পলাতক মানবপাচারকারীদের ধরতে প্রয়োজনে জারি হবে রেড অ্যালার্ট
লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশিকে হত্যার ঘটনায় বিদেশে পলাতক মানবপাচারকারী চক্রকে ধরতে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড অ্যালার্ট জারির ব্যবস্থা নিবে বাংলাদেশ পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৪ জুন) নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এমনটি জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ডিআইজি (অর্গানাইজড ক্রাইম) ইমতিয়াজ আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘সিআইডি মানবপাচারকারী চক্রকে ধরতে তদন্তের পাশাপাশি অভিযান পরিচালনা করছে। প্রয়োজনে রেড নোটিশ জারির ব্যবস্থা করা হবে। মানবপাচারকারীদের সম্পদ বাজেয়াপ্তে অনুসন্ধানের পর মানি লন্ডারিংয়ের মামলার প্রস্তুতিও রয়েছে সিআইডির।’
গত ২৮ মে লিবিয়ার মিজদাহ শহরে মানবপাচারের শিকার ২৬ বাংলাদেশিসহ ৩০ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয় চক্রের সদস্যেদর স্বজনরা। এ ঘটনায় আহত হয় আরও ১১ বাংলাদেশি। অক্ষত রক্ষা পান আরও এক বাংলাদেশি। এ ঘটনায় শুধু বাংলাদেশ নয়, আলোড়িত করেছে পুরো বিশ্বকে। এ ঘটনার নেপথ্যে জড়িতদের ধরতে অভিযানে নামে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
২৬ বাংলাদেশি হত্যার ঘটনায় এ পর্যন্ত দেশে ৯টি মামলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত মোট ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব ও সিআইডি। গত ৩০ মে র্যাব গ্রেফতার করে মানবপাচারকারী চক্রের মুল হোতা হাজী কামালকে। এর ধারাবাহিকতায় গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে মামলাগুলোর অনেক আসামিকে ৮ জনকে গ্রেফতার করে র্যাব-পুলিশ। ওইসব মামলায় এখনও বেশিরভাগ মানবপাচারকারী পলাতক রয়েছেন বলে সংস্থাগুলো জানিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘দেশীয় মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ। কিন্তু এসব মানবপাচারকারী চক্রের অধিকাংশই রয়েছেন পলাতক অর্থাৎ দেশের বাইরে। তারা দেশের বাইরে থেকে এ দেশে দালালের মাধ্যমে মানবপাচারের মতো ঘৃণ্য কাজটি চালিয়ে আসছেন।’
ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন,‘পল্টনে সিআইডি থেকে দায়ের করা মামলার পাশাপাশি অন্যান্য মামলাও সিআইডি ছায়া তদন্ত করছে। তদন্তে মানবপাচারকারী হিসেবে যাদের তথ্য উপাত্ত ও নাম উঠে আসছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা মামলার দ্রুত চার্জশিট আদালতে দাখিল করব। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে আদালতের মাধ্যমে ওয়ারেন্ট জারির পর ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারি করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নিরীহ মানুষের জীবনের বিনিময় যে অর্থ-সম্পদ তারা করেছেন, এই সম্পদ তারা ভোগ করতে পারবেন না। তাদের বিরুদ্ধে আমরা মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করব। এরইমধ্যে এ বিষয়ে কাজ শুরু করেছে সিআইডি। বড় বড় যত সংঘবদ্ধ মানবপাচারকারী রয়েছে তাদের নাম আমরা সংগ্রহ ও ইনকোয়ারি শুরু করেছি।’
সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে মানবপাচারকারীর রাজনৈতিক পরিচয় বিবেচনা করা হবে না। কাউকে কোনো ছাড়ও দেওয়া হবে না।’