দেশে নতুন পাসপোর্ট কার্যক্রম শিগগির চালু হচ্ছে না

চালু আছে প্রবাসীদের পাসপোর্ট নবায়ন

করোনাভাইরাস মহামারি প্রাদূর্ভাবের কারণে দেশে নতুন এমআরপি এবং ই-পাসপোর্ট দেওয়ার কার্যক্রম শিগগির চালু হচ্ছে না। কবে শুরু হবে, তারও নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। তাদের ভাষ্য সবকিছু নির্ভর করছে করোনা পরিস্থিতির ওপর।

তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে সীমিত আকারে এমআরপি পাসপোর্টের নবায়ন (রি–ইস্যু) ও ভিসার কাজ চালিয়ে যাবে অধিদপ্তর। এ ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাচ্ছে প্রবাসীদের পাসপোর্ট। বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের যেসব আবেদন বিভিন্ন দূতাবাস হয়ে অধিদপ্তরে এসেছে, সেসব পাসপোর্ট ছাপা হচ্ছে।

করোনা–সংক্রমণের ঝুঁকির কারণে গত ২৩ মার্চ থেকে নতুন পাসপোর্টের আবেদন গ্রহণ ও বিতরণের সব কাজ বন্ধ করে দেয় ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর। এরপর থেকে আর কাউকে ই–পাসপোর্ট ও এমআরপি দেওয়া হয়নি।

Travelion – Mobile

অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, নতুন পাসপোর্টের আবেদন জমা নেওয়ার ক্ষেত্রে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের কর্মীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি সর্বোচ্চ। কারণ, যে ব্যক্তি পাসপোর্ট করবেন, তাঁকে পাশে নিয়ে আঙুলের ছাপ নিতে হয় এবং তাঁর ছবি তুলতে হয়। এটা করতে গিয়ে যে কেউ সহজে সংক্রমিত হতে পারেন। সে কারণে করোনা–সংক্রমণের শুরুতেই নতুন আবেদন নেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে এ সময় পাসপোর্ট নবায়নের কাজ অব্যাহত থাকে। কারণ, এতে করোনাভাইরাস সংক্রমনের ঝুঁকি খুব কম।

পাসপোর্ট অধিদপ্তরের উদ্বৃতি দিয়ে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর এক প্রতিবেদন বলা হয়, গত মার্চ মাসে দেশে করোনা সংক্রমণ শুরুর আগে থেকে এ মাসের ৫ তারিখ পর্যন্ত অনিষ্পন্ন অবস্থায় প্রায় আড়াই লাখ পাসপোর্টের আবেদন জমা পড়ে আছে। অবশ্য সাধারণ ছুটির মধ্যে (২৬ মার্চ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত) স্বাস্থ্যবিধি মেনে দেশের বাইরে বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোর সুপারিশ অনুযায়ী, প্রবাসী কর্মীদের জরুরিভিত্তিতে পাসপোর্ট দেওয়া হয়েছে। সে সংখ্যাটি প্রায় ৩০ হাজার।

বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ পত্রিকাটিকে বলেন,”সর্বোচ্চ ঝুঁকি বিবেচনায় নতুন পাসপোর্টের আবেদন নেওয়ার কাজ বন্ধ আছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর সব খুলে দেওয়া হবে। এ পরিস্থিতির মধ্যে আগে থেকে জমা থাকা দেশি-বিদেশি আবেদনের পাসপোর্ট মুদ্রণের কাজ হচ্ছে। তবে সেটাও সীমিত আকারে।”

অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা পত্রিকাটিকে জানান, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের উড়োজাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় মানুষের বিদেশ যাতায়াত নেই। সে কারণে পাসপোর্ট নেওয়ার তাড়াও নেই। তবে ২৩ মার্চের আগে নতুন পাসপোর্ট নেওয়ার জন্য যেসব আবেদন পড়েছিল, সেগুলোর ক্ষেত্রে পুলিশ প্রতিবেদন আবেদনকারীর পক্ষে গেলে নতুন পাসপোর্ট ইস্যু করা হচ্ছে। এসব আবেদনের বই পর্যায়ক্রমে ছাপা হচ্ছে। ছাপা শেষ হলে সীমিত আকারে তা বিতরণ করা হবে। আবার বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের যেসব আবেদন বিভিন্ন দূতাবাস হয়ে অধিদপ্তরে এসেছে, সেসব পাসপোর্ট ছাপা হচ্ছে। তবে সেটাও সীমিত আকারে।

আগে দিনে ২০ হাজারের মতো পাসপোর্ট বই ছাপা হতো। সামাজিক দূরত্ব মেনে এখন দিনে সর্বোচ্চ ৭–৮ হাজারের মতো পাসপোর্ট ছাপা হচ্ছে। এ সময়ে যাঁদের পাসপোর্ট খুবই জরুরি বা মেয়াদ শেষ হয়েছে, শুধু তাঁদেরই পাসপোর্ট দেওয়া হচ্ছে। কারও নতুন পাসপোর্টের দরকার হলে তাঁকে করোনাকালের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!