নিউইয়র্কে বর্ণাঢ্য আগ্রাবাদ নাইট
উত্তর আমেরিকায় বসবাসরত চট্টগ্রামের আগ্রাবাদিয়ানদের সংগঠন ‘পরানে আগ্রাবাদ ইউএসএ’-এর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে আগ্রাবাদ নাইট।
৭ আগস্ট নিউইয়র্কে কুইন্সের হিলসাইড অ্যাভিনিউয়ের একটি পার্টি হলে নিউইয়র্ক, নিউজার্সি, পেনসিলভানিয়া, কানেকটিকাট, ম্যাসাচুসেটস, ওহাইও ও নিউ হ্যাম্পশায়ার থেকে আগ্রাবাদিয়ান পরিবারের সদস্যরা ছুটে আসেন আগ্রাবাদ নাইটে।
অনুষ্ঠানে আগত সবাইকে মাস্ক পরে থাকার অনুরোধ জানানোর পাশাপাশি যারা করোনার পূর্ণ ডোজ টিকা নিয়েছেন তাঁরাই কেবল এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেয়েছেন বলে আয়োজকেরা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সংগীত বাজানোর মাধ্যমে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে কোরআন তিলাওয়াত ও তরজমা করেন হাসিন আহমেদ। এরপর কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আমেনা রশিদ ও রোশনা শামস। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মাকসুদুর রহমান খান। তিনি বলেন, আমরা যারা ছোটবেলা আগ্রাবাদে কাটিয়েছে, তারা আজ প্রাণের টানে এখানে ছুটে এসেছি। আমাদের মূল উদ্দেশ্য একটাই, সেই শৈশবের হারিয়ে যাওয়া প্রিয় মানুষদের একত্রিত করে একটি আনন্দঘন সন্ধ্যা উপভোগ করা। নিউইয়র্কে এবারের আয়োজনসহ এটি চতুর্থ আয়োজন, আশা করছি ভবিষ্যতের কার্যক্রমগুলো আরও প্রাণবন্ত হবে।
স্মৃতিচারণ বক্তব্যে সংগঠক ফরহাদ রেজা বলেন, এই কঠিন সময়ে আমরা সবাই যেন এক সঙ্গে থাকতে পারি, কোভিডে আমরা কাছের অনেককে হারিয়েছি। দোয়া করবেন আমরা যেন ভালো থাকতে পারি, সুস্থ থাকতে পারি এবং আগ্রাবাদিয়ান হিসেবে যেন গর্ববোধ করতে পারি।
সংগঠক আফসার উদ্দিন বলেন, এই মুহূর্তে মনে হচ্ছে আমি যেন শৈশবের সেই আগ্রাবাদেই আছি। নিউইয়র্কে যে আছি, সেটা মনে হচ্ছে না। এতগুলো পরিচিত মুখ এক সঙ্গে দেখার পর, নিজেকে সামলানো অনেক কষ্টকর। আমরা সবাই যদি আমাদের সেই পুরোনো গল্পগুলো করা শুরু করি তাহলে সারা রাত চলে যাবে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সোলসের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য তাজুল ইমাম বলেন,‘যুদ্ধ থেকে যখন ১৬ ডিসেম্বর ফিরে আসলাম আমাদের আগ্রাবাদের বাসায়, তখন সন্ধ্যা। প্লাটুন গাড়িতে বসে আছে, আমাদের সবার হাতে অটোমেটিক গান, আমার ভাইবোনেরা কাঁদছিলেন, আমাকে নিয়ে উদ্যাপন করছিলেন বিজয়ের, সেই স্মৃতির সঙ্গে জড়িয়ে আছে আগ্রাবাদ।’
অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন ফিরোজ আহমেদ এবং কবিতা আবৃত্তি করেন রোশনা শামস ও জয় আনন্দ। গানে গানে খেলায়, গান ও অভিনয় করে পুরস্কার লাভ করেন নুরনাহার, মিলি সুলতানা ও নাছরিন শফি।
র্যাফল ড্রর বিজয়ীরা হলেন—নাসরিন প্রথম পুরস্কার, নীলা দ্বিতীয় পুরস্কার, আতফা তৃতীয় পুরস্কার, চিশতী চতুর্থ পুরস্কার, শাহীন পঞ্চম পুরস্কার ও জাহাঙ্গীর ষষ্ঠ পুরস্কার।
অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন দেশের ও প্রবাসের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী চন্দ্রা রায় ও ক্লোজ-আপ ওয়ান শিল্পী রাজীব ভট্টাচার্য। সাউন্ড সিস্টেমে ছিলেন ফিরোজ।
পরাণে আগ্রাবাদের এই আয়োজনে যারা নিরলসভাবে কাজ করেছেন তাঁদের মধ্যে ছিলেন—বাদশা, বকুল, বাবু, জুয়েল, আতিক, চুন্নী, রুশো, ললি প্রমুখ। পরানে আগ্রাবাদের এই আয়োজন বাংলাদেশ, লন্ডন ও নিউইয়র্কসহ বিশ্বের বিভিন্ন শহরে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সূত্র : প্রথম আলো