দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসে ‘ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ’ উদযাপন
দক্ষিণ কোরিয়ায় যথাযোগ্য মর্যাদায় ‘ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ দিবস’ উদযাপন করে বাংলাদেশ দূতাবাস। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে দেশটির সরকারের দেওয়া বিধিনিষেধের কারণে অনুষ্ঠানে শুধু দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
রোববার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৯ টায় রাজধানী সিউলে দূতাবাস চত্বরে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচির সূচনা করেন দক্ষিণ কোরিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম। এরপর তিনি দূতাবাস কর্মকর্তাদের নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান।
দ্বিতীয় পর্বে দূতাবাসের হল রুমে আয়োজিত দিবসের আলোচনা সভার শুরুতে পবিত্র ধর্মগ্রন্থসমূহ থেকে পাঠের পর ‘ঐতিহাসিক ৭ মার্চ দিবস’ উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পড়ে শোনানো হয়। এ ছাড়া সিউল দূতাবাসের উদ্যোগে কোরিয়ান ভাষায় অনুদিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের ভিডিও প্রদর্শন করা হয়।
তৃতীয় পর্বে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের তাৎপর্যের উপর আয়োজিত অনলাইন আলোচনা অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক ছিলেন স্বনামধন্য লেখক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম। তাঁর আলোচনায় বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের পটভূমি, তৎকালীন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এর প্রভাবের বিভিন্ন দিক ওঠে আসে।
অধ্যাপক সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের বিষয়ে তাঁর ব্যক্তিগত সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে করে জানান, একাত্তরের ৭ মার্চ ভাষণের সময় তিনি রেসকোর্স ময়দানে উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনায় যুক্ত হয়ে সিউল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির এশিয়া সেন্টারের ভিজিটিং রিসার্চ ফেলো ইয়ুইয়ুং লি জাতির পিতার এই ভাষণকে আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে বিশ্লেষণ করেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণটির বিশ্বজনীনতা এবং মানবিক গুণের কারণেই দেশ-কালের গণ্ডি ছাড়িয়ে সার্বজনীন হয়েছে এবং বাঙ্গালী ও বিশ্বের মানুষের জীবনে অভূতপূর্ব নতুন মাত্রার সঞ্চার করেছে।
রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, একাত্তরের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর এই বলিষ্ঠ ঘোষণায় বাঙালি জাতি পেয়ে যায় স্বাধীনতার দিকনির্দেশনা। এরপরই দেশের মুক্তিকামী মানুষ ঘরে ঘরে চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে।
ইউনেস্কো কর্তৃক জাতির পিতার ভাষণটি বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের বিষয়টি উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, এই স্বীকৃতি স্বাধীনতার জন্য আত্মোৎসর্গকারী ত্রিশ লাখ শহীদ আর দুই লক্ষ বীরাঙ্গনার ত্যাগের প্রতি এক গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।
রাষ্ট্রদূত দক্ষিণ কোরিয়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের ব্যাপক প্রচারের লক্ষ্যে দূতাবাস কর্তৃক কোরিয়ান ভাষায় অনূদিত বঙ্গবন্ধুর ভাষণের পুস্তিকা ও ভিডিও নির্মাণের উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন।