পাপুলকাণ্ডে সম্পৃক্ত কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব বরখাস্ত
বাংলাদেশের সংসদ সদস্যে বাংলাদেশের সাংসদ শহিদ ইসলাম পাপুলের অবৈধ ভিসা বাণিজ্যে সহায়তা এবং ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব মেজর জেনারেল মাজন আল-জারাহকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
পাপুল মামলায় তদন্তে তার নাম ওঠে আসায় দেশটি উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আনাস আল-সালেহ তাকে বরখাস্তের আদেশ জারি করেছেন বলে কুয়েতের দৈনিক আল রাইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এরইমধ্যে এই সচিবের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ এনেছে পাবলিক প্রসিকিউশন এবং তার দেশত্যাগ ও ভ্রমণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
আগের খবর : পাপুলের মোবাইলে ‘তথ্যের গুপ্তধন’, ঘুষ নেওয়ার স্বীকারোক্তি এক সচিবের!
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন এই কর্মকর্তার বাংলাদেশি সাংসদের কাছ থেকে নগদে ঘুষ নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
স্বীকারোক্তিতে ওঠে এসেছে যে পাপুলের কাছ থেকে টাকা প্রথমে এই কর্মকর্তার মালিকানাধীন একটি প্রাইভেট কোম্পানির একাউন্টে জমা করা হয়। পরে এই কর্মকর্তার নামে ইস্যুকৃত চেক দিয়ে তা নগদ করা হয়। প্রক্রিয়াটি এমনভাবে করা হয়েছে যেন উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে বাংলাদেশি সাংসদের মধ্যে কোন যোগসাজোগ খুঁজে পাওয়া না যায়।
পাবলিক প্রসিকিউশন অফিস সচিবের দেয়া তথ্যের সাথে একাউন্ট এবং চেকের সম্পর্ক নিশ্চিত করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, উর্ধ্বতন কর্মকর্তা পাপুলের জন্য ২৩,০০০ বাংলাদেশির এন্ট্রি ভিসা ইস্যু করার জন্য সহযোগিতা করেছিলেন। সেসময় কুয়েতে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভিসা ইস্যুতে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও উর্ধ্বতন কর্মকর্তা সেই সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে তার ক্ষমতার অপব্যবহার করেছিলেন।
কুয়েতে মানব পাচার, ঘুষ এবং মানি লন্ডারিংয়ের মামলায় আটক বাংলাদেশের সাংসদ শহিদ ইসলাম পাপুলের সঙ্গে ভিসা বাণিজ্যের জড়িত থাকার ক্ষেত্রে যেভাবে অভিযোগ ও নাম বাড়ছে তাতে করে দেশটির রাজনীতিবিদ ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো আসামির তালিকায় শীর্ষস্থানীয় হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পাপুলের মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে বেরিয়ে এসেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সমাজ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ও জাতীয় পরিষদের অনেক উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নাম যারা মানবপাচারে জড়িত থাকতে পারে। যার মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের এই সহকারি সচিবও রয়েছেন।
কুয়েতে পাপুলকাণ্ডে নতুন নতুন রহস্য উন্মোচিত হচ্ছে। ঘটছে কেঁচো খুড়তে সাপ বেরিয়ে আসার মত অনেক ঘটনা। এবার পাপুলের মোবাইল ফোনের তথ্য পুনরুদ্ধার করে তার যোগসাজশ আর দুর্নীতির নতুন নতুন চাঞ্চল্যকর সত্যের সন্ধান পেয়েছে তদন্ত সংস্থাগুলো। তদন্তে এটি তাদের জন্য যেন ‘তথ্যের গুপ্তধন’।
আগের খবর : কুয়েতে ভিসা বাণিজ্যের বিরুদ্ধে অভিযানের মধ্যেও ৪ টি কাজ পান পাপুল