দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশিকে হত্যার দায়ে ১৫ বছরের কারাদণ্ড
দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ী শহিদুর রহমান (৪৭) কে হত্যায় দায়ে দেশটির ২ জন নাগরিককে ১৫ বছর করে সাজা দিয়েছে ডারবনের একটি আদালত। এর মধ্যে একজন কারাগারে আটক এবং অপর আসামী পলাতক রয়েছে।
শুক্রবার (১২ আগস্ট) ডারবনের আদালতে উপস্থিত একমাত্র আসামী কানকেনইয়েজি সেগাটলির সামনে এই সাজার রায় ঘোষণা করেন বিচারক। ঘটনায় জড়িত তিন দক্ষিণ আফ্রিকান নাগরিকের মধ্যে সেগাটলিসহ ২ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পু্লিশ। এর মধ্যে একজন কারাগারে আত্মহত্যা করে।
বাংলাদেশি কমিউনিটির সূত্রে জানা যায়, ঢাকার কেরানীগঞ্জের সন্তান শহীদুর রহমান ১৯৯৮ সাল দক্ষিণ আফ্রিকায় পাড়ি জমান। দীর্ঘদিন ধরে ডারবানে স্ব-পরিবারে বসবাস করে আসছিলেন । ডারবানের অদূরে তিনি কাঠের ব্যবসা করতেন। স্ত্রী ও ২ সন্তান নিয়ে সুখেই চলছিলো তার সংসার।
পরিবারের সূত্রে জানায়, গত বছরের ৭ জুলাই শহিদুর রহমান ব্যবসার কাজে বাসা থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেন নি। প্রায় ১৫দিন পর তার অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয় পুলিশ।
পরে শহীদুর রহমানের স্ত্রী বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। পরবর্তীতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার মোজাম্বিক বর্ডার এলাকা থেকে শহীদুর রহমানের গাড়ি উদ্ধার করে।
ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ অন্যতম আসামী কানকেনইয়েজি সেগাটলিকে গ্রেফতার করে। শহীদুর রহমানের কাঠের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন নকেনইয়েজি সেগাটলি।
স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দিতে সেগাটলি জানায়, ব্যবসায়িক বিরোধের জের ধরে শহিদুর রহমানকে অপহরণ করে সীমান্ত এলাকায় নিয়ে গিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় । হত্যাকাণ্ডের তার সাথে আরো দুই জন আফ্রিকান জড়িত ছিলো।
পরে পুলিশ অপর এক আসামীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হলেও সে কারাগারে আত্মহত্যা করে। পলাতক আসামীকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে পুলিশ।
নিহতের স্ত্রী উম্মে সালমা বলেন, একবছর দুই মাস পর রায় হয়, মামলা নিয়ে আমাকে অনেক দৌড়াদৌড়ি করতে হয়েছে । বাংলাদেশ দূতাবাস সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে আমার পাশে দাঁড়িছিল।
“আমার ছেলেরা বাবার হত্যাকারীর সাজা দেখে কিছুটা হলেও দুঃখ ভুলতে পারবে। আমি সৌভাগ্যবান বলে দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশে স্বামী হত্যার বিচার পেয়েছি”, যোগ করেন উম্মে সালমা।