চীনে ছয় দিনে ১০ হাজার ফ্লাইট বাতিল

করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের ফলে আকাশপথে বিচ্ছিন্ন হচ্ছে চীন। বিশ্বজুড়ে বিমানসংস্থাগুলো চীনমূখী ফ্লাইট বাতিল বা কমিয়ে দেওয়ায় এমন অবস্থা ।

ফ্লাইট নেটওয়ার্কের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত বিশ্বের ৫৪টি বিমানসংস্থা চীনে তাদের নিয়মিত ফ্লাইটগুলো বাতিল বা স্থগিত করেছে। এরমধ্যে ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র এবং এশিয়ার বিশ্বখ্যাত প্রধান বিমানসংস্থাগুলো রয়েছে।
পরিসংখ্যান বলছে, ৬ দিনেই বাতিল হয়েছে প্রায় ১০ হাজার ফ্লাইট । বাতিলের তালিকায় করোনাভাইরাস উপদ্রুত উহানই শুধু নয় রাজধানী বেইজিং এবং বাণিজ্যিক রাজধানী সাংগহাইয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্যেগুলোও আছে।

সিরিয়ামের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২৩ শে জানুয়ারি থেকে ২৮ শে জানুয়ারির মধ্যে প্রায় ১০ হাজার ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে চীনের অভ্যন্তরে চলাচল করা উড়োজাহাজগুলি ছাড়াও মূল ভূখণ্ডে যাতায়াতকারী আন্তর্জাতিক উড়োজাহাজও রয়েছে।

Travelion – Mobile

আঞ্চলিক স্তর বা আভ্যন্তরীণ রুটে পরিসংখ্যান আরও বিস্ময়কর। ২৩ শে জানুয়ারি থেকে ২৮ শে জানুয়ারির মধ্যে, উহান গন্তব্যে যাতায়াত করা নির্ধারিত ফ্লাইটগুলির ৯২% বাতিল করা হয়েছে। মোট ২ হাজার ৬৬৬ টি নির্ধারিত ফ্লাইটের মধ্যে ২ হাজার ৪০৬টিই উড়াল দেয়নি। এই হিসেবে বিভিন্ন দেশের নাগরিককে সরিয়ে নেওয়ার জন্য উদ্ধারকারী ফ্লাইটগুলি ধরা হয়নি।

তবে সামগ্রিকভাবে চীনের জন্য আন্তর্জাতিক রুটের পরিসংখ্যন কিছুটা ভাল। ২৩ শে জানুয়ারি থেকে ২৮ শে জানুয়ারির মধ্যে চীন থেকে নির্ধারিত ফ্লাইটের ১০.৮% উড়াল দেয়নি। অথবা, সোজা কথায় ৯০ হাজার ৬০৭টি ফ্লাইটের মধ্যে কেবল ৯ হাজার ৮০৭ টি ছাড়েনি।

চীনে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের ফ্লাইট বন্ধ ঘোষণা
চীনে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের ফ্লাইট বন্ধ ঘোষণা

তারপরও করোনভাইরাসের জেরে ফ্লাইট বাতিলকরণে বড় ধাক্কা লেগেছে চীনা বিমানসংস্থাগুলোর গায়ে । চায়না ইস্টার্ন তার অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক জুড়ে ১ হাজার ৫৯১ টি ফ্লাইট বাতিল করেছে। এর মধ্যে ১,৫২৯ টি আভ্যন্তরীণ এবং ৬২২ টি আন্তর্জাতিক রুটের।

চীন ইস্টার্নের পরেই আসে চায়না সাইদার্ন । সংস্থাটি এ পর্যন্ত ১ হাজার ৫১০ টি ফ্লাইট বাতিল করেছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৪২৫ টি অভ্যন্তরীণ এবং ৮৫ টি আন্তর্জাতিক রুটের ছিল।

সম্প্রতি, চায়না সাইদার্নের একটি এয়ারবাস এ ৩১৮ করোনাভাইরাস সংক্রামিত একজন যাত্রী বহনের কারণে মিয়ানমার থেকে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছিল। তা ছাড়া, চায়না সাইদার্নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ হাব উহান। এখান থেকে নিউ ইয়র্ক, রোম, সান ফ্রান্সিসকো এবং লন্ডনের মতো হাই প্রোফাইল গন্তব্যগুলিসহ কয়েকটি আন্তর্জাতিক রুট রয়েছে সাইদার্নের ।

চায়না সাইদার্ন এ পর্যন্ত ১ হাজার ৫১০ টি ফ্লাইট বাতিল করেছে।
চায়না সাইদার্ন এ পর্যন্ত ১ হাজার ৫১০ টি ফ্লাইট বাতিল করেছে।

করোনাভাইরাস পরিস্থিাতি কাটিয়ে মার্চ মাসে উহান থেকে বড় আন্তর্জাতিক পরিষেবা আবার চালু করার প্রত্যাশা করছে চায়না সাইদার্ন ।

চীনের অন্য ক্ষতিগ্রস্থ বিমানসংস্থার মধ্যে রয়েছে জিয়ামেন এয়ারলাইন্সের ৮৩৭ টি ফ্লাইট বাতিল।

করোনাভাইরাসের জেরে মারাত্মক প্রভাব পড়েছে চীনের বিমানবন্দরগুলোতে। এর মধ্যে উহান সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। রাজধানী বেইজিংয়ের বিমানবন্দরটিতে প্রায় ১০ ফ্লাইট বাতিল হয়েছে – ৯ হাজার ১১৩ ফ্লাইটের মধ্যে ৯২০টি।

অন্যদিকে, গুয়াংজুওতে নির্ধারিত ফ্লাইটের প্রায় ১০% বাতিল হয়, যা ছিল ৮ হাজার ২৩৬ এর মধ্যে ৮২৯টি ফ্লাইট।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!