জার্মানিতে করোনার ৪র্থ ঢেউ, সংক্রমণ ক্রমেই বাড়ছে

জার্মানিতে নতুন করে করোনা সংক্রমণ ক্রমেই বাড়ছে। একে করোনার চতুর্থ ঢেউ বলা হচ্ছে। নানা বিধিনিষেধ দেওয়ার পাশাপাশি প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষকে টিকা দেওয়ার পরেও ইউরোপীয় দেশটি করোনার প্রাদূর্ভাব থেকে মুক্ত হতে পারেনি। গত ২৪ ঘণ্টায় জার্মানি জুড়ে প্রায় ৪০ হাজার মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছে এবং ২৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।

বিশেষজ্ঞেরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, যদি এখনই কোনো কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, তাহলে জার্মানিতে আরও বেশি সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়বে এবং আরও লক্ষাধিক মানুষের মৃত্যু ঘটতে পারে।

জার্মানির সংক্রামক রোগবিষয়ক গবেষণা কেন্দ্র রবার্ট কখ ইনস্টিটিউট বুধবার জানিয়েছে, সংক্রমণের সংখ্যা গত এক সপ্তাহ ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী। এই ইনস্টিটিউটের নতুন তথ্য অনুযায়ী, গত তিন দিন সংক্রমণ বেড়েই চলেছে।

Travelion – Mobile

সাড়ে ৮ কোটি জনগোষ্টির জার্মানিতে বিগত মাসগুলোতে করোনা সংক্রমণ কমে এলে নানা বিধিনিষেধ আইন শিথিল করা হয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে রোগনিরাময় বিশেষজ্ঞরা আসন্ন বড়দিন উৎসবের আগেই করোনা সংক্রমণে লাগাম টানতে আরও কঠোর সুরক্ষাব্যবস্থার কথা বলেছেন।

জার্মানির নামী ভাইরোলজিস্ট ক্রিশ্চিয়ান ড্রস্টেন বলেছেন, ‘বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি গত বছরের চেয়ে খারাপ। কারণ, গত বছর এই সময় কঠোর লকডাউন ছিল।

তিনি সবার জন্য বুস্টার ডোজের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে বলেন, জার্মানির মোট জনসংখ্যার অর্ধেককেও যদি টিকার বুস্টার ডোজের আনা যায়, তাহলে সংক্রমণের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে।

অন্যদিকে বিশেষজ্ঞরা টিকা নিতে অনীহা প্রকাশকারীদর বিষয়ে বাধ্যতামূলক টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর তুলনায় জার্মানিতে টিকা দেওয়ার ধীরগতির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিজ্ঞানী ও গবেষকদের সংগঠন লিওপোল্ডিনা বিবৃতিতে বলেছে, জার্মানিতে এখন পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে টিকা দেওয়া সম্ভব হয়নি। করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর এটিও একটি কারণ।

গত শনিবার পর্যন্ত জার্মানিতে প্রায় ২৭ লাখ মানুষ করোনার দুই ডোজ টিকা নেওয়ার পর বুস্টার ডোজ নিয়েছেন। আর দেশটিতে দুই ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে ৫ কোটি ৫৯ লাখ মানুষকে, যা মোট জনসংখ্যার ৬৭ দশমিক ১ শতাংশ।

ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পরিসংখ্যানের সূত্র দিয়ে ফাইজার–বায়োএনটেকের টিকার অন্যতম আবিষ্কারক উগুর সাহিন বলেছেন, টিকা দেওয়ার পর সপ্তম, অষ্টম বা নবম মাসে অ্যান্টিবডির মাত্রা কমতে শুরু করে এবং এতে করে করোনার সংক্রমণ ঘটতে পারে। তবে বুস্টার ডোজ ভাইরাস প্রতিরোধক্ষমতা পুনরুদ্ধার করে, যা করোনার ডেলটা ধরনের ক্ষেত্রেও কাজ করে। বুস্টার টিকা নেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রোগের ভয়াবহতা সাধারণত মাঝারি হয় এবং খুব কম ক্ষেত্রেই গুরুতর অসুস্থতা লক্ষ করা যায়।

করোনা মহামারির শুরু থেকে জার্মানিতে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ এই রোগ থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন, আর মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৯৭ হাজার মানুষের।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!