প্রধানমন্ত্রীত্ব হারালেন ইমরান খান

শেষমেশ ক্ষমতাচ্যুতই হলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। শনিবার রাতে দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে তাঁর বিরুদ্ধে আনা বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হয়। এতে ইমরানের বিরুদ্ধে ভোট পড়েছে ১৭৪টি। প্রস্তাব পাসের জন্য দরকার ছিল ১৭২ ভোট।

ইমরান খান ছিলেন পাকিস্তানের ২২তম প্রধানমন্ত্রী। তাঁর ক্ষমতাচ্যুতির মধ্য দিয়ে দেশটির নির্বাচিত একজন প্রধানমন্ত্রীও তাঁর মেয়াদ পূর্ণ করতে পারলেন না।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে ইমরান খানের ভাগ্যনির্ধারণী এ অধিবেশন শুরু হয় স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টায়। তবে অধিবেশন শুরুর কিছুক্ষণ পর দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত তা মুলতবি করা হয়। এভাবে তিন দফা মুলতবি শেষে ইফতারের পর আবার অধিবেশন শুরু হয়। তখন জানানো হয়, রাত সাড়ে ৯টায় আবার অধিবেশন বসবে।

Travelion – Mobile

অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার আসাদ কায়সার। পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে অধিবেশন শুরু হয়। তবে অধিবেশন মুলতবির আগপর্যন্ত অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন না ইমরান খান।

অধিবেশনের কার্যসূচিতে ৪ নম্বরে রাখা হয় প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আনা বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি। অধিবেশনে বিরোধী দলগুলোর সব আইনপ্রণেতা অংশ নেন। শুরুতে সরকারি দলের আইনপ্রণেতাদের মধ্যে কয়েকজনকে অধিবেশনে দেখা যায়।

বিরোধী দলের আইনপ্রণেতারা শুরু থেকেই অভিযোগ করেন, ইচ্ছা করেই অধিবেশন বিলম্বিত করা হচ্ছে। এ জন্য পাল্টা কৌশল ঠিক করতে বিরোধীদলীয় নেতা পাকিস্তান মুসলিম লিগের (নওয়াজ) সভাপতি শাহবাজ শরিফের চেম্বারে বৈঠক করেন তাঁরা।

স্পিকার আসাদ কায়সারের চেম্বারে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখাও করেন তাঁরা। বিরোধী আইনপ্রণেতারা এ সময় স্পিকারকে তাঁর সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করে যাওয়ার আহ্বান জানান।

আর্থিক দুরবস্থা ও ভুল পররাষ্ট্রনীতির অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে বিরোধী দলগুলো। এ অনাস্থা প্রস্তাবকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে ৩ এপ্রিল খারিজ করে দেন জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি। ওই দিনই প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। এতে চরম রাজনৈতিক সংকটে পড়ে পাকিস্তান।

এ অবস্থায় স্বতঃপ্রণোদিত নোটিশ দেন সুপ্রিম কোর্ট। বিরোধীরাও আদালতের শরণাপন্ন হন। টানা পাঁচ দিনের শুনানি শেষে গত বৃহস্পতিবার অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ ও জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত অসাংবিধানিক ঘোষণা করেন সর্বোচ্চ আদালত। একই সঙ্গে শনিবার অনাস্থা প্রস্তাবের সুরাহার নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চ।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!