ষিক বিষয়ে দু’ দেশের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় ও মজবুত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি বঙ্গবন্ধুর নামে রাস্তার নামকরণের জন্য মরিশাস সরকারকে ধন্যবাদ দিয়ে বলেন যে, এই রাস্তার মাধ্যমে দু‘দেশের সম্পর্কের মধ্যে নতুন দিগন্তের সূচনা হলো।

প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের অবদানের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এবং মরিশাস উভয় দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশি কর্মীগণ নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।

মরিশাসের রাজধানী পোর্ট লুইসে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্ট্রিট’ এর অনলাইন উদ্বোধনী অনুষ্ঠান
মরিশাসের রাজধানী পোর্ট লুইসে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্ট্রিট’ এর অনলাইন উদ্বোধনী অনুষ্ঠান

তিনি বিশেষভাবে কোভিড-19 পরিস্থিতিতে বাংলাদেশি কর্মীদের প্রতি প্রয়োজনীয় সহযোগিতা অব্যাহত রাখায় মরিশাস সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

পরিশেষে, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এমপি ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্ট্রিট’ এর বাস্তবায়ন এবং উদ্বোধনের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, মরিশাস এবং বাংলাদেশের দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক আরো এক ধাপ এগিয়ে গেলো।

মরিশাসে বাংলাদেশের হাইকমিশনার রেজিনা আহমেদ তাঁর স্বাগত বক্তব্যে বলেন, মরিশাস সরকার বাঙালি জাতির মুক্তির নায়ক, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি যে অভূতপূর্ব সম্মান প্রদর্শন করেছে, তা দু‘দেশের বন্ধনকে চিরস্থায়ী করবে।

মরিশাসে বাংলাদেশ হাইকমিশনও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পোর্ট লুইস প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন পোর্ট লুইস সিটি কাউন্সিল এর লর্ড মেয়র মাহফূজ মুসা কাদেরসাইব, স্থানীয় সংসদ সদস্যগণ, ডিপ্লোমেটিক কোরের প্রতিনিধিবৃন্দ, সিভিল সোসাইটি, প্রবাসী বাংলাদেশিবৃন্দ এবং বাংলাদেশ প্রান্তে সরাসরি যুক্ত হন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নুর তাপস, পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব)মাসুদ বিন মোমেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের কিউরেটর মো. নজরুল ইসলাম খান এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ। অনুষ্ঠান শেষে মুজিব বর্ষের লোগো সম্বলিত রঙিন বেলুন অবমুক্ত করা হয়।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!