জার্মানিতে কিশোরদের করোনা সংক্রমণ বাড়ায় দুশ্চিন্তা
জার্মানিতে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার এখনো স্থিতিশীল রয়েছে।তবে রবার্ট কখ ইনস্টিটিউট সংক্রমণের ক্ষেত্রে আঞ্চলিক ও বয়সজনিত বিশাল পার্থক্য সম্পর্কে গভীর দুশ্চিন্তা প্রকাশ করছে। বিশেষ করে কিছু এলাকায় শিশু ও কিশোরদের মধ্যে কোভিড সংক্রমণের অস্বাভাবিক উঁচু হার বিপদ ডেকে আনতে পারে বলে এই প্রতিষ্ঠান মনে করছে।
পুরো জার্মানিতে প্রতি এক হাজার মানুষের মধ্যে সংক্রমণের গড় সাপ্তাহিক হার এই মুহূর্তে প্রায় ৬৯ হলেও আট জেলায় দশ থেকে ১৯ বছর বয়সিদের মধ্যে কিশোরদের মধ্যে সেই হার পাঁচশোরও বেশি।
জার্মানিতে করোনা টিকাদানের প্রকৃত হার সম্পর্কে ধোঁয়াশা এখনো কাটেনি। জার্মানির ফেডারেল কাঠামো, ডিজিটাল প্রযুক্তির অভাব ও স্বাস্থ্য পরিষেবা অবকাঠামোয় একক মানদণ্ডের অভাবের মতো কারণকে এমন বিভ্রান্তির জন্য দায়ী করা হচ্ছে।
রবার্ট কখ ইনস্টিটিউটের প্রধান লোটার ভিলারের মতে, সেপ্টেম্বর মাসের শেষ পর্যন্ত সম্ভবত ৮০ শতাংশ মানুষ টিকার সব প্রয়োজনীয় ডোজ নিয়েছেন। তবে এখনো যে লাখ লাখ মানুষ সুযোগ সত্ত্বেও টিকা নেন নি, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই।
হাসপাতালে গুরুতর অসুস্থ কোভিড রোগীদের প্রায় ৯০ শতাংশই করোনা টিকা নেন নি। টিকাপ্রাপ্তদের ক্ষেত্রে মূলত অন্যান্য রোগের ধাক্কা প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেওয়ায় করোনা ভাইরাস হামলা চালাতে পেরেছে।
১২ থেকে ১৭ বছর বয়সিদের ক্ষেত্রে মাত্র কিছুকাল আগে করোনা টিকার ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে বলে যথেষ্ট বেশি সংখ্যক কিশোর এখনো সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারে নি। স্কুল খোলা থাকার কারণেও এই বয়সের কিশোরদের মধ্যে সংক্রমণের হার কিছু ক্ষেত্রে দ্রুত বেড়ে গেছে।
সৌভাগ্যবশত কোভিডে আক্রান্ত হলেও শিশু-কিশোরদের ক্ষেত্রে রোগের লক্ষণ সহজে দেখা যায় না। তবে এমন সংক্রমণের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব সম্পর্কে এখনো কোনো স্পষ্ট ধারণা নেই।
সুযোগ সত্ত্বেও করোনা টিকা নিতে এখনো যারা নারাজ, তাদের উপর চাপ বেড়েই চলেছে। অনেক জায়গায় এমন মানুষ প্রবেশাধিকার পাচ্ছেন না। করোনা টেস্ট করালে নিজের পকেট থেকে অর্থ গুনতে হচ্ছে বলে এমন মানুষের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে।
রবার্ট কখ ইনস্টিটিউটের প্রধান ভিলার জানিয়েছেন, তাকে নিয়মিত হত্যার হুমকি পাঠানো হচ্ছে। লকডাউন থেকে শুরু করে স্কুল বন্ধ রাখার মতো কড়া পদক্ষেপের দায় তার উপর চাপিয়ে কিছু মানুষ এমন হুমকি দিচ্ছে বলে ভিলার উল্লেখ করেন।
তিনি অবশ্য এমন ঝুঁকি সত্ত্বেও অবিচল থেকে নিজের দায়িত্ব পালন করে যেতে বদ্ধপরিকর। মহামারি সংক্রান্ত যাবতীয় সমস্যার দায় রবার্ট কখ ইনস্টিটিউটের উপর চাপানোর অযৌক্তিক প্রবণতার বিরোধিতা করেন তিনি। সূত্র : রয়টার্স।