জর্ডানে বাড়িতে বাড়িতে নিত্যপণ্য বিতরণ কার্যক্রম শুরু
কারফিউ বলবৎ থাকায় জনগণের জন্য রুটি,পানি, ওষুধ এবং জ্বালানিসহ নিত্য প্রয়ােজনীয় পণ্য বাড়িতে সরবরাহের ব্যবস্থা করেছে জর্ডান সরকার।
আজ মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) থেকে এই বিশেষ ব্যবস্থায় দেশের সকল অঞ্চলে রুটি ও পানীয় জলের বিতরণ শুরু হয়। পাশাপাশি ফার্মেসির মাধ্যমে ওষুধ, দুধ এবং অন্যান্য পণ্য সরবরাহ এবং গ্যাস এজেন্সি মাধ্যমে কেরােসিন সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
গত রাতে সরকার ঘোষিত এই বিশেষ ব্যবস্থার ভিত্তিতে গ্রেটার আম্মান পৌরসভা (জিএএম) আজ সকালে দুটি পরিবহন সংস্থার ১৯০টি বাসের মাধ্যমে রাজধানীর বাসিন্দাদের রুটি সরবরাহ শুরু করে।
আম্মানের মেয়র, ইউসেফ শাওয়ারবেহ একটি বিবৃতিতে বলেন যে, প্রতিটি বাস এক হাজার বান্ডিল রুটি ভরা এবং বিতরণ প্রক্রিয়াটি বিকাল ৫ টায় শেষ হবে। নাগরিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার স্বার্থে বাসগুলি সম্পূর্ণ জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া রুটি পরিবেশক, জিএএম প্রতিনিধি এবং নিরাপত্তা সদস্যরা স্বাস্থ্য সুরক্ষা পদ্ধতিতে সজ্জিত হয়ে মাঠে নেমেছেন।”
প্রধানমন্ত্রী ওমর রাজ্জাজ আজ সকালে বাসের মাধ্যমে নাগরিকদের রুটি বিতরণের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। এসম তিনি নাগরিকদের সাথে এবং জিএএম কর্মীদের সাথে কথা বলেন এবং তাদের খোঁজখবর নেন।
প্রতিদিন সময় সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত ব্যাগ করে রুটি বিতরণ করা হবে। প্রতিটি ব্যাগে তিন কেজি রুটি থাকবে, যার দাম পড়বে ৯৬ পিয়াস্টার। প্রতিটি বাড়িতে প্রতিদিন একটি করে ব্যাগ দেওয়া হবে।
যারা রুটির জন্য অর্থ দিতে পারবেন না, অর্থাৎ যারা পরিবার এবং জাতীয় সহায়তা তহবিল (এনএএফ) থেকে উপকৃত হচ্ছেন, তাদের জন্য প্রশাসনিক শাসকদের সাথে সমন্বয় করে পৌরসভাগুলো বিনামূল্যে রুটি সরবরাহ করা হবে।
সরকাের নতুন বিশেষ ব্যবস্থায় ওষুধ, দুধ এবং অন্যান্য পণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে কারফিউতে খোলা রাখা ফার্মেসিগুলির মাধ্যমে। সারা দেশের ফার্মেসির কর্মীরা ঘরে ঘরে পৌঁছে দেবে এইসব পণ্য। ফার্মাসিগুলি সকাল ১০ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।
কারফিউ চলাকালীন সারাদেশে গ্যাস এজেন্সিগুলির কর্মী এবং তাদের যানবাহনগুলিকে চলাফেরা ও বিতরণ করার অনুমতি দেওয়া আছে। কাজেই রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহ করার ক্ষেত্রে গ্যাস এজেন্সিগুলি সকাল ৯ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত গ্রাহকের প্রয়োজন মতো বাড়িতে সরবরাহ করা অব্যাহত রাখবে।
عمليات تحميل الخبز لتوزيعه على المواطنين في عمّان رفقة الجيش والأمن والدرك
عمليات تحميل الخبز لتوزيعه على المواطنين في عمّان رفقة الجيش والأمن والدركhttps://royanews.tv/news/209442
Posted by Roya News – رؤيا الإخباري on Tuesday, March 24, 2020
কেরোসিনের ক্ষেত্রে গ্যাস স্টেশনগুলিসরবরাহের মাধ্যমে মানুষের চাহিদা মেটাতে কাজ করবে। যাদের কেরোসিন প্রয়োজন, তারা সকাল ৬ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত গ্যাস স্টেশনগুলিতে ফোন করে অর্ডার দিতে পারবে ।
হিমায়িত মুরগী, দুধ, চাল, চিনি, ডিম, স্যানিটাইজার এবং ডিটারজেন্ট পাউডারের মৌলিক পণ্যগুলির বিতরণ প্রক্রিয়াও বাড়িতে সরবরাহের মাধ্যমে করা হবে, যা বুধবার ঘোষণা করা হবে।
এ দিকে সোমবার রাত পর্যন্ত জর্ডানের করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১২৭ জনে পৌঁছেছে।
জাতীয় নিরাপত্তা ও সঙ্কট ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রের (এনসিএসসিএম) প্রেস ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী, সাদ জাবে বলেন যে, নতুন আক্রান্তের মধ্যে, প্রিন্স হামজা হাসপাতালে কোয়ারেন্টিনে থাকাদের মধ্যে দু’জন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরেছিলেন, এক জন কোয়ারেন্টিনে থাকা অবস্থায় অন্য একজন রোগী থেকে সংক্রামিত হয়েছেন।
এছাড়াও, প্রিন্স হামজা হাসপাতালের একজন সচিব ভাইরাসটির জন্য ইতিবাচক পরীক্ষা করেছিলেন, যার প্রেক্ষিতে হাসপাতালের সকল কর্মীদের দ্রুত করোনা পরীক্ষা করা হয়, বাদ যায়নি পরিচালকও। তবে সৌভাগ্যক্রমে কারো করোনা পাওনা যায়নি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি হাসপাতালের বাইরে থেকে সচিব এই রোগে সংক্রামিত হয়েছিলেন।”
এছাড়া ইরান থেকে আসা ২ জন এবং নেদারল্যান্ড ও যুক্তরাজ্য থেকে ২ জনকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। নতুন আক্রান্তদের পাঁচ জন রয়েছেন যাঁরা ইরবিডে একটি বিবাহের অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার পরে সংক্রামিত হয়েছেন। পাশাপাশি ভাইরাসযুক্ত একজন নার্সের সাথে শারীরিক যোগাযোগ করার ঘটনাও ঘটেছে।
হাসপাতালের কক্ষগুলিতে জড়ো না হওয়ার জন্য নাগরিক ও প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী, কারণ হাসপাতালে কোন করোনা আক্রান্ত চিকিৎসাধীন থাকলে, তার থেকে সংক্রমিত হওয়ার আশংখা থাকে।
জরুরী কাজের প্রকৃতির জন্য যাদের পারমিট বা কারফিউ পাস দেওয়া হয়েছে সেগুলো আগামী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাতিল হয়ে যাবে । এর পরিবর্তে বৈদ্যুতিন (ইলেকট্রনিক) ব্যবস্থার নতুন পাস ইস্যু করা হবে। সেগুলি পাওয়ার পদ্ধতি পরে ঘোষণা করা হবে। অন্যদিকে কারফিউ পাস জালিয়াতি বা অন্যদের ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে সরকার কঠোরভাবে সতর্ক করে দিয়েছে।
কারফিউ চলাকালীন জনগণের সমস্য বা অভিযোগ পাওয়ার জন্য সরকার হটলাইন ব্যবস্থা করেছে। হটলাইন নাম্বার 065777292, 065777293 এবং 065777294।