পাইলটসহ সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ‘বেতন কর্তন’ কমিয়ে আনার কথা ভাবছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। কর্তৃপক্ষ বলছে, বিষয়টি এখন আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে, তবে এ ব্যাপারে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া হতে পারে। চলতি মার্চ মাসের মধ্যেই কর্তৃপক্ষ বেতন-ভাতা আগের মতো করবে বলে আশা পাইলটদের।
গত শনিবার বিমানের পরিচালনা পর্ষদের সভায় ‘বেতন কর্তন’ কমানোর বিষয়টি আলোচনায় আসে। তবে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি পর্ষদ। সভায় পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রতিষ্ঠানটির সবার ‘বেতন কর্তন’ ১০ শতাংশ কমানোর কথা ওঠে।
করোনা সংকটকালে সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা না কমালো রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের গত বছরের মে মাসে কর্মীদের বেতন কর্তন শুরু করে। অনেকের ভাতাও বন্ধ করা হয়। কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তে হতাশ হন পাইলট, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা দেখা দেয় ক্ষোভ-অসন্তোষ। তা সত্ত্বেও তাঁরা এখন পর্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। করোনাকালে সম্মুখসারির যোদ্ধা হয়ে পাইলটরা ঝুঁকি নিয়ে বিমান চালিয়েছেন, এখনো চালাচ্ছেন।
দৈনিক প্রথম আলোর প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের ৫ মে এক প্রশাসনিক আদেশে বিমানের পাইলট, কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন কমানো হয়। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ১০ থেকে ২৫ শতাংশ এবং পাইলটদের ক্ষেত্রে ২৫ থেকে ৫০ শতাংশ বেতন কর্তন করা হয়। একই সঙ্গে স্থায়ী প্রকৃতির ভাতা-ফুড সাবসিডি, মিল ও মিল্ক অ্যালাউন্স না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এ ছাড়া পাইলটদের ওভারটাইম, প্রোডাক্টিভিটি অ্যালাউন্স, ফ্লাইং অ্যালাউন্স না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
‘বেতন কর্তন’ বিষয়টির ইতিবাচক সমাধান হবে আশাবাদী বাংলাদেশ এয়ারলাইনস পাইলট অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) সদস্যরা। অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন মাহবুবুর রহমান দৈনিকটিকে বলেন, ‘আমাদের বিশ্বাস, গত এক বছরে যেটুকু বেতন-ভাতা কর্তন করা হয়েছে, খুব শিগগির সেই বিষয়ের একটা স্থায়ী সমাধান হবে। আমরা বিমান কর্তৃপক্ষ, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরা আশা দিয়েছেন।’
ক্যাপ্টেন মাহবুবু আরও বলেন, পাইলটরা করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। তাঁদের পরিবারের সদস্যরাও সংক্রমিত হয়েছেন। পাইলটরা সুস্থ হয়ে আবার কাজে ফিরেছেন। এত কিছুর পরও করোনার সম্মুখসারির যোদ্ধা হিসেবে পাইলটরা যদি তাঁদের আগের বেতন-ভাতা না পান, তাহলে তাঁরা কষ্ট পাবেন।
অন্যদিকে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন বলেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পাইলট, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতার বিষয়টি বিষয়টি ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে। মন্ত্রণালয় থেকে কোনো সিদ্ধান্ত এখনও নেওয়া হয়নি। তবে খুব শিগগির বিষয়টির সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান বিমানসচিব। সূত্র : প্রথম আলো
