প্রবাসীদের অনাবাদি জমিতে সরকারি উদ্যোগে চাষাবাদের পরিকল্পনা
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে এ মোমেন বলেছেন, প্রবাস ফেরৎ যুব সমাজকে পুনর্বাসনের বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এজন্যে বিপুল অর্থ বরাদ্দের তথ্য ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন। এছাড়া, প্রবাসীদের বিপুল পরিমাণের আবাদি জমি বছরের পর বছর ধরে অনাবাদি রয়েছে। এগুলো সরকারের তত্ত্বাবধানে চাষাবাদের পরিকল্পনা রয়েছে মহামারি পরবর্তীতে সময়ের খাদ্য ঘাটতির শংকা পুষিয়ে নিতে।
শনিবার (১৬ মে) যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়াভিত্তিক ‘এনআরবি কানেক্ট টিভি’তে করোনাভাইরাস সম্পর্কিত এক বিশেষ ভার্চুয়াল আলোচনায় অংশ নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।
প্রবাসী সাংবাদিক হাসানুজ্জামান সাকীর সঞ্চালনায় আলোচনায় আরও অংশ নেন ‘পিপলএনটেক’র প্রেসিডেন্ট ফারহানা হানিফ এবং জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি বদরুন খান মিতা।
ড. এ কে এ মোমেন বলেন, এক কোটি ৩০ লাখের অধিক প্রবাসীর ৮০% মধ্যপ্রাচ্যে থাকেন। মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরেও কিছু বাংলাদেশি আছেন। এসবের অধিকাংশই কাজ করতেন। আবার অনেকে অবৈধভাবে বসবাস করছেন। করোনার কারণে অনেক দেশের প্রবাসীরা বেকার হয়ে পড়েছেন। তারা ফিরে এসেছেন এবং আসার অপেক্ষায় রয়েছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন,”প্রবাসীদের মধ্যে যারা বেকার হয়ে পড়েছেন তারা যেন খাদ্যের অভাব মারা না যান সে ব্যাপারে আমরা সজাগ রয়েছি। আমরা সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারকে অনুরোধ করেছি অন্তত: যেন ৬ মাসের বেতন যেন দেওয়া হয়।”
প্রবাসীদের উন্নয়নের হাতিয়ার উল্লেখ করে ড. এ কে এ মোমেন বলেন, প্রবাস থেকে যারা ফিরছেন তারা করোনা পরবর্তী সময়ে যাতে নিজ বাড়িতে থেকেই প্রবাসের অভিজ্ঞতায় পুনর্বাসিত হতে পারেন সেজন্যে সহজশর্তে ঋণ দেয়া হবে মাথাপিছু ৫ লাখ থেকে ৭ লাখ টাকা করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক আগ্রহে এই কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। কারণ, কঠোর পরিশ্রমী এসব প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থেই বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে। আমাদের এসব মানুষেরা যদি বিদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতিতে বিশেষ অবদান রাখতে সক্ষম হয়, তাহলে নিজ দেশের জন্যে পারবে না কেন? প্রয়োজনে আমরা তাদেরকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও রেখেছি।”
করোনা পরবর্তী সময়ে খাদ্য ঘাটতির আশংকা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, “প্রবাসীদের মালিকানাধীন বহু জমি রয়েছে যেগুলোতে চাষাবাদ তেমনভাবে হয় না। সেগুলোতে সরকারের উদ্যোগে যদি চাষাবাদ করা হয় তাহলে খাদ্য-শস্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে বড় ধরনের একটি অগ্রগতি আসবে। কারণ, করোনা পরবর্তী সময়ে বড় ধরনের খাদ্য ঘাটতির আশংকা করা হচ্ছে সারাবিশ্বেই। সেই ঘাটতি পুষিয়ে নিতে প্রবাসীরাও নিজ নিজ জমিতে চাষাবাদে আগ্রহী হবেন বলে আমার বিশ্বাস।”
যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৪২ জন বাংলাদেশিকে শুক্রবার বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হলো। একইভাবে কানাডায় আটকে পড়া বাংলাদেশিদেরকেও ফিরিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়া রয়েছে বলে উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।