চীনে বাংলাদেশ দূতাবাসে বিজয় দিবসের বর্ণাঢ্য আয়োজন

যথাযোগ্য মর্যাদায় এবং উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে চীনে বাংলাদেশ দূতাবাসে ৪৯তম বিজয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবারবর্গ, বেইজিংয়ের প্রবাসী বাংলাদেশি, চীনা সংবাদকর্মী চীনা অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।

বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে দেশটির রাজধানী বেইজিংয়ে বাংলাদেশ দূতাবাস প্রাঙ্গনে জাতীয় সঙ্গীতের সুরে সুরে পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচির সূচনা করেন দেশটি নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাহবুবুজ্জামান। এরপর রাষ্ট্রদূত দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু কর্ণারে রক্ষিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

এ সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ত্রিশ লক্ষ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা এবং দুলক্ষ সম্ভ্রমহারা মা বোনের স্মূতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়েছিল। জাতির পিতা ও তাঁর পরিবারবর্গ, মুক্তিযোদ্ধে নিহতদের আত্নার মাগফেরাত এবং দেশের শান্তি, স্থিতিশীলতা ও অগ্রগতির জন্য দোয়া পরিচালনা করা হয়।

Travelion – Mobile

দ্বিতীয় পর্বে বিজয় দিবসের ওয়েবিনার আলোচনার শুরুতে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। আলোচনায় ঢাকা থেকে জুম-লিংকের মাধ্যমে বিশেষ অতিথি হিসাবে যোগ দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। এ ছাড়া বেইজিং ভাষা ও সংস্কৃতি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শু বাওফেং,বেইজিং যোগাযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শিয়াওউ ঝ্যাং (বৃষ্টি), চায়না রেডিও ইন্টারন্যাশনাল বাংলা বিভাগের ঢাকার ব্যুরোর প্রধান উ কুয়াং উয়ে (আনন্দি) এবং বেইজিং ব্যুরোর উপ-প্রধান চাও ইয়ানহুয়া (সুবর্ণা) ওয়েবিনারের মাধ্যমে যুক্ত হয়েছিলেন।

বাংলাদেশ দূতাবাসের বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বেইজিংয়ের প্রবাসী বাংলাদেশিরা
বাংলাদেশ দূতাবাসের বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বেইজিংয়ের প্রবাসী বাংলাদেশিরা

ওয়েবিনার আলোচনায় রাষ্ট্রদূত মাহবুবুজ্জামান হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তার সুদূর প্রসারী নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের কথা উল্লেখ করে বলেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বাস্তবায়নে বর্তমান সরকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ কে ২০১২ সালের মধ্যে একটি প্রগতিশীল মধ্যমমানের দেশ হিসাবে উন্নতি করতে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের প্রশংসা করেন বলেন, বাংলাদেশে অর্থনীতি তার নেতৃত্বে এসডিজি এর লক্ষ অর্জনে এবং ২০৪৪ সাল নাগাদ বাংলাদেশেকে একটি উন্নত রাষ্ট্র হিসাবে রাপান্তর করার জন্য তিনি কাজ করে যাচ্ছেন।

বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং তার বক্তব্যে বাংলাদেশকে বিজয় দিবসের অভিনন্দন জানিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দূরদর্শী নেতৃত্ব বাংলাদেশকে এবং বাংলাদেশের মানুষকে স্বাধীনতার অভ্যুদয়ে বিশেষ অবদানের কথা উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, চীনের জনগনও বাংলাদেশের মত দীর্ঘ আত্মত্যাগ এবং পরম সহিষ্ণুতার পরিচয় দিয়ে নিজেদের দেশের অর্থনৈতিক মুক্তি এবং দ্রুত উন্নয়ন বাস্তবায়ন করছে। তিনি চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ককে “চিত্তাকর্ষক” আখ্যায়িত করেছেন এবং আত্মবিশ্বাস ব্যক্ত করেছেন যে আগামী দিনে তা আরা শক্তিশালী হবে।

বেইজিং দূতাবাসের বিজয় দিবসের সাংস্কৃতিক আয়োজনের দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং তাদের সন্তানরা
বেইজিং দূতাবাসের বিজয় দিবসের সাংস্কৃতিক আয়োজনের দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং তাদের সন্তানরা

তিনি আরো বলেছিলেন, চীন বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম উন্নয়নের অংশীদার হিসাবে সহযোগিতা পরিসর বূদ্ধিতে সচেষ্ঠ থাকবে। রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বিশ্বমহামারী মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রশংসা করেন এবং মত দেন যে, মহামারী রোধে বাংলাদেশ সর্বদা সফল ও ইতিবাচক।

বাংলাদেশ দূতাবাসের ডিফেন্স এটার্চি মাহবুব উল আলম তার বক্তব্যে বাংলাদেশ ও চীন সম্পর্কের আলোকে এই দিনের গুরুত্ব তুলে ধরেছিলেন।

বিজয় দিবসের ঐতিহাসিক তাৎপর্য নিয়ে বক্তব্য রাখেন প্রবাসী বাংলাদেশি শামসুল হক।

বেইজিং দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অফ মিশন মাসুদুর রহমানের সঞ্চালনায় তৃতীয় পর্বে সাংস্কৃতিক আয়োজনের সবচেয়ে আকর্ষণ ছিল দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বাচ্চারা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়েছিল। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধের উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের আত্মা ও চেতনায় সমবেত সংগীত এবং নৃত্যে পরিবেশন করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ ভাষণের উপর একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়েছিল।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!