ভূস্বর্গ বাটাম

বিনা ভিসা অর্থ্যাৎ অন-এরাভাইল ভিসার সুযোগে ইন্দোনেশিয়ার বাটাম দ্বীপ এখন সিঙ্গাপুর প্রবাসী বাংলাদেশীদের জন্য বেড়ানোর আকর্ষণীয় জায়গা হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি ডাবল এন্ট্রি ভিসার সুবাদে সিঙ্গাপুরে ব্যবসা ও বেড়াতে যাওয়া বাংলাদেশীরাও হাতছাড়া করছেন না মনকাড়া সুন্দরের এই দ্বীপের বিচিত্র অভিজ্ঞতা নেয়ার সুযোগ। গত জুন মাসে ব্রডকাস্ট এশিয়া মেলা উপলক্ষে সিঙ্গাপুর গিয়ে এই সুযোগে বাটাম ভ্রমনের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা পেলাম।

সিঙ্গাপুর থেকে নৌপথে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরে বাটাম, এতটাই কাছে যে সিঙ্গাপুরের সাগড়পাড়ের উচু ভবন থেকে ইন্দোনেশিয়ার দ্বীপগুলোর দিকে তাকালে সহজেই চোখে পড়ে যায় রৌদ্রস্নাত বাটাম। দক্ষিণ চীন সাগরের সুমাত্রা থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে গোল হয়ে বেকে আনামবাস দ্বীপপুঞ্জ পর্যন্ত ছড়িয়ে থাকা দু’হাজার চারশরও বেশি দ্বীপ নিয়ে রিয়াও রাজ্যেটি। তারই একটি দ্বীপ বাটাম, স্থানীয় নাম কোটামাড্যা। বালি আর জাকার্তার পর ইন্দোনেশিয়ার তৃতীয় ব্যস্ততম প্রবেশদ্বার এবং অস্টম বৃহত্তম শহর।

ডিউটি ফ্রি শপিংয়ের অবারিত সুযোগ, তাজা সামুদ্রিক মাছসহ জিভে জল এনে দেয়া মজাদার খাবার, আদর্শ ট্রেকিং, ডুবসাতার, মাছ শিকারের অলস নির্মোদ আনন্দ, গলফিং, জঙ্গল চষে বেড়ানো আর সৈকতের নির্মল সাদা বালুকায় সময় কাটানো-এতসব আয়োজনে বাটাম বেড়ানো আদর্শ জায়গা হয়ে উঠেছে তাবৎ বিশ্বের ভ্রমণপ্রেমীদের, নতুন করে যুক্ত হলো বাংলাদেশি পর্যটকরা।

বাটামে স্বাগতম
দূর থকে দেখা যায় পাহাড়ে গায়ে লেখা বাটামে স্বাগতম

Travelion – Mobile

বাটাম যাবার লোভটা দেখিয়েছিলেন ব্রডকাস্ট মেলাতে যাওয়া সময় টেলিভিশনের প্রশাসন প্রধান আকতার বাবু। বাংলাদেশি টিভি চ্যানেলগুলোর প্রতিনিধিদের কমবেশি সবার সায়ে সিদ্ধান্ত হয় মেলা শেষের পরদিন বাটাম বেড়ানোর। শেষপর্যন্ত সময়ের আকতার ভাই আর সময় বের করতে পারেননি। আমার সফরসঙ্গী চ্যানেল নাইনের বিপণন প্রধান নুরুল ইসলাম খসরু অফিস দায়িত্ব ফেলে যেতে নারাজ, অনুষ্ঠান প্রধান তানভীর খান প্রযুক্তি সংগ্রহে ব্যস্ত। গেলেন শুধু যমুনা টেলিভিশনের ব্রডকাস্ট প্রধান আরিফুর রহমান আর ডিবিসি’র ব্রডকাস্ট প্রধান হামিদ মুকুল, তাও মেলা শেষের বিকেলেই। ঘন্টা দুয়েক ছিলেন। জায়গাটি সুন্দর, নিরাপদ আর যাতায়াত সহজ তাদের ভরসাই পরদিন ৪ জুন একাই রওনা হলাম বাটামে ।

সিঙ্গাপুর শহরের হার্বারফ্রন্ট থেকে বাটামের ফেরি ছাড়ে প্রতি ঘন্টায়। যাওয়া-আসা ৪৮ সিঙ্গাপুরী ডলার। ১২টার টিকেট কেটে ইমিগ্রেসন মাত্র তিন মিনিটে পাসপোর্টে সিল মেরে। শীততাপ নিয়ন্ত্রিত দোতলার আধুনিক ফেরি। ২ শোর মতো যাত্রী, বেশিরভাগই সিঙ্গাপুরী বলে মনে হল। সময় ধরেই ছাড়লো। সিঙ্গাপুর প্রণালী ধরে ছুটে চলল্লো বাটামের দিকে। ১০৫ কিলোমিটার লম্বা আর ১৬ কিলোমিটার প্রস্থের প্রণালীটি পশ্চিমে মালয়েশিয়ার মালাক্কা প্রণালী আর পূর্বে দক্ষিণ চীন সাগরের সাথে যুক্ত। উত্তরে সিঙ্গাপুর আর দক্ষিণে ইন্দোনেশিয়ার রিও দ্বীপরাজ্য।

একপাশে সানতোসা আইল্যান্ড আরেক পাশে সিঙ্গাপুর সমুদ্রবন্দরকে রেখে ফেরি এগুচ্ছে সামনে। ব্যালকনিতে পেছনে তাকাতে সাগরপাড়ের সিঙ্গাপুর শহরকে দেখলাম অন্য এক সৌন্দর্যে, নীল আকাশের সাথে মিতালী করে দাড়িয়ে আছে মেরিনা বে, ফ্লায়ারসহ বিশাল উচ্চতার স্থাপনাগুলো। খানিকপরই পেলাম বহিঃনোঙ্গর। ভাসছে সারি সারি মাদার ভ্যাসেল। সাগরকে ব্যবহার করেই এককালের জেলেদের বাসভূমি সিঙ্গাপুর আজ পৃথিবীর অন্যতম ধনী রাষ্ট্র, ভাবতেই অবাক লাগে। অথচ বিশাল সমুদ্র সীমানা নিয়ে আমরা এখনও অথৈই জলে।

বাটাম  বেড়াতে এসেছেন সিঙ্গাপুর প্রবাসী বাংলাদেশী পরিবার
বাটাম বেড়াতে এসেছেন সিঙ্গাপুর প্রবাসী বাংলাদেশী পরিবার

ফেরিতেই পেলাম সিঙ্গাপুর প্রবাসী দুই বাংলাদেশী জামালপুরের আবদুর রশিদ ও মো: সেলিমকে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। জানালেন বিনা ভিসার সুবিধা থাকায় ছুটি কাটাতে যাচ্ছেন বাটাম। আগেও একবার গেছেন। সস্তা খাবার আর শপিং আর আর্কষণই বারবার যাওয়া, জানাতে দ্বিধা করলেন না।
দূরও থেকে চোখে পড়ল পাহাড়ের গায়ে খোচিত ‘ডঅখঈঙগঊ ইঅঞঞঅগ’। বরাবর ১ ঘন্টায় ফেরি ভিড়লো বাটাম সেন্টার আন্তর্জাতিক টার্মিনালে। ঝকঝকে, তকতকে আধুনিক টার্মিনাল। ইমিগ্রেশনের ডেস্কের এগুতেই চোখে পড়ল ভিসা ফি কাউন্টার। পাসপোর্র্ট দিয়ে জানতে চাইলাম ফির পরিমাণ। ফিরিয়ে দিয়ে কাউন্টারের মালায় তরুণীটি জানালেন ফি লাগবে না। অন-এরাভাইল ভিসার সাথে ফিও মাফ। অবশ্য বিমানবন্দরে ৩০ ডলার দিতে হয়। নৌবন্দরে জন্য ছাড় কেন বুঝতে পারলাম না। মাত্র ৫ মিনিটেই শেষ হলো ইমিগ্রেশন।

একেবারেই বিনাবাক্যে সিল পড়লো পাসপোর্টে, ভ্রমণের তালিকায় যুক্ত হলো আরও একটি নতুন দেশ, ইন্দোনেশিয়া। বাংলাদেশের প্রতি এই বদন্যতার মনে মনে ধন্যবাদ জানালাম ইন্দোনেশিয়া প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডেকে যিনি গত এপ্রিলে আরও ৭৭টি দেশের সাথে বাংলাদেশের জন্য ভিসামুক্ত প্রবেশের সুবিধা দিয়েছেন।

টার্মিনালের মূল ভবনে তথ্যকেন্দ্র, মানি এক্সচেঞ্জ, খাবারের দোকান, সুভেনিয়ার শপ আছে সবকিছু। দারুণ ব্যবস্থা। তথ্যকেন্দ্র থেকে টুকিটাকি জেনে বাটাম নির্দেশিকা নিয়ে নিলাম। মানি এক্সচেঞ্চ থেকে ভাঙালাম ডলার। মুদ্রার মান আগেই জানা ছিল, তাই অবাক হয়নি। ২০ সিঙ্গাপুরী ডলার ভাঙিয়ে পেলাম প্রায় দুই লাখ ইন্দোনেশিয়ান রূপী। পঞ্চাশ হাজার, বিশ হাজার, দশ হাজার টাকার মুদ্রা। বাংলাদেশি এই ১২’শ টাকায় কিন্তু হয়ে গিয়েছিল খাওয়াসহ বাটাম দেখার পুরো খরচ। আসলেই সাশ্রয়ী জায়গা।

ইন্দোনেশিয়া-মালয়েশিয়া-সিঙ্গাপুর এই ত্রিভুজ সমৃদ্ধি চক্রের উৎপাদন ভিত বাটাম। আয়তন সিঙ্গাপুরেরই সমান, ১,৫৯৫ বর্গ কি.মি। ৬টি দ্বীপাঞ্চলে ১৪টি জেলা। জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে ১০ লাখ। দ্বীপজুড়ে প্রশস্ত সড়ক, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ছয়টি ফেরি টার্মিনাল, গুচ্ছ শিল্পাঞ্চল, হাউজিং প্রকল্প, অসংখ্য হোটেল-রিসোর্ট, শপিং মল, ৫টি গল্ফ কোর্ট মিলিয়ে বিশ বছরের লাগাতার উন্নয়নে এখানে ব্যবসা মিতালি গড়েছে বিনোদনের সাথে।

৬৫ হাজার রূপীতে টেক্সি নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম শহর ঘুরতে। একেবারে নিরিবিলি, কর্মব্যস্ত সিঙ্গাপুর শহর থেকে বিপরীত, সৌম্য আবহ। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন, চারিদিকে সবুজের ছড়াছড়ি। হর্ণবিহীন শহরের প্রশস্ত রাস্তাগুলোতে মটর সাইকেলেই বেশি দেখা গেলে। বিশ্বসেরা ব্র্যান্ডের সদ্য মডেলের গাড়িও নেহাত কম নয়।

ইলেকট্রনিক্স পণ্যের কারখানা, বিশাল এবং বাড়তে থাকা জাহাজ মেরামত শিল্প এবং তার চাইতেও বড় তেল সেবা খাত নিয়ে দ্বীপটি হয়ে উঠেছে অর্থনীতির একটি অন্যতম কেন্দ্র। এটাকে চায়নার বিশেষ অর্থনৈতিক জোনের সমতুল্য ভাবা হয়, যেখানে ইন্দেনেশিয়ার নতুন নতুন অর্থনৈতিক নীতি ও ধারণা বাস্তবায়নের আগে পরখ করে দেখেন জাতীয় পরিকল্পনাবিদরা।

৪ ঘন্টায় চষে বেড়ালাম এমাথা থেকে ওমাথা। শুরুতেই বাটাম সেন্টার এলাকা, যেখানে আছে স্থানীয় সরকার দপ্তরসহ গুরুত্বপূর্ন অফিস, আদালত। এখানকার আকর্ষণীয় জায়গা হল ইঙ্গকু পাটরি বিনোদন পার্ক আর রায়া মসজিদ। বিনোদন ছাড়াও বিশাল পার্কটিতে বড় বড় ইভেন্ট হয়।

বাটামের প্রধান মসজিদ রায়া
বাটামের প্রধান মসজিদ রায়া

রায়া হচ্ছে বাটামের প্রধান মসজিদ। ইন্দোনেশিয়ার খ্যাতনামা স্থপতি আহমেদ নোমানের নকশায় ৭৫ হাজার বর্গমিটার জায়গার উপর ২০০১ সালে মসজিদটি বানানো হয়। মসজিদের ভিতরে সাড়ে তিনহাজার আর বাইরের এলাকা মিলিয়ে একসাথে ১৫ হাজার মুসল্লী নামাজ পড়তে পারেন। পিরামিড আদলের অপূর্ব স্থাপত্যশৈলীর গুম্বজই মসজিদটিকে বিখ্যাত করেছে। এছাড়াও বাটামে জাব্যাল আরাফাসহ দেখার মতো আরো কয়েকটি মসজিদ আছে।

এক ফাঁকে ট্রেক্সি থামিয়ে সড়কপাড়ের হোটেলে সারলাম দুপুরে খাওয়া। বাটামের জনপ্রিয় সামুদ্রিক মাছের সাথে ভাত। অসাধারণ স্বাদ। মাত্র ৩০ হাজার রূপী! এরপরের গন্তব্য নাগোয়া সুপারব্লকে, বাটামের শপিং রাজ্যে। ২ শোর মতো বড় আর ৫ শোর মতো খুপড়ি দোকানের এই ব্লকেই আছে বাটামের সবচেয়ে বড় বিপণিবিতান ‘নাগোয়া হিল মল’। পাহাড়ের উপর গড়া আধুনিক মার্কেটটি আছে অসংখ্য ব্র্যান্ড শপ। কেনাকাটার স্বর্গরাজ্য বাটামজুড়ে আছে মাতাহারি ও হাইপারমার্টেল মতো সুপার মার্কেটও। ইলেট্রনিক্স পণ্য, পোশাক, প্রসাধনী পাওয়া সবকিছুই অনেক সস্তা। মান কি সিঙ্গাপুরের মতো সেরা? জানতে চেয়েছিলাম সিঙ্গাপুরপ্রবাসী বেসরকারি কোম্পানী উচুপদের কর্মকর্তা মেজবাহউদ্দিনের কাছে, আগের মাসেই সাপ্তাহিক ছুটিতে গিয়েছিলেন বাটাম। বললেন, গিন্নীর বায়না মেটাতে কেনাকাটা করেছিলাম প্রচুর। কিন্তু মান নিয়ে সন্তুষ্ট হতে পারেননি, বিশেষ করে পোশাকে। এর চেয়ে বাংলাদেশি কাপড় আরো ভালো।’ মত আবার ভিন্ন বাংলাদেশি নির্মাণশিল্পী আহমেদ মিয়ার দেখা হয়েছিল ফেরি টার্মিনাল লাগোয়া মেগামল শপিং সেন্টারে। তার ভাষ্য, ‘বিশ্বসেরা বলে সিঙ্গাপুরের জিনিসপত্র দামও আকাশ ছোঁয়া। আমাদের সাধ্যের বাইরে। বাটাম পণ্য বিশ্বসেরা না হলেও খারাপ না। তবে পোশাকে ব্যাপারে মেজবাহউদ্দিনের সাথে একমত তিনি।

বাটামের অন্যতম আকর্ষণ সমুদ্র সৈকতগুলোতে রয়েছে জলক্রীড়ার নানা আয়োজন। আর ছয়টি বড় সেতুযুক্ত বেয়ারল্যাঙ ব্রিজ বাটামের সবচেয়ে আকর্ষনীয় জায়গা। সৈকত আর সবুজের মাঝে ঝুলন্ত সেতুর সৌন্দর্য আর সূর্যাস্ত দেখার আনন্দটাই অন্যরকম, জানিয়েছিলেন সিঙ্গাপুর প্রবাসী বাংলাদশি আইটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মনোয়ার অসীম। পরিবারসহ এ নিয়ে দু’বার বেড়াতে গিয়েছিলেন বাটাম, শেষবার বন্ধুপরিবারসহ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর নিরিবিলি পরিবেশ তাদের বেশি মুগ্ধ করেছিল। আফসোস ব্রিজটি আর দেখা হয়নি, সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় মাঝপথে ফিরে আসতে হল। তেমনি বাদ পড়ে দুতা ও টুয়া প্যাং কং বৌদ্ধবিহার, সেন্ট পিটার ক্যাথলিক চার্চের মতো সুন্দর স্থাপনাগুলো। একপ্রান্ত থেকে আরেকপ্রান্ত মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরত্বের বাটাম একদিনেই ঘুরে দেখা যায়। তবে এক/দুই রাত থাকলে আনন্দটা পুরোপুরি উপভোগ করা যায়, শপিংটাও জমবে ভালো। আধবেলায় আমার বাদ পড়ে এসব জায়গা।
একসময় বিদেশী পর্যটকদের জন্য বাটামের মূল আকর্ষণ ছিলো ক্যাসিনো ও নৈশ বিনোদন। প্রদেশের নতুন গর্ভনর বেশ কট্টর। সম্প্রত্রি এক আদেশেই বন্ধ করে দিলেন সব ক্যাসিনো এবং কড়াকড়িতে ভাটা পড়েছে পতিতাবৃত্তি। তবে জায়গায় জায়গায় আছে ম্যাসেজ পার্লার, বেশিরভাগই চালাচ্ছে চীনারা।
রাত ৭টার ফিরতি ফেরি ধরলাম। ফেরিতেই পেলাম বাংলাদেশি এক পরিবার। সবার হাতে জিনিসপত্র ঠাসা শপিংব্যাগ। পরিচয়ে ব্যাংকার কর্তা জানালেন, চিকিৎসার জন্য ২০ দিন ধরে সিঙ্গাপুরে আছেন। সময় পেয়ে পরিবার নিয়ে বেড়িয়ে গেলেন বাটাম।

কসটারিনা বাটাম
কসটারিনা বাটাম

ইমিপ্রেশনে পাড়ি দিতে সামান্য বাধায় পড়েছিলাম। বাংলাদেশি পাসপোর্ট দেখে সিল মারার ঝুঁকি নিতে পারেনি ডেস্কের তরুণীটি। ডেকে আনলেন ইংরেজী দোভাষী। ফেরার বিমান টিকেট, সিঙ্গাপুরের হোটেলের বুকিং ও রুম কি, ইনভাইটেশন লেটার আর পকেটভরা ডলার দেখানোর পর নিশ্চিত হলেন, দ্বিতীয়বার সিঙ্গাপুরের এন্ট্রি সিল পড়লো।

দরকারি তথ্য
অবশ্যই সিঙ্গাপুরের ডাবল এন্ট্রি ভিসা থাকতে হবে। ঢাকা-সিঙ্গাপুর বাংলাদেশ বিমান, রিজেন্ট এয়ারওয়েজ, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স ও টাইগার এয়ারের নিয়মিত ফ্লাইট আছে। এরমধ্যে বিমানটিকেট, হোটেল, বিমানবন্দর টান্সফারসহ রিজেন্ট এয়ারওয়েজের সাশ্রয়ী প্যাকেজ আছে। আমরা গিয়েছিলাম সেই প্যাকেজে। সিঙ্গাপুর শহরের বাঙালীপাড়া খ্যাত মোস্তফা সেন্টার থেকে ট্যাক্সি বা পাতাল রেলে হারবারফ্রন্ট ফেরি টার্মিনাল ১৫/২০মিনিটের পথ। বাটাম আসা-যাওয়ার ফেরিভাড়া বাংলাদেশি ৩ হাজারেরও কম। সহজেই পাওয়া যায় গাইড। যদি দু/তিনদিন থাকার পরিকল্পনা থাকলেই অবশ্যই বাটামের হোটেল বুকিং করে নিতে হবে। সেখানে হোটেল-রিসোর্ট ছড়াছড়ি। দাম সিঙ্গাপুরের অর্ধেক। অনলাইনে কিংবা সিঙ্গাপুরে গিয়ে বুকিংও করা যায়। কিংবা নিতে পারেন সিঙ্গাপুরের টুর এজেন্সীরগুলোর প্যাকেজও।

সবচেয়ে জরুরী বিষয়, ইমিগ্রেশনের জন্য বাংলাদেশ ফেরার বিমান টিকেট, হোটেল বুকিং স্লিপ, পর্যাপ্ত ডলারসহ প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র সাথে রাখতে হবে। দিনেই ফিরে আসলে সিঙ্গাপুরের হোটেলের চাবিটি সাথে থাকলে ভালো।

মালয়েশিয়ার জোহর বাহরু থেকেও ফেরিতে যাওয়া যায় বাটাম। কিন্তু মালয়েশিয়ার ৩ মাস মেয়াদী মাল্টিপল ভিসা বন্ধ থাকায় তা আর সম্ভব নয়।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!