বিদেশ পাঠানোর নামে বহুরূপী আবুলের প্রতারণা

ট্রাভেল এজেন্সি খুলে বিদেশ পাঠানোর কথা বলে প্রায় ২৫ জনের কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ ছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে আছে চাঁদা দাবি, সাংবাদিককে হত্যার হুমকির মামলা-তিনি হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার বাঁশডর গ্রামের জাহির আলীর ছেলে আবুল।

মূল নাম আবুল হলেও কখনো খান, কখনো মিয়া, আবার কখনো হোসেন পদবি ব্যবহার করেন । আগে যুবদলের পরিচয় দিলেও এখন যুবলীগ নেতা পরিচয় দেন। প্রতিমন্ত্রী, এমপি, ওসি—সবার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা। রয়েছে ছবিও। এসব পরিচয়ের আড়ালে তিনি মূলত একজন প্রতারক।

সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার কাশিকাপন ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. দিলু মিয়া অভিযোগ করেন, ইউরোপ যাওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে আবুল তাঁকে নিঃস্ব করেছেন। ভিসার কথা বলে তাঁর কাছ থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা নিয়েছেন। এখন ভিসার কোনো খবর নেই।

Travelion – Mobile

তিনি বলেন, ‘যদি ভিসা দেওয়ার কথা বলি, তাহলে সে আমাকে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করার হুমকি দেখায়।’

তিনি প্রতিকার চেয়ে হবিগঞ্জ গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কাছে একটি অভিযোগ করেছেন।

আরও পড়তে পারেন : মলদোভা নিচ্ছে বাংলাদেশি কর্মী

একইভাবে প্রতারিত হয়েছেন নবীগঞ্জ উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের আবদুল করিম । পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে ছেলে ছেলে কয়েস মিয়াকে বিদেশে পাঠানোর জন্য জমি বেচে টাকা জমা করেছিলেন তিনি। আবুলের খপ্পরে পড়ে এখন নিঃস্ব।

করিম জানান, দুবাই পাঠানোর জন্য ভিজিটিং ভিসা দেন আবুল। ছেলে ও পরিবারের লোকদের নিয়ে ঢাকা বিমানবন্দরে যান। ভেতরে গিয়ে ছেলে জানতে পারেন, ভিসা ও বিমানের টিকিট ভুয়া। হতাশ হয়ে বাড়ি ফেরেন তাঁরা। পরে কল করা হলে আবুল বলেন, ‘আপনার ছেলে আর কয়েক দিন পর বিদেশে যাবে।’

পরে কথা অনুযায়ী আবুলকে কল দিলে পুলিশ পরিচয় দাবি করে কথা বলেন।

করিম বলেন, ‘এলাকায় আবুলের খুব প্রভাব রয়েছে। সে নিজেকে যুবলীগ নেতা বলে দাপট দেখিয়ে অপকর্ম করে বেড়ায়। উপজেলা ও জেলা পরিষদের চেয়রম্যান ও প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে তার সুসম্পর্ক রয়েছে বলে লোকমুখে আমরা জানতে পারি। এ জন্য ভয়ে মামলা করিনি। ’

ঐ গ্রামের আব্দুল হান্নান জানান, আবুল ২০১৫ সালে তাঁর ছেলে হেলাল চৌধুরীকে জর্জিয়া নেওয়ার কথা বলে দুই লাখ ৪০ হাজার টাকা নেন। বিষয়টি এখন গ্রাম্য সালিসে আছে।

তিনি বলেন, ‘মানবপাচারকারী আবুলকে আইনের আওতায় আনা হোক। যাতে আর কোনো নিরীহ পরিবারের মানুষ আমার মতো প্রতারণার শিকার না হয়। ’

আকাশযাত্রার ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিতে চাইলে এখানে ক্লিক করার অনুরোধ

তাঁর প্রতারণার শিকার হয়েছেন বাউসা ইউনিয়নের দক্ষিণগাঁও গ্রামের বাশার মিয়া, রিফাতপুর গ্রামের নেওর আলী, কুশি ইউনিয়নের ফুটারমাটি গ্রামের জাকির চৌধুরীসহ ঢাকা, সিলেট, হবিগঞ্জ জেলার অনেকে।

অভিযোগ স্বীকার করে আবুল বলেন, ‘আমি বিষয়টি নিয়ে বসব। সমাধান করার চেষ্টা করব। ’

উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক শাহগুল আহামদ কাজল বলেন, ‘এই নামে যুবলীগের কোনো নেতা নেই।’ নবীগঞ্জ থানার পরিদর্শক ইকবাল হোসেন বলেন,‘অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে।’

হবিগঞ্জ ডিবির পরিদর্শক শেখ সোহেল রানা বলেন, ‘একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব। ’

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!