চিরতরে কুয়েত ছাড়তে হবে এক লাখ প্রবাসী কর্মীকে
কুয়েত থেকে চিরতরে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে এক লাখ প্রবাসী। শ্রমবাজারে জনসংখ্যার ভারসম্য রক্ষা ও ভিসা ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে তাদের দেশে ফেরত পাঠােনার উদ্যোগ নিয়েছে দেশটির সরকার। দেশে ফেরত পাঠানো প্রবাসীদের মধ্যে বেশিরভাগই প্রান্তিক পর্যায়ের শ্রমিক, যারা নামসর্বস্ব ভিসা ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে কুয়েতে এসেছিল।
দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর ভিসা ব্যবসা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপের অংশ হিসেবেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে আরব টাইমস।
সূত্রটি জানায়, ভিসা বিক্রিতে জড়িত এমন মোট ৪৫০ টি ভুয়া কোম্পানির এক লাখ কর্মীকে দেশে ফেরত পাঠানো হবে। তাদের ২০২০ সালের মধ্যেই দেশে ফেরত যেতে হবে। অনেক প্রবাসী এই কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে ভিসা কিনেলেও বাস্তবে তারা এই কোম্পানিগুলোর জন্য কাজ করেনি। তাই এই কোম্পানিগুলির ফাইল শিগগিরি বন্ধ করা হবে। এর মধ্যে কতজন বাংলাদেশি আছেন সে সর্ম্পকে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
৪৫০ টির মধ্যে ৩০০ টি কোম্পানি এবং অফিসে তদন্ত চালিয়ে দেখা গেছে বাস্তবে সেগুলোর কোন বাণিজ্যিক কার্যকলাপ নেই। যদিও এসবের মাধ্যমে প্রায় এক লাখ ১০০,০০০ কর্মী নিবন্ধিত হয়েছে। তারা নাম বিক্রি করেই ভিসা বিদেশীদের কাছে বিক্রি করেছে বলে জানিয়েছে কুয়েতের নিরাপত্তা বাহিনী।
এই কোম্পানিগুলো যাতে প্রবাসীদের আর কোন ভিসা প্রদানের ক্ষমতা না রাখে সেজন্য সরকার ভিসা ইস্যুকারী কোম্পানিগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করবে।
এদিকে রেসিডেন্সি অ্যাফেয়ার্স ডিপার্টমেন্টের সাথে সমন্বয় করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ৫৫ জন কুয়েতি নাগরিকসহ ৫৩৫ জনকে জড়িত থাকার দায়ে তদন্তে ডেকেছে। এছাড়া কাল্পনিক কোম্পানি এবং প্রতিষ্ঠানের খোঁজে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে সরকারি পর্যায়ে।
এইসব প্রতিষ্ঠানের অনেক কর্মী যখনই প্রকৃত অবস্থা জানতে পেরেছে তখনই তারা কুয়েত ত্যাগ করেছে। এদের মধ্যে কেউ কেউ নিজ দেশে লকডাউনের কারণে এখনো ফেরার অপেক্ষায় রয়েছে।
আল কাবাস ডেইলি জানায়, ২ বছরে (২০১৮-২০১৯) এই কাল্পনিক কোম্পানিগুলো প্রায় ৬৬ মিলিয়ন দিনার আয় করেছে। দেখা গেছে আরব ও এশিয়ার দেশগুলো থেকে ৩০,০০০ কর্মীকে তারা জনপ্রতি ১৫০০ কুয়েতি দিনারের বিনিময়ে ভিসা দিয়েছে। কিছু জাতীয়তার ক্ষেত্রে এটি আরো বেশি ছিল। এছাড়া ৭০,০০০ আকামার স্ট্যাম্প থেকে এসব অবৈধ ব্যবসায়ীরা ২১ মিলিয়ন দিনার অর্জন করেছে।