জার্মানি দিয়ে শুরু প্রবাসীদের ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উদ্বোধন

জার্মানিতে বাংলাদেশ দূতাবাসে প্রথম কার্যক্রম চালুর মধ্যে দিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বিশ্বের সর্বাধুনিক ‘ই-পাসপোর্ট’ পাওয়ার পথ খুলল।

আজ রবিবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানী বার্লিনে বাংলাদেশ দূতাবাসে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন। প্রবাসীদের দুইটি ই-পাসপোর্ট আবেদন প্রক্রিয়া গ্রহণের মাধ্যমে এই কার্যক্রম শুরু করা হয় ।

অনুষ্ঠানে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শি চিন্তার সফল বাস্তবায়ন উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি মোতাবেক মুজিববর্ষে ই-পাসপোর্ট সাধারণ জনগণের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। দেশে ইতোমধ্যে প্রায় ১৫ লাখ আবেদনের মধ্যে প্রায় ১০ লক্ষ ই পাসপোর্ট বিতরণ করা হয়েছে। দেশের সকল পাসপোর্ট অফিস থেকে এই সর্বাধুনিক পাসপোর্ট প্রদান করা হচ্ছে । বিমানবন্দরে ই-গেইট স্থাপন করা হয়েছে, যা দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম। এমনকি উন্নত দেশগুলোর স্বল্প সংখ্যক দেশে এটা স্থাপিত হয়েছে।’

Travelion – Mobile

তিনি আরও বলেন, “বর্তমান সরকার রেমিট্যান্সযোদ্ধা প্রবাসীদের সর্বোচ্চ অগ্রধিকার দিচ্ছে। সে লক্ষ্যেই দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিদেশের মিশনগুলোতেও এই সর্বাধুনিক কার্যক্রম সম্প্রসারিত করা হচ্ছে। এর ফলে প্রবাসীরা উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে পারবেন এবং তাদের ভ্রমণ আরও সহজ হবে।

ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আইয়ূব চৌধুরী, এনডিসি, পিএসসি বলেন যে, ২০২১ সালের জুনের শেষের দিকে দেশের সকল পাসপোর্ট অফিস ই-পাসপোর্ট সিস্টেমের আওতায় আনা হয়। কিন্তু সকল প্রস্তুতি সত্বেও মহামারী পরিস্থিতির কারণে দেশের বাইরে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে ই-পাসপোটর্ সেবা সম্প্রসারণ শুরু করা সম্ভব হয়নি। আজ জার্মানির দূতাবাসের মাধ্যমে এই কার্যক্রম শুরু হল এবং ধারাবাহিকভাবে বাকি মিশনগুলোতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে চালুর কাজ এগিয়ে চলছে ।

জার্মানির বার্লিনে বাংলাদেশ দূতাবাসে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন
জার্মানির রাজধানী বাংলাদেশ দূতাবাসে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন

সারা বিশ্বের মধ্যে জার্মানি দূতাবাসে প্রথম ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম চালু করায় সরকারের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানিয়ে জার্মানিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, এনডিসি বলেন, ই-পাসপোর্ট চালুর ফলে প্রবাসীদের ভোগান্তির অনেক কমে যাবে। তাছাড়া ব্যবসা, শিক্ষা, পর্যটনসহ নানা কাজে বাংলাদেশে ভ্রমণে যাওয়া বিদেশিরাও উপকৃত হবেন, যা দেশে ভাবমূর্তিতে বাড়াতে ভূমিকা রাখবে।

অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী বলেন, ই-পাসপোর্ট এবং স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়ন প্রকল্পের মূল লক্ষ্য বিশ্বব্যাপী আরো নিরাপদ ও বিশ্বাসযোগ্যতার সাথে বাংলাদেশি পাসপোর্ট চালু করা। অধিক তথ্য সংরক্ষণের জন্য অত্যাধুনিক চিপের অন্তর্ভুক্তি, উন্নত নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য, বৈধতার মেয়াদ বৃদ্ধি, স্মার্ট ইমিগ্রেশন পদ্ধতির প্রবর্তন বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে আরও সম্মানজনক অবস্থানে উপস্থাপনের ব্যাপক সুযোগ করে দিয়েছে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, জার্মানি ছাড়াও চেক রিপাকলিক ও কসোভো বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা নির্ধারিত ফি দিয়ে ই-পাসপোর্ট গ্রহণ করতে পারবেন। এ ছাড়া দূরের বাংলাদেশিরা বার্লিনে না এসেই দূতাবাসের কন্স্যুলার ক্যাম্পে ভ্রাম্যমাণ ইউনিটের মাধ্যমে ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

অনুষ্ঠানে জার্মান ভেরিডস কোম্পানির প্রধান নির্বাহী (সিইও) আন্দ্রেস রাশমির, দূতাবাসের দ্বিতীয় সচিব, মো. খালিদ হাসান সঞ্চালনা কাউন্সেলর (কনস্যুলার), কাজী তুহিন রসুল ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, জার্মানিতে বাংলাদেশ কমিউনিটি সংগঠক ও দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অংশগ্রহণ করেন।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!