বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতুর উদ্বোধন
বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্ত দিয়ে বয়ে যাওয়া ফেনী নদীর ওপর নির্মিত দৈর্ঘ্য ১ দশমিক ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘মৈত্রী সেতু’র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়েছে। বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে এই প্রথম নির্মাণ করা সেতুটি খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার রামগড়ের সঙ্গে ভারতের ত্রিপুরার সাবরুমে যুক্ত করেছে । ১৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ভারতের ন্যাশনাল হাইওয়েস অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট করপোরেশনের বানানো সেতু দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ত্রিপুরাসহ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলেপণ্যপরিবহণ দ্রুত ও সহজ হবে।
মঙ্গলবার (৯ মার্চ) দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে এই সেতুর উদ্বোধন করেন। একইসঙ্গে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী ত্রিপুরার সাবরুমে একটি ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্টেরও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবও বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মৈত্রী সেতু চালুর মধ্য দিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং উত্তর-পূর্বের ল্যান্ডলকড রাজ্যগুলো বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে পণ্য পরিবহন করতে পারে। আগে ১৬০০ কিলোমিটার দূরে আগরতলার নিকটতম সমুদ্র বন্দর ছিল কলকাতা। বর্তমানে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে আগরতলার নিকটতম সমুদ্র বন্দর চট্টগ্রাম বন্দরের দূরত্ব ১০০ কিলোমিটারেরও কম। শুধু চট্টগ্রাম পোর্ট নয়, চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও ত্রিপুরাবাসী ব্যবহার করতে পারবে।
মৈত্রী সেতু শুধু ভারতের সঙ্গে নয় নেপাল, ভুটানের সঙ্গেও বাংলাদেশের বাণিজ্যকে আরো সহজ করবে’ উল্লেখ করে, শেখ হাসিনা বলেন, সন্দেহাতীতভাবে, এটি একটি ঐতিহাসিক মহত্ব। ভারতকে কানেকটিভিটি দেওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় একটি নতুন যুগের সৃষ্টি করেছে। আমরা এমন একটি অঞ্চলে আছি যেখানে কানেকটিভিটি চালুর বিষয়ে রক্ষণশীল ছিল এবং যেখানে সম্ভবনার চেয়ে আন্তঃআঞ্চলিক বাণিজ্য অনেক কম। আমি বিশ্বাস করি, রাজনৈতিক সীমাবদ্ধতাগুলো ব্যবসার ক্ষেত্রে ভৌত বাধা হওয়া উচিত নয়।
ফেনী সীমান্তে মৈত্রী সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক আরো মজবুত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিরী বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ত্রিপুরাসহ উত্তর-পূর্ব ভারতের কানেক্টিভিটি বাড়বে। ফলে এ অঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়বে। ফেনীর কাছেই চট্টগ্রামে আন্তর্জাতিক সমুদ্রবন্দর রয়েছে। এ সেতু দিয়ে সমুদ্রবন্দর দিয়ে পণ্য আনা-নেওয়া সহজ হবে।’