জর্ডানে শ্রম বাজার সুরক্ষায় প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বাংলাদেশ দূতাবাস

জর্ডানে শ্রম বাজার রক্ষায় কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। দেশটিতে পোশাক শিল্পে কর্মরত প্রায় ৪৫ হাজার বাংলাদেশি কর্মীর বিষয়ে খোজ খবর নেওয়াসহ সেখানকার পোশাক কারখানার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করছে বাংলাদেশের জর্ডান দূতাবাস।

সোমবার (৫ মে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মো. তৌহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জর্ডানে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত নাহিদা সোবহানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের জর্ডান দূতাবাস শ্রম বাজার সুরক্ষায় কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

নাহিদা সোবহান সম্প্রতি দেশটির ইরবি প্রদেশে বিভিন্ন পোশাক কারখানার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করে বাংলাদেশি শ্রমিকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন।

Travelion – Mobile

তিনি জর্ডানের সর্ববৃহৎ পোশাক কারখানা ক্লাসিক ফ্যাশন্স এপ্যারেলস লিমিটেড কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশি শ্রমিকদের সার্বিক অবস্থার বিষয়ে অবগত হন এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের সহায়তার বিষয়ে দূতাবাস সচেষ্ট বলে জানান।

ক্লাসিক ফ্যাশন্স এপ্যারেলস লিমিটেড কারখানায় প্রায় পনের হাজার দক্ষ বাংলাদেশি পোশাক শ্রমিক কর্মরত রয়েছেন। রাষ্ট্রদূত নাহিদা সোবহান এরপর সেখানকার কয়েকটি ইউনিট ঘুরে দেখেন এবং কর্মরত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

এছাড়া রাষ্ট্রদূত সেঞ্চুরি মিরাকল এবং বাংলাদেশি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান গ্যালাক্সি এপ্যারেলস ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং বাংলাদেশি শ্রমিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

জর্ডানে কর্মরত বাংলাদেশিদের বড় একটা অংশ পোশাক শিল্পে নিয়োজিত। প্রবাসী ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী জর্ডানের ৩১ টি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপতানিকারক প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশি শ্রমিক কর্মরত রয়েছে যাদের বেশিরভাগই নারী।।

মার্কিন শুল্ক রেকর্ড অনুযায়ী, জর্ডানের পোশাক কারখানাগুলি আমেরিকান এবং কানাডিয়ান গ্রাহকদের জন্য পোশাক রফতানি করে। সেখানকার পোশাক কলকারখানাগুলিতে বাংলাদেশের অভিবাসী পোশাক শ্রমিকদের শোষণ করা হয় বলে অভিযোগ আছে দীর্ঘদিনের।

গত বছরের আগস্টে ব্যাংকক ভিত্তিক গ্লোবাল অ্যালায়েন্স অ্যান্টি ট্র্যাফিক ইন উইমেনের (জিএএটিডাব্লু) এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, জর্ডানে বাংলাদেশের মহিলা পোশাক শ্রমিকরা তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে এমন প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন।

ওই সমীক্ষায় আরও বলা হয়, দেশটিতে মহিলা পোশাক শ্রমিকরা তাদের কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গ এবং জাতিগত ভিত্তিক বৈষম্যের স্বতন্ত্র প্যাটার্নের মুখোমুখি হয়েছেন। এ কারণে গ্লোবাল এবং আঞ্চলিক ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠনগুলো জর্ডানের কারখানার মালিকদের পোশাক শিল্পের জন্য আচরণবিধি এবং সাধারণ ক্রেতার প্রয়োজনীয়তা অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়ে আসছে।

গত ডিসেম্বের ট্রেড ইউনিয়নবাদী ও এ.ডাব্লিউ.এজে ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা নাজমা আক্তার বাংলাদেশ ও জর্ডান সরকারকে এবং নিয়োগকারীদের বেশিরভাগ বাংলাদেশ থেকে আসা নারী অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার রক্ষার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন। একই সঙ্গে তিনি বৈদেশিক কর্মচারীদের বৈষম্য থেকে রক্ষার জন্য ক্রেতাদের নিয়োগের উপর চাপ আনার আহ্বান জানান। তার মতে, জর্ডানে অভিবাসী শ্রমিকদের প্রায়শই আধুনিক দিনের দাস হিসাবে গণ্য করা হয়।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!