তিউনিসিয়ায় নৌকাডুবিতে নিহত দুই যুবকের বাড়িতে শোকের মাতম

তিউনিসিয়ায় নৌকাডুবিতে প্রাণ গেল মাদারীপুরের দুই যুবকের। তাদের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। এই ঘটনায় দালালদের বিচার দাবী করেছেন নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী। পুলিশ বলছে, দালালদের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে আইনগত ব্যবস্থা।

এলাকাবাসী জানায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার পশ্চিম খাগদী গ্রামের সাব্বির খান ও বড়াইলবাড়ী গ্রামের সাকিব তালুকদারসহ বেশ কয়েকজন ৬ মাস আগে ইতালী যাবার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়।

গত শনিবার তাদের লিবিয়া থেকে অবৈধভাবে সমুদ্রপথে ট্রলারে যাত্রা করায় দালালচক্র। রাত ৮টার দিকে তিউনিসিয়ায় ভূমধ্যসাগরে ট্রলারডুবিতে মারা যান সাব্বির ও সাকিব। পরে সাব্বির ও সাকিরের মারা যাবার বিষয়টি মুঠোফোনে জানায় দালালচক্রের সিন্ডিকেটের সদস্যরা।

Travelion – Mobile

গত শনিবার রাত ২টার দিকে ছেলের মৃত্যুর খবর আসলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন স্বজনরা। এ শোক কিছুতেই মানতে পারছে না নিহত সাব্বিরের মা নাজমা বেগম ও সাকিবের বাবা হাবিবুর রহমান তালুকদার ।

তিউনিসিয়ায় নৌকাডুবিতে নিহত মাদারীপুরের দুই যুবকের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। ছবি : সংগৃহীত
তিউনিসিয়ায় নৌকাডুবিতে নিহত মাদারীপুরের দুই যুবকের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। ছবি : সংগৃহীত

স্বজনরা জানায়, সদর উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের চরনাচনা গ্রামের দালালচক্রের সক্রিয় সদস্য সেকেন মোড়লের ছেলে আতিবর মোড়ল (ইতালী প্রবাসী) ও কাশেম মোড়ল এবং পেয়ারপুর ইউনিয়নের বড়াইলবাড়ী গ্রামের কবির মীরা ছেলে সবুজ মীরা (ইতালী প্রবাসী) ও সুমন মীরা ইতালী নেওয়ার কথা বলে প্রত্যেকের পরিবারের কাছ থেকে সাড়ে ৯ লাখ টাকা করে নেয়।

কিন্তু লিবিয়া যাবার পর পরিবারের কাছে দাবী করে আরো টাকা। পরে পরিবারদের না জানিয়ে ট্রলারে যাত্রা করালে এই দুর্ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ স্বজনদের। এ ঘটনায় দালালদের কঠোর শাস্তি দাবী করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।

এলাকাবাসী জানায়, যখনই বিদেশযাত্রা পথে কোন দুর্ঘটনায় কেউ মারা যায়, তখনই প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। দালালদের প্রশাসনের লোকজন আটকও করে। কিন্তু কিছুদিন পরে দালালরা জামিনে বেড়িয়ে এসে একই কাজ করে থাকে। এই ঘটনায় প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ না নিলে এই অবৈধপথে বিদেশযাত্রা থামবেনা।

সাব্বিরের মা নাজমা বেগম বলেন, আমার ছেলেকে যারা মেরে ফেলছে তাদের কঠিন বিচার চাই। তাদের ফাঁসি চাই। সাকিব তালুকদারের বাবা বাবা হাবিবুর রহমান তালুকদার বলেন, দালালদের এখন ফোন দিলে আর ফোন রিসিভ করেনা। নানা ধরনের প্রতিশ্রুতি দিলেও একটি প্রতিশ্রুতিও রাখেনি তারা।

মাদারীপুর জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল জানান, দুই যুবক মারা গেছে এমন খবর এখনও পাওয়া যায়নি। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দিলে দালালদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!