বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ বিমানসংস্থা এখন কাতার এয়ারওয়েজ!
বিশ্বের প্রথম সারির বিমানসংস্থা কাতার এয়ারওয়েজ ঘোষণা করেছে, তারা এখন বিশ্বের বৃহত্তম। বিমান সংস্থাটির দাবী, বর্তমান সংকটে অব্যাহত কার্যক্রম চালু রাখার মধ্য দিয়ে তারা এখন শীর্ষ স্থানটি দখল করেছে। বর্তমান সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে সবচেয়ে বড় ক্যারিয়ারের শিরোপাটা ঘুরে গেছে নতুন মোড়ে।
এই মহামারিতে অনেক বিমানসংস্থা তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে আনায় এভিয়েশন শিল্প পঙ্গু হয়ে গেছে। কিছু কিছু আরও একধাপ এগিয়ে তাদের সব নির্ধারিত কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছে। তবে, নিজেদের কার্যক্রম কিছুটা কমিয়ে আনলেও কাতার এয়ারওয়েজ এই সংকটে গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্যে যাওয়া মানুষদের জরুরি প্রয়োজন মিটাতে তাদের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত রেখেছিল।
বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতিতে কার্যক্রম অব্যাহত রাখায় কাতার এয়ারওয়েজ বিশ্বাস করে যে, এখন তারা বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিমানসংস্থা। বিশ্বব্যাপী যেসব মানুষেরা তাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে চেয়েছেন তেমন অন্তত ১৮ লাখ মানুষকে বাড়ি ফেরার কাজে এগিয়ে এসেছে এই বিমানসংস্থাটি। মূলত, গেল সংকটকালীন সময়ে কাতার এয়ারওয়েজ ১৫ হাজার ফ্লাইট পরিচালনা করেছে, উড়ে গেছে ৫০ মিলিয়ন কিলোমিটার গন্তব্য।
কাতার এয়ারওয়েজের গ্রুপ সিইও আকবর আল-আল-বাকের গণমাধ্যমে বলেন, “এই সংকটের সময় অন্য যে কোন বিমানসংস্থা থেকে যাত্রীরা কাতার এয়ারওয়েজের সাথে ভ্রমণে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেছে এবং আমরা আমাদের উপর তাদের আস্থাকে সাধুবাদ জানায়….আমরা অন্ধকারতম সময়ে দিনরাত ২৪ ঘন্টা তাদের সাথে ছিলাম এবং আমাদের বিশ্বাস রয়েছে যে আকাশ ভ্রমণে মানুষের আস্থা ফিরে না আসা পর্যন্ত আমরা তাদের পাশেই থাকব।”
সুবিশাল যাত্রী পরিবহনের পাশাপাশি বিশ্ব জুড়ে চিকিৎসা সহায়তা বিতরণের জন্য কাতার এয়ারওয়েজের কার্গো বিভাগও বিরতিহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সংকটের পর থেকে এই করোনা আক্রান্ত অঞ্চলে ১ লাখ ৭ হাজার টন সহায়তা পৌছে দিতে এগিয়ে এসেছে এই সংস্থাটি।
বর্তমান সংকট যখন তীব্র হতে শুরু করেছে, তখনও কাতার এয়ারওয়েজ তাদের ডানা চালু রেখেছে। এটি সত্যে যে তারা তাদের কার্যক্রমকে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশ কাটছাঁট করেছে। তারা তাদের পুরো এয়ারবাস A380 বহরকে এখন মাটিতেই ফেলে রেখেছে। তবে সর্বনিম্ন বিন্দুতে থাকলেও কাতার এয়ারওয়েজ উড়ে গেছে ৩০টিরও বেশি গন্তব্যে।
যেমন হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রীদের ট্রানজিট চালু রাখায় তাদের জন্য আরো অনেক গন্তব্য উন্মুক্ত থাকল। এমনকি যাত্রীসেবা দিতে কাতার এয়ারওয়েজ প্রথম বারের মতো ব্রিসবেনে উড়ে গেল। প্রথম সংস্থা হিসেবে নিজেদের কর্মীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ পিপিই সুবিধা প্রদান করে কাতার এয়ারওয়েজ।
এখন কাতার এয়ারওয়েজ তার কার্যক্রম পুনর্গঠনে ব্যাপকভাবে বিনিয়োগ করছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে যেহেতু সময় লাগবে সেহেতু তারা ধাপে ধাপে তাদের ফ্লাইট কার্যক্রম চালু করবে। জুন মাসের শেষ নাগাদ তারা বিশ্ব জুড়ে মোট ৮০ টি গন্তব্যে উড়ে যাওয়া আশা প্রকাশ করেছে।
সম্প্রতি আমেরিকান এয়ারলাইন্সের সঙ্গে তার কোড শেয়ার চুক্তি হয়েছে তাদের। যার অর্থ কাতারের সঙ্গে আমেরিকার আরও অনেক গন্তব্যের দ্বার খুব শীঘ্রই চালু হবে ।