বাংলাদেশ বিমানের ৪ বিশেষ ফ্লাইট বাতিল
প্রবাসীদের জন্য বিশেষ ফ্লাইট চালুর অনিশ্চয়তার শুরুটা ভোর থেকেই। বিমান বাংলাদেশের ‘বিজি-৫০৯৩’ ফ্লাইটটি সোয়া ৬ টার দিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রিয়াদের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, সৌদি আরবের কাছ থেকে অবতরণের অনুমতি না পাওয়ায় ফ্লাইটটি বাতিল করতে হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আজ বিমানের চারটি ফ্লাইট ইতিমধ্যেই বাতিল করা হয়েছে। সন্ধ্যায় একটি ফ্লাইট ছাড়ার আশা করা হচ্ছে।
রিয়াদের ফ্লাইট ছাড়ার ছয় ঘণ্টা আগেই বিমানবন্দরে পৌঁছে যায় প্রায় ৩০০ যাত্রী। পরে আজ ভোররাত ২ টার দিকে বিমান ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ফ্লাইট বাতিলের কথা জানালে যাত্রীরা বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করেন। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা বলছেন, সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ অবতরণ অনুমতি বাতিল করায় বিমানের এই ফ্লাইটটি বাতিল করতে হয়েছে।
বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘যাত্রীদেরকে শহরের একটি হোটেলে নিয়ে রাখা হবে এবং পরবর্তী যে ফ্লাইট যাবে, সেটিতেই তাদের গন্তব্যে নিয়ে যাওয়া হবে।’ বিমান সূত্র জানায়, বাতিল হওয়া ফ্লাইটটিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ৩১৪ জন অভিবাসী শ্রমিকের যাওয়ার কথা ছিল।
বেশ কয়েকজন অভিবাসী শ্রমিক গণমাধ্যমকে জানান, দেশব্যাপী লকডাউন চলায় বিমানবন্দর পর্যন্ত পৌঁছাতেই তাদেরকে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। অথচ ফ্লাইট বাতিলের বিষয়টি তাদেরকে জানানো হয়েছে একেবারে শেষ মুহূর্তে।
বিমানের জনসংযোগ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক তাহেরা খন্দকার বলেন, সৌদি আরবে বিশেষ ফ্লাইট নামার অনুমতি পাওয়া যাচ্ছে না। ইতিমধ্যেই আবেদন করা হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যেই হয়তো এটি পাওয়া যাবে। অনুমতি পাওয়া গেলে সন্ধ্যা ছয়টায় জেদ্দার উদ্দেশে ফ্লাইটটি ছেড়ে যেতে পারে।
সৌদি আরবে সকাল সোয়া ছয়টা, বেলা ২টা ৫০ মিনিটের ফ্লাইট ছাড়াও দুবাইয়ের দুটি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে আজ। সকাল সোয়া ছয়টায় বাতিল হওয়া ফ্লাইটের ২০১ জন যাত্রীকে ইতিমধ্যেই বিমানের ব্যবস্থাপনায় হোটেল রাখা হয়েছে। অন্যদের ক্ষেত্রেও একই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর যাত্রী কম থাকায় দুবাইয়ের ফ্লাইটটি বাতিল করা হয়।
তাহেরা খন্দকার বলেন, বিশেষ ফ্লাইট চালুর ঘোষণার পর সব যাত্রীকে মোবাইলে বার্তা পাঠানো হয়েছে। বিমানের নিকটস্থ টিকিট বিক্রয় কেন্দ্রে গিয়ে তাঁদের যাত্রার তারিখ নিশ্চিত করতে বলা হয় এতে। কিন্তু আজ দুবাইয়ের দুটি ফ্লাইটের জন্য ২২ ও ২৫ জন যাত্রী যাত্রা নিশ্চিত করেছেন। অথচ এর একটি ফ্লাইটেই ৩০০ যাত্রীর টিকিট নেওয়া আছে। তাই যাত্রী কম থাকায় ফ্লাইটটি বাতিল হয়েছে। কাল রোববার আরব আমিরাত ও সৌদি আরবে বিমানের পাঁচটি ফ্লাইট আছে, সেগুলো সব ছেড়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এর আগে প্রবাসী কর্মীদের জন্য আজ থেকে পাঁচটি দেশে বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয় গত বৃহস্পতিবার। মন্ত্রীপর্যায়ের সভা থেকে নেওয়া সিদ্ধান্তে বলা হয়, আজ থেকে নির্ধারিত ফ্লাইটগুলোই বিশেষ ফ্লাইট হিসেবে যাওয়ার অনুমতি পাবে। পাঁচটি দেশে হচ্ছে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কাতার ও সিঙ্গাপুর।
করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে কঠোর বিধিনিষেধের আওতায় ১৪ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত সব আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে অন্তত ৩০ হাজার পুরোনো ও নতুন কর্মীর বিদেশে গিয়ে কাজে যোগদান অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে। জনশক্তি খাতের ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিদেশে যাওয়ার ফ্লাইট খুলে দেওয়ার দাবি জানান।