আরও ৫৭ জনকে পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁ সীমান্ত দিয়ে পুশব্যাক করতে চলেছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। এর আগে বেঙ্গালুরুতে ৫৭ ‘বাংলাদেশি’ আটক হয়েছে বলে দাবি করেছে দেশটির সরকার।
২৬ দিন বেঙ্গালুরুর একটি হোমে আটক ছিলেন এই ৫৭ জন। শুক্রবার অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে তাদের ট্রেনে তোলা হয়। বেঙ্গালুরু পুলিশের ৪০ জনের একটি দল তাদের পাহারা দিয়ে আনছে।
আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেঙ্গালুরু পুলিশ হাওড়ায় রেলপুলিশের হাতে আটককৃতদের তুলে দেবে। তারা সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কাছে বাংলাদেশ সীমান্তে পৌঁছে দেবে। এরপর সীমান্তরক্ষী বাহিনী তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে। বনগাঁ সীমান্ত দিয়ে এই ৫৭ জনকে বাংলাদেশে পুশব্যাক করা হবে বলে জানা গেছে।
বেঙ্গালুরু পুলিশ বলছে, আটককৃতদের কাছে ভারতীয় নাগরিকত্বের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। জেরায় তারা নিজেদের বাংলাদেশি বলে স্বীকার করেছেন। কোনো কাগজপত্র ছাড়াই ভারতে প্রবেশে করেছেন তারা।
পুলিশের দাবি, আটকদের ফোনের কল ঘেঁটে প্রমাণ পাওয়া গেছে যে তারা বাংলাদেশি। তাদের কাজের কথা বলে ভারতে নেয়া হয়েছিল। তাই তারা পাচার হয়ে এসেছে গণ্য করে তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা রুজু করা হয়নি।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশ কর্কমর্তারা স্বীকার করেন, সাম্প্রতিক অতীতে এত বড় সংখ্যায় বাংলাদেশি নাগরিকদের এভাবে এ রাজ্য দিয়ে ‘পুশ ব্যাক’ করা হয়েছে বলে তাঁরা মনে করতে পারেন না।
এ ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছেন ভারতের মানবাধিকারকর্মী রঞ্জিত সুর। তিনি বলেন, এটা ভয়াবহ ঘটনা। কর্ণাটক সরকার দেশের আইন-সংবিধান সব লঙ্ঘন করেছে। কাউকে এভাবে পুশব্যাক করা যায় নাকি? কোনো মামলা নেই তাদের বিরুদ্ধে। পুলিশ কী করে নিশ্চিন্ত হলো তারা বাংলাদেশি? তারা পশ্চিমবাংলার বাঙালিও হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, পুলিশকে বাংলাদেশি নির্ধারণের ক্ষমতা কে দিল? কোন আইনে? পুশব্যাকের অর্ডার কে দিল? কোর্টের আদেশ ছাড়া পুশব্যাক কখনওই করা যায় না। কর্ণাটক সরকার ফেরত পাঠাচ্ছে, তাতে সাহায্য করছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। আমরা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে দাবি করছি, এই পুশব্যাক বন্ধ করুন।
সম্প্রতি কর্ণাটকের বেঙ্গালুরুতে আটক আরও ৮২ জনকে বনগাঁ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ফেরত পাঠায় ভারত। আটকদের মধ্যে ২২ জন পুরুষ, ২৫ জন নারী এবং ১০ শিশু।
এছাড়া চলতি মাসের শুরুতে বনগাঁ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ আসার পথে অনুপ্রবেশের অভিযোগে দুই দফায় ১২৭ জন বাংলাদেশিকে আটক করে জেলে পাঠায় ভারতীয় সংস্থা গুলো। আটকদোের মধ্যে ২১ জন শিশু রয়েছে।
