পাপুলকাণ্ডে দুই কুয়েতি এমপির সম্পৃক্ততার অভিযোগ

অর্থ পাচার, মানবপাচার, ভিসা বাণিজ্য ও ঘুষের অভিযোগে কুয়েতে গ্রেপ্তার বাংলাদেশি সংসদ সদস্য শহিদ ইসলাম পাপুলের অপকর্মে সহযোগিতা এবং অর্থ পাচারে জড়িত থাকার দেশটির দুজন সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হয়েছে। তদন্তে পাপুলের মদদদাতা হিসাবে এই দুই আইনপ্রণেতার নাম ওঠে আসায় পাবলিক প্রসিকিউশন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে কুয়েতের আরবি দৈনিক আল কাবাসের জানিয়েছে, ওই দুই সংসদ সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় পাবলিক প্রসিকিউটরের অফিস। সেজন্য এমপি হিসেবে যে দায়মুক্তি তারা পান, তা প্রত্যাহারের আবেদন করা হবে পাবলিক প্রসিকিউশনেরপক্ষ থেকে। তবে তারা দুই এমপির নাম প্রকাশ করেনি।

আগের খবর : ২১ দিনের আটকাদেশে কুয়েতের কারাগারে এমপি পাপুল

Travelion – Mobile

পাপুলের মদদদাতা হিসাবে দুইজন ছাড়াও একজন সাবেক এমপিসহ সাতজনকে চিহ্নিত করার কথা এর আগে জানিয়েছিলেন তদন্তকারীরা। এর আগে বাংলাদেশি এমপি পাপুলের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে কুয়েতের জনশক্তি কর্তৃপক্ষের এক পরিচালক এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্ণেল পদ মর্যাদার আরেক কর্মকর্তাকে আটকের পর রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে । এ ছাড়া কুয়েতের এক নারী ব্যবসায়ীকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

কুয়েতের শীর্ষস্থানীয় এক হোম ডেকর কোম্পানির মালিক ওই নারীকে ঘুষ ও অর্থ পাচারের অভিযোগে দেড় ঘণ্টার বেশি সময় জিজ্ঞাসাবাদ করার পর দুই হাজার দিনার জামানতে জামিন দেওয়া হলেও তাকে দেশ ছাড়তে নিষেধ করা হয়।

আগের খবর : কুয়েতে পাপুলকাণ্ডে সম্পৃক্ত প্রভাবশালী নারীর জামিন

কুয়েতের মারাফি কোম্পানির অন্যতম মালিক লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য পাপুলকে গত ৬ জুন রাতে দেশটির মুশরিফ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৭ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর এখন তাকে রাখা হয়েছে কুয়েতের কেন্দ্রীয় কারাগারে। পাপুলের বিরুদ্ধে প্রতারণার শিকার ১১ জন বাংলাদেশি সাক্ষ্য দিয়েছেন। আগামী ৬ জুলাই এমপি পাপুলের বিরুদ্ধে কুয়েতে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠনের কথা রয়েছে। এর আগ পর্যন্ত পাপুলকে কারাগারেই থাকতে হবে। অপরাধ প্রমাণ হলে পাপুলের পাঁচ থেকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড ও জরিমানা হতে পারে বলে লিখেছে কুয়েতের বিভিন্ন পত্রিকা।

বাংলাদেশের এমপিকে আটকের কয়েকদিন পর তাঁর প্রতিষ্ঠান কুয়েতিয়া মারাফিয়ার দপ্তরে তল্লাশি চালান তদন্ত কর্মকর্তারা। তাঁরা সেখানে লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের পর তল্লাশি চালিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র আর সিসিটিভির ফুটেজ জব্দ করেন। বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিনিময় করা চিঠি, চুক্তিপত্র আর সিসিটিভির ফুটেজের ভিত্তিতে তদন্ত কর্মকর্তারা কাজী পাপুলের মদদদাতাদের সম্পর্কে নিশ্চিত হন। ওই সব তথ্যপ্রমানের ভিত্তিতে কুয়েতের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্নজনকে আটক ও জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।

আগের খবর : কুয়েতে সাজা হলে এমপি পদ হারাতে পারেন পাপুল

পাপুল ও তার কোম্পানির ব্যাংক হিসাব ইতোমধ্যে জব্দ করেছে কুয়েত কর্তৃপক্ষ। কোম্পানির ওই হিসাবে প্রায় ১৩৮ কোটি টাকা রয়েছে বলে এর আগে পাবলিক প্রসিকিউশনের বরাতে জানিয়েছিল কুয়েতি গণমাধ্যম।

বাংলাদেশেও পাপুলের অবৈধ সম্পদের খোঁজে তৎপর হয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে পাপুল এবং তার স্ত্রী, মেয়ে ও শ্যালিকার ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সব হিসাবের লেনদেন স্থগিত করেছে সংস্থাটি।

আগের খবর
কুয়েতে প্রবাসীদের অভিযোগ শুনতে লকডাউন এলাকায় শ্রম দপ্তর

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!