দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনা আক্রান্ত ৪,৮১৩, মৃত্যু ২৯ জনের
দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) এর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪,৮১৩, এখন পর্যন্ত ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। মোট আক্রান্ত রোগীর মধ্যে ৩ হাজার ৬০০ জনই দেগু শহরের এবং ৬৮৫ জন উত্তর জিয়ংসাং প্রদেশের।
হাসপাতালের উপচে পড়া ভিড়ের মধ্যে সরকার আরও প্রাণহানি রোধে লড়াই করে যাচ্ছে। মঙ্গলবার সরকার বলেছে যে, সংক্রামিত রোগীদের মৃত্যুর আশংখা বর্তমানে ০.৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
এখন পর্যন্ত এ রোগে কোনো বংলাদেশি আক্রান্ত হয়নি বলে নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ দূতাবাস।
কোরিয়া রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের তথ্য অনুসারে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত দেশটিতে আরও ৬০০ জন আক্রান্ত এবং ৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
নতুন আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে দেগুতে ৫১৯ জন, উত্তর গিয়ংসাং প্রদেশে ৬১ জন, সিউলে ৭ জন, দক্ষিণ চুংচিয়ং প্রদেশে ৩ জন এবং বুশান, গুয়াংজু ও গিয়ংগিদুতে ২ জন করে নিশ্চিত করা হয়েছে।
আক্রান্ত নিশ্চিত রোগীদের বাদে এ পর্যন্ত ১ লাখ ২১ হাজার ৩৯ জনকে করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৮৫ হাজার ৪৮৪ জনের নেতিবাচক (ভাইরাসমুক্ত) ফলাফল এসেছে এবং বাকি ৩৫ হাজার ৫৫৫ জন ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছেন।
করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ২৯ জনের বেশিরভাগের বয়স ৫০ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে, যারা আগ থেকেই নানা অসুস্থায় ভুগছিলেন। মৃত্যুর হার সব বয়সের ক্ষেত্রে ০.৬ শতাংশ, ৭০ বছর বয়সীর মধ্যে ৪ শতাংশ এবং ৮০ বা তার বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে ৫.৪ শতাংশ দাঁড়িয়েছে।
এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩৪ জন রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন।
যিশুর সিনচাঁইজি চার্চের ২ লাখ ১০ হাজারের ও বেশি সদস্যের পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা আগামী আরও বেড়ে যাওয়ার আশংখা করা হচ্ছে। কোরিয়ায় করোনা সংক্রমণের বৃহত্তম এই সম্প্রদায়ের প্রায় অর্ধেক সদস্যের পরীক্ষা শেষ হয়েছে সোমবার ।
সোমবার থেকে, সরকার নিশ্চিত হওয়া রোগীদের তাদের অবস্থা অনুযায়ী চারটি গ্রুপে শ্রেণীবদ্ধ করা এবং হালকা লক্ষণযুক্ত রোগীদেরকে পৃথকীকরণ এবং চিকিত্সার জন্য মনোনীত রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাতে স্থানান্তর করতে শুরু করে।
এটি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা ওয়ার্ডে উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের জন্য আরও বেশি জায়গা সুরক্ষার প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে এসেছে, কারণ দেশটি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার অপেক্ষায় বেশ কয়েকজন রোগী মারা গিয়েছিল।
বিশেষত দেগু শহরের মানুষ হাসপাতালের শয্যা ও মেডিকেল কর্মীদের ঘাটতিতে ভুগছেন কারণ করনোভাইরাসের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শহরের শিনচাঁজি শাখায় ধরা পড়ে।
সোমবার এক ব্রিফিংয়ে কেসিডিসির পরিচালক জিয়ং ইউন-কায়ং বলেছেন, দেশের ৮০ শতাংশেরও বেশি ক্ষেত্রে মারাত্মক লক্ষণ দেখা যায় নি, তাই সম্পূর্ণ নিরাময়ের আশা করা হয়।
করোনাভাইরাসের আতংকে, বিশ্বের প্রায় ৮২ টি দেশ ও অঞ্চল দক্ষিণ কোরিয়ায় ভ্রমণ সতর্কতা ও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। পাশাপাশি কোরিয়া থেকে আগত দর্শকদের উপর প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা বা কঠোরভাবে পৃথকীকরণ পদ্ধতি অবলম্বন করছে।
এদিকে দেশটিতে প্রতিরক্ষামূলক মাস্কের তীব্র ঘাটতির জন্য ক্ষমা চেয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইন ।
মঙ্গলবারের মন্ত্রিসভার বৈঠকে মুন বলেন,”পর্যাপ্ত এবং দ্রুত মুখোশ সরবরাহ করতে ব্যর্থ হওয়ায় জনসাধারণের অসুবিধার জন্য আমি খুব দুঃখিত। খাদ্য ও ওষুধ সুরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করা হবে।”
দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থানরত এখন পর্যন্ত এ রোগে কোনো বংলাদেশি আক্রান্ত হয়নি বলে নিশ্চিত করেছেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম। তিনি বাংলাদেশিদের সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে চলাফেরার অনুরোধ জানিয়েছেন।