পর্তুগালে বাংলাদেশ দূতাবাসের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন

পর্তুগালে যথাযথ মর্যাদা ও ভাব গাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করেছে বাংলাদেশ দূতাবাস। কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে আরোপিত বিধিনিষেধের প্রেক্ষিতে সীমিত পরিসরে দিবসের কর্মষূচির আয়োজন করা হয়।

রবিবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানী লিসবন দূতাবাস প্রাঙ্গণে সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীর উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও অর্ধনমিতকরণের মাধ্যমে দিবসটির কর্মসূচির সূচনা করেন রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান। এরপর তিনি লিসবন শহরের কেন্দ্রস্থলের Campo dos Mártires da Pátria নামক উদ্যানে অবস্থিত স্থায়ী শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে ভাষা শহীদগণের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

দুপরে দূতাবাসের হলরুমে আয়োজিত দিবসের আলোচনা সভার শুরুতে ভাষা শহীদদের সম্মানে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়।

Travelion – Mobile

আলোচনায় বক্তারা বাঙালি জাতির সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অগ্রগতিতে মহান শহীদ দিসব ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা গুরুত্ব ও অবদানের বিষয় তুলে ধরেন।

রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান তার বক্তব্যের শুরুতে বিনম্র শ্রদ্ধা জানান ভাষা শহীদানের প্রতি। সে সঙ্গে তিনি গভীর কৃতজ্ঞতা জানান ভাষা আন্দোলনে তারুণ্যের নেতৃত্বদানকারী সেসময়ের উদীয়মান রাজনীতিক, জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি।

পর্তুগালে বাংলাদেশ দূতাবাসের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে উপস্থিতি
পর্তুগালে বাংলাদেশ দূতাবাসের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে উপস্থিতি

তিনি বলেন,’শহীদদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলার সাংবিধানিক স্বীকৃতি অর্জিত হয়। একুশের অনুপ্রেরণাতেই অব্যাহতভাবে পাকিস্তানী সাংস্কৃতিক আগ্রাসন প্রতিহত করার মাধ্যমে বাঙ্গালি ধাপে-ধাপে তার আত্ম-পরিচয়, অর্থাৎ বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদকে খুঁজে পেয়েছিল। এই বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদ-ই চূড়ান্তভাবনে স্বাধীন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভিত রচনা করেছিল।

তিনি বিদেশীদের কাছে বাংলা ভাষা আর সংস্কৃতির মহিমাকে তুলে ধরতে আর নিজেদের নতুন প্রজন্মের মাঝে এর চর্চাকে উৎসাহিত করতে প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান ।

আলোচনা শেষে, সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক পর্বে সমবেতকণ্ঠে ’আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ গানটি পরিবেশন করা হয়। এছাড়াও অনুষ্ঠানে একুশের কবিতা আবৃত্তি করা হয়।

এরপর শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের উপর নির্মিত একটি প্রামাণ্য ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে ভাষা শহীদ ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদ এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের আত্মার মাগফেরাত এবং সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের কামনায় মোনাজাত করা হয়।

দিবসটি উপলক্ষে দূতাবাস ভবনে ভাষা আন্দোলন বিষয়ক একটি চিত্র প্রদর্শনীরও আয়োজন করা হয়। এ উপলক্ষে দূতাবাস প্রাঙ্গণ ব্যানার, পোস্টার ও বর্ণমালা দিয়ে সাজানো হয়েছিল।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!