বঙ্গোপসাগরে সম্প্রসারণ হচ্ছে কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে

কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ হচ্ছে বঙ্গোপসাগরে জলরাশির ওপর। আর এটি হতে যাচ্চে বাংলাদেশে সবচেয়ে দীর্ঘ রানওয়ে। ১০ হাজার ৭শ ফুট দীর্ঘ এই রানওয়ের ১৩’শফুট থাকবে থাকবে বঙ্গোপসাগরের ভেতরে। বর্তমানে সবচেয়ে দীর্ঘ রানওয়েটি ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের। এটির দৈর্ঘ্য ১০ হাজার ৫শ ফুট।

রানওয়ের সম্প্রসারণ হলে বঙ্গোপসাগরের জলরাশি ছুঁয়ে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট ওঠানামা করবে দেশের চতুর্থ এই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। সোনাদিয়া দ্বীপের বুক চিরে মহেশখালী চ্যানেলের কিয়দংশ ভরাটের মাধ্যমে যখন কক্সবাজার বিমানবন্দরটির রানওয়ের পূর্ণাঙ্গ রূপ পাবে তখন দেখা যাবে সৌন্দর্য্যের আরেক ভিন্ন জগৎ, এমনটি বলছেন প্রকল্প কর্মকর্তারা।

আগামীকাল রোববার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সম্প্রসারণ কর্মসূচীর উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। তার সরকার কক্সবাজারকে বাংলাদেশের চতুর্থ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পরিণত করার লক্ষ্যে প্রায় পৌনে চার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প নিয়েছে। এর মধ্যে রানওয়ে সম্প্রসারণের জন্য খরচ করা হচ্ছে দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি।

Travelion – Mobile

প্রকল্পর আওতায় রানওয়ে সম্প্রসারণের পাশাপাশি নতুন টার্মিনাল নির্মাণ, গ্রাউন্ড লাইটিং সিস্টেম, সেন্ট্রাল লাইন লাইট,সমুদ্র বুকের ৯০০ মিটার পর্যন্ত প্রিসিশন এপ্রোচ লাইটিং ও ইন্সট্রুমেন্টাল ল্যান্ডিং সিস্টেম স্থাপন এবং নিরাপত্তা প্রাচীর ও বাঁকখালী নদীর উপর সংযোগ সেতু নির্মাণও করা হবে ।

প্রকল্প পরিচালক ইউসুফ ভূঁইয়া গণমাধ্যমকে বলেন,”মহেশখালী চ্যানেলে দিকে ভূমি অধিগ্রহণ করে মাধ্যমে রানওয়ে সম্প্রসারণ করা হবে। সম্প্রসারিত অংশ সমুদ্রের যেটুকু জুড়ে হবে সেখানে পানিতে ব্লক, জিওটিউব ইত্যাদি ব্যবহার করে শুরুতেই একটি বাঁধের মত তৈরি করা হবে।

পরে বাঁধের ভেতরকার পানি সেচ করে ফেলা হবে এবং গভীর সমুদ্র থেকে ড্রেজিং করে ভেতরে এনে ফেলা হবে বালি। বালি দিয়ে ভরাটের মাধ্যমে সমুদ্রের ওই অংশটি ভরাট হলে সেখানে ‘স্যান্ড পাইলিং’-এর মাধ্যমে রানওয়ের ভিত তৈরি করা হবে।

সবশেষে পাথরের স্তর বসিয়ে পুরো রানওয়ে সিল করে দেয়া হবে। তার ওপর হবে পিচ ঢালাইয়ের কাজ। এরপর হবে রানওয়ের শোভাবর্ধন ও নির্দেশক বাতি স্থাপনের বাকি কাজ, বলছেন প্রকৌশলীরা।

দুটি চীনা প্রতিষ্ঠান এই প্রকল্পের নিয়োজিত আছে। কাজ শেষ হতে প্রায় তিন বছর সময় লাগবে বলে জানাচ্ছেন কর্মকর্তারা।

কর্মকর্তারা বলছেন, রানওয়ে সম্প্রসারণ হলে এই বিমানবন্দরে বিশ্বের সবচেয়ে সুপরিসর বোয়িং ৭৭৭ এবং বোয়িং ৭৪৭ উড়োজাহাজ উঠানামা করতে পারবে। এছাড়া এখানে রিফুয়েলিংয়েরও ব্যবস্থা থাকবে। সব মিলিয়ে বিমানবন্দরটিতে দেশি-বিদেশি সরাসরি ফ্লাইট সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি যাত্রী পরিবহনের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং কক্সবাজারে দেশি-বিদেশি পর্যটকের আনাগোনা আরো বাড়বে বলে আশা করা যাচ্ছে।

বেবিচক সূত্রে জানা যায়, শুরুতে কক্সবাজার শহরের দিকে বিমানবন্দর সম্প্রসারণ পরিকল্পনা করা হয়েছিল । কিন্তু দেখা যায় এতে বিলাসবহুল কয়েকটি হোটেল, আবাসিক ভবন, লাবনি বিচ ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও স্থাপনাসহ শহরের একটি বড় অংশ বিমানবন্দরের দখলে চলে যাবে। এ কারণে বিমানবন্দরের উল্টো পাশে মহেশখালী চ্যানেলের দিকে সমুদ্রের ওপরেই এই রানওয়ে নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে ।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!