তিনি ‘পাইলট’, তবে কখনও বিমান চালান নি!
জার্মানির বৃহত্তম ও ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমানসংস্থা লুফৎহানসা এয়ারলাইন্স। পরনে সেই এয়ারলাইন্সের পাইলটের পোশাক। সাথে আইডি কার্ড ও নথিপত্র এবং ট্রলি ব্যাগও। নিরাপত্তার কড়াকড়ি তল্লাশি আর লম্বা লাইনের ঝুট ঝামেলা নেই। পার হয়ে সটান চেপে বসেছেন উড়োজাহাজে।
ভারতের রাজধানীতে দিল্লি ইন্দিরা গান্ধী বিমানবন্দর থেকে এমনই এক ছদ্মবেশী পাইলটকে পাকড়াও করেছে বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় নিয়োজিত দেশটির কেন্দ্রীয় শিল্প সুরক্ষা বাহিনী (সিআইএসএফ) ।
পুরোপুরি পাইলটের সাজের ওই ব্যক্তিকে নিয়ে রীতিমতো হইচই কাণ্ড হয়ে যায় বিমানবন্দরে। নিরাপত্তারক্ষীদের চোখকে ফাঁকি দিয়ে শেষে কি না পাইলট সেজে বিমানে? কোনও আততায়ী নয় তো?
ঘটনা মঙ্গলবারের (১৯ নভেম্বর । ওই ছদ্মবেশীর নাম রাজন মেহবুবানি। বয়স পঞ্চাশের কোঠায়। পাইলট সেজে কলকাতাগামী এয়ার এশিয়ার বিমানে চেপে বসেছিলেন রাজন।
সিআইএসএফ পাকড়াও করতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। অপরাধ স্বীকার করে জানান, তিনি কোনও সন্ত্রাসবাদী নন। নিছকই একজন ‘টিকটক আর্টিস্ট।’ নানারকম পোশাকে সেজে ছবি তুলতে ভালবাসেন। আর পাইলট সাজলে সিকিউরিটি চেকিংয়ের ঝক্কি পোহাতে হয় না। লম্বা লাইনেও দাঁড়াতে হয় না। তাই এই ফন্দি।
আটক রাজনের স্বীকারোক্তিতে মোটেই খুশি নন সিআইএসএফের কর্মকর্তারা। বারংবার তাঁকে জেরা করে জানা যায়, একবার নয় বরং ১৫ বার এমন পাইলট সেজে নিরাপত্তারক্ষীদের চোখকে ফাঁকি দিয়েছেন তিনি। এমনকী তাঁর কাছে পাইলটের যে আইডি কার্ড ও নথিপত্র রয়েছে, সেসবও ভুয়ো।
সিআইএসএফ কর্মকর্তারা বলছেন, দিল্লির বসন্তকুঞ্জের বাসিন্দা রাজন। ব্যাঙ্ককেক গিয়ে লুফৎহানসা এয়ারলাইন্সের ভুয়ো পরিচয়পত্র বানিয়েছিলেন। তারপর সেই আইডি নিয়ে এবং লুফৎহানসা এয়ারলাইন্সের পাইলটের মতো পোশাক পরে দিনের পর দিন বিমানে চেপে দেশ-বিদেশ ঘুরে বেরিয়েছেন।
এমন সাজে নিজের ইউটিউব ও টিকটক ভিডিও বানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া আপলোডও করেছিলেন রাজন।
গত সোমবার জার্মানি থেকে লুফৎহানসার প্রধান নিরাপত্ত্তা কর্মকর্তা সিআইএসএফকে সতর্ক করে জানান, লুফৎহানসা এয়ারলাইন্সের পাইলটের সাজে এক সন্দেহজনক যাত্রীকে প্রায়ই দেখা যাচ্ছে বিমানে। তাঁর সঙ্গে বিমানসংস্থার কোনও যোগসূত্র নেই। এরপরেই তক্কে তক্কে ছিল সিআইএসএফ।
গতকালই হাতেনাতে ধরা পড়ে রাজন। শুধুমাত্র টিকটক ভিডিও আপলোড ও কিছু বাড়তি সুবিধা পাওয়ার জন্য তিনি এই কাজ করছিলেন নাকি অন্য কোনও উদ্দেশ্য রয়েছে, সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।