ফের রক্তাক্ত থাইল্যান্ড, তল্লাশি চৌকিতে হামলায় নিহত ১৫
পর্যটকদের জন্য সতর্কতা জারি
থাইল্যান্ডে সন্দেহভাজন বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহীদের হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। থাই সরকার এই হামলাকে কয়েক বছরের মধ্যে দেশটিতে হওয়া সবচেয়ে বড় বন্দুক হামলা বলে বর্ণনা করেছে।
মঙ্গলবার গভীর রাতে দেশটির মুসলিম প্রধান দক্ষিণাঞ্চলে গ্রাম প্রতিরক্ষা স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর একটি তল্লাশি চৌকিতে এই হামলার ঘটনাটি ঘটে এবং এতে ওই বাহিনীটির আরও চার সদস্য আহত হয়েছেন বলে বুধবার নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
বিবিসি, রয়টার্সের খবর, দক্ষিণাঞ্চলীয় ইয়ালা প্রদেশের এ ঘটনায় হামলাকারীরা বিস্ফোরকও ব্যবহার করেছে। পিছু নেওয়া নিরাপত্তা বাহিনীকে নাস্তানাবুদ করতে হামলাকারীরা রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে তার কাঁটা ফেলে রেখে যায়।
ইয়ালা প্রদেশটি থাইল্যান্ডের একেবারে দক্ষিণে অবস্থিত৷ এর সঙ্গে মিশে রয়েছে মালয়েশিয়ার সীমান্ত৷ ফলে হামলাকারীরা সীমান্ত পেরিয়ে মালয়েশিয়ার দিকে দুর্গম এলাকায় ঢুকে পড়তে বলেও আশঙ্কা৷
নিরাপত্তা বাহিনীর আঞ্চলিক মুখপাত্র কর্নেল প্রমোত প্রমইন রয়টার্সকে বলেন, “এটা সম্ভবত বিদ্রোহীদের কাজ। এটি সাম্প্রতিক সময়ে হওয়া অন্যতম বড় হামলা।”
বৌদ্ধ প্রধান থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলীয় মালয়-মুসলিম প্রধান প্রদেশ ইয়ালা, পাত্তানি ও নারাথিওয়াতে এক দশক ধরে বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহ চলছে। এখানে চলা সহিংসতা পর্যবেক্ষণকারী গোষ্ঠী ‘ডিপ সাউথ ওয়াচ’ এর তথ্যানুযায়ী, এই প্রদেশ তিনটিতে ২০০৪ সাল থেকে শুরু হওয়া সহিংসতায় এ পর্যন্ত প্রায় সাত হাজার লোক নিহত হয়েছেন।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করেনি। থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলীয় এসব প্রদেশগুলোতে চালানো হামলার ক্ষেত্রে স্বীকারোক্তি না জানানোই নিয়মিত ঘটনা।
১৯০৯ সালে থাইল্যান্ডের দখলে চলে যাওয়ার আগে ইয়ালা, পাত্তানি ও নারাথিওয়াত স্বাধীন মালয় মুসলিম সালতানাতের অংশ ছিল। এ অঞ্চলের কয়েকটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী জানিয়েছে, তারা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করছে।
হামলার পরেই অতিরিক্ত সতর্কতা নেওয়া হয়েছে থাইল্যান্ডের বিভিন্ন জনপ্রিয় সৈকত ও পর্যটনস্থলগুলিতে ৷ বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের নিরাপত্তা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ৷
থাইল্যান্ডে ঘুরতে যাওয়া বা যেতে ইচ্ছুক পর্যটকদের জন্য সতর্কতা জারি করছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পর্যটন সংক্রান্ত ওয়েব সাইট ৷