ট্রাম্পের ভারত ভ্রমণ এয়ারফোর্স ওয়ানে, কী আছে এই উড়োজাহাজে?

নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে দুই দিনের সফরে সোমবার ভারত পৌঁছাবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প। সঙ্গে আসতে পারেন তার ট্রাম্পের দুই বিশেষ উপদেষ্টা মেয়ে ইভাঙ্কা ট্রাম্প ( ৩৮) ও জামাই জ্যারেড কুশনার (৩৯)।

ট্রাম্প পরিবার যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারত আসবেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিশেষ উড়োজাহাজ এয়ারফোর্স ওয়ানে আর সফরকালে যাতায়াত করবেন বিশেষ গাড়ি দ্য বিস্টে।

এরই মধ্যে মার্কিন বিমানবাহিনীর বিশেষ বিমানে ভারতে চলে এসেছে যে কোন বিপর্যয় মোকাবিলায় পারদর্শী বিশেষ গাড়ি-দ্য বিস্ট। আর সফরসূচি অনুযায়ী সোমবার গুজরাট বিমানবন্দরে নামবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের বোয়িং ৭৪৭-২০০বি সিরিজের বিশেষ উড়োজাহাজে ।

Travelion – Mobile

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলে কথা, সফরের নানা বিষয় নিয়ে আলোচনার সঙ্গে তার ব্যবহার করা বিশেষ উড়োজাহাজ ও বিশেষ গাড়ি আলোচনাও সমান গুলুত্ব পাচ্ছে । বলা যায় অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে এয়ারফোর্স ওয়ানকে ঘিরে, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, বৈশিষ্ট্য ও পরিষেবার দিক থেকে যার তুলনাই পাওয়া যায় না ।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশেষ উড়োজাহাজে এয়ারফোর্স ওয়ানে আসবেন ভারত
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশেষ উড়োজাহাজে এয়ারফোর্স ওয়ানে আসবেন ভারত

সেক্ষেত্রে আকাশযাত্রা পাঠকদের জন্য এয়ারফোর্স ওয়ান নিয়ে যে আগ্রহের কমতি থাকবে না তা নিঃসন্দে বলা যায়। তাই সংক্ষেপে তুলে ধরা হল মার্কিন প্রেসিডেন্টের জন্য বিশেষভাবে তৈরি ‘এয়ারফোর্স ওয়ান’র ইতিহাস।

১৯৬২ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি প্রেসিডেন্টের জন্য বিশেষভাবে তৈরি একটি যুদ্ধবিমানে প্রথম ওঠেন। তবে সেই বিমানের সঙ্গে আজকের এয়ারফোর্স ওয়ানের অনেক পার্থক্য রয়েছে।

জন এফ কেনেডির পরে আরও নানা যুদ্ধবিমান মার্কিন প্রেসিডেন্টের জন্য বিশেষভাবে তৈরি হয়েছে। তবে বর্তমান এয়ারফোর্স ওয়ান প্রথম প্রকাশ্যে আসে ১৯৯০ সালে জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশের আমলে।

১৯৬২ সালে বোয়িং ৭০৭-এর একটি আধুনিক সংস্করণ ব্যবহার করা হতো। এখন বোয়িং ৭৪৭-২০০বি সিরিজ ব্যবহার করা হয়। পরে আরও বেশ কিছু আধুনিক প্রযুক্তি ও বৈশিষ্ট্যসংবলিত বিমানে উঠেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্টরা।

এয়ারফোর্স ওয়ান উড়োজাহাজটির বিশেষত্ব হলো, এটি মাঝ আকাশেই জ্বালানি ভরে নিতে পারে। যেকোনো জায়গায় মার্কিন প্রেসিডেন্টকে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রাখে এয়ারফোর্স ওয়ান। প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলায় পারদর্শী এই উড়োজাহাজ।

এর অত্যাধুনিক ও নিরাপদ যোগাযোগব্যবস্থার কারণে কোনোও আপৎকালীন পরিস্থিতিতে এয়ারফোর্স ওয়ানই মোবাইল কমান্ড সেন্টার হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। এর সুরক্ষাব্যবস্থাও অত্যাধুনিক মানের। ইলেকট্রো ম্যাগনেটিক রশ্মি থেকে সহজেই রক্ষা পাবে উড়োজাহাজটি।

এয়ারফোর্স ওয়ানে প্রেসিডেন্টের থাকার জন্য স্যুইট, বড় অফিস, কনফারেন্স কক্ষ, প্রসাধনকক্ষসহ একাধিক পরিষেবা
এয়ারফোর্স ওয়ানে প্রেসিডেন্টের থাকার জন্য স্যুইট, বড় অফিস, কনফারেন্স কক্ষ, প্রসাধনকক্ষসহ একাধিক পরিষেবা

এ ছাড়া আকাশপথে আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে সুরক্ষিত রাখতে একগুচ্ছ ব্যবস্থা রয়েছে। পাশাপাশি উন্নতমানের যোগাযোগ স্থাপনের জন্য এয়ারফোর্স ওয়ানের মধ্যেই অত্যাধুনিক সরঞ্জাম মজুত থাকে।

বোয়িং ৭৪৭-২০০বি সিরিজের এয়ারফোর্স ওয়ানে ফ্লোর এরিয়া প্রায় চার হাজার বর্গফুট। প্রেসিডেন্টের থাকার জন্য সম্পূর্ণ পৃথক একটি স্যুইট রয়েছে। আছে বড় অফিস, কনফারেন্স কক্ষ, প্রসাধন কক্ষসহ একাধিক পরিষেবা।

এয়ারফোর্স ওয়ানে ফ্লোর এরিয়া প্রায় চার হাজার বর্গফুট। এর তিনটি আলাদা ভাগ রয়েছে। প্রেসিডেন্টের থাকার জন্য সম্পূর্ণ পৃথক একটি স্যুইট রয়েছে। তাতে আছে বিরাট একটি অফিস, কনফারেন্স কক্ষ, প্রসাধনকক্ষসহ একাধিক পরিষেবা। এ ছাড়া অত্যাধুনিক অস্ত্রোপচারকক্ষসহ একটি মেডিকেল স্যুইটও আছে আপৎকালীন সমস্যার জন্য। সব সময় এখানে একজন চিকিৎসক থাকেন।

উড়োজাহাজের রান্নাঘরটিও বেশ বড়। একসঙ্গে ১০০ জনকে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা যায়। প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যেসব কর্মচারী থাকেন, তাঁদের জন্য কোয়ার্টারও রয়েছে এয়ারফোর্স ওয়ানের মধ্যে।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই বিশেষ উড়োজাহাজ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আলাদা একটি বিভাগ রয়েছে। তার নাম প্রেসিডেনশিয়াল এয়ারলিফ্ট গ্রুপ।

হোয়াইট হাউসের মিলিটারি অফিসের অধীনে এই বিভাগ কাজ করে সর্বক্ষণ। ১৯৪৪ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্টের ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্টের নির্দেশে এই গ্রুপ তৈরি করা হয়।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!