বাংলাদেশ-গুয়াতেমালা দ্বিপাক্ষিক সর্ম্পক জোরদারের প্রত্যাশা
রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম মেক্সিকো সিটিস্থ গুয়াতেমালা হাউসে গুয়াতেমালা প্রজাতন্ত্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিও অ্যাডলফো বুকারো-এর কাছে তার পরিচয়পত্রের একটি অনুলিপি পেশ করেছেন।
এ সময়, গুয়াতেমালার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী এইচ.ই. রবার্তো আলফ্রেডো পালমা, মেক্সিকোতে গুয়াতেমালার রাষ্ট্রদূত মার্কো সোসা গার্লস, গুয়াতেমালার চিফ অফ প্রটোকল এবং বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে কাউন্সেলর উপস্থিত ছিলেন।
এই পরিচয়পত্র প্রদানের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম গুয়াতেমালা প্রজাতন্ত্রে বাংলাদেশের অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত হলেন। তিনি শিগগিরই গুয়াতেমালা প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতির কাছে তার মূল পরিচয়পত্র পেশ করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।
প্রবাসের সব খবর জানতে, এখানে ক্লিক করে আকাশযাত্রার ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকার অনুরোধ
দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইসলাম গতিশীল নেতৃত্বের কথা তুলে ধরেন। সেইসাথে, দারিদ্র্য বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের মাধ্যমে বিশ্ব শান্তিতে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অবদান উল্লেখ করার পাশাপাশি মাত্র ৫১ বছরে অর্জিত বাংলাদেশের অভূতপূর্ব আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় খাতগুলো সম্পর্কে তাকে বিস্তারিত ভাবে অবহিত করেন।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে অব্যাহতভাবে সমর্থন দেওয়ার জন্য তিনি গুয়াতেমালা সরকারকে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ হতে ধন্যবাদ জানান এবং ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় গুয়াতেমালার ‘পবিত্র সপ্তাহ’-এর অন্তর্ভূক্তির জন্য তাকে অভিনন্দন জ্ঞাপন করেন। গত নভেম্বর মাসে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে তার টেলিফোনে কথোপকথনের সূত্র ধরে তিনি দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক এবং অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের ভিসা মওকুফ চুক্তির বিষয়টিও উত্থাপন করেন।
গুয়াতেমালার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় গুয়াতেমালার ‘পবিত্র সপ্তাহ’-এর অন্তর্ভূক্তিতে বাংলাদেশের সমর্থনের জন্য তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে ৫ম বৃহত্তম সেনা প্রেরণকারী দেশ হিসেবে তিনি এক্ষেএে বাংলাদেশের সাথে কাজ করবার আগ্রহ প্রকাশ করেন। ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে দুই দেশের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের উপরেও তিনি জোর দেন।
আলোচনা শেষে, উপহার বিনিময়কালে গুয়াতেমালার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলামকে তার দেশের নারী উদ্যোক্তাদের তৈরি ব্যাগে কফি উপহার দেন। এ সময় রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম তাকে বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ এবং ‘পিপলস হিরো’ বই দুটির ল্যাটিন আমেরিকান সংস্করণসহ জামদানি মোটিফের সিরামিক মগ উপহার দেন।
এ সময় গুয়েতেমালার পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেশটিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলামের কার্যক্রমের সাফল্য কামনা করেন এবং তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
দূতাবাস সূত্রে জানা যায়, গুয়েতেমালার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়নের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আগামী দিনে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, মেক্সিকোতে নিযুক্ত হওয়ার পর সমদূরবর্তী দায়িত্ব হিসেবে আবিদা ইসলাম কোস্টারিকা, ইকুয়েডর, গুয়াতেমালা ও হন্ডুরাসেও বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করবেন। এরই অংশ হিসেবে তিনি গুয়েতেমালার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে পরিচয়পত্র পেশ করেছেন।
২০২১ সালের জুলাইয়ে এক প্রজ্ঞাপনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আবিদা ইসলামকে মেক্সিকোতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দেন। ওই বছরের ২৪ আগস্ট তিনি মেক্সিকোর বাংলাদেশ মিশনে কাজে যোগ দেন।
এর আগে সফলতার সঙ্গে আবিদা ইসলাম দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেন। এখনো তার কার্যক্রমের সুফল ভোগ করছেন দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসীরা।
বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারের ১৫তম ব্যাচের কর্মকর্তা আবিদা ইসলাম লন্ডন, ব্রাসেলস, কলকাতা ও কলম্বোর বাংলাদেশ মিশনে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন বিভাগেও কাজ করেছেন। এছাড়া তিনি যুক্তরাষ্ট্র বিভাগের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
প্রবাসের সব খবর জানতে, এখানে ক্লিক করে আকাশযাত্রার ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকার অনুরোধ