চাঁদের বুকে যাত্রা করলো আমিরাতের চন্দ্রযান

সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) চন্দ্রযান ‘রাশিদ’ চাঁদের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে আরব বিশ্বের প্রথম চন্দ্রযান মহাকাশে গেল।

রোববার (১১ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার ক্যাপ ক্যানাভেরালের মহাকাশ কেন্দ্র থেকে ‘রাশিদ’ নামের যানটি যাত্রা করে, যেটি তৈরি করেছে দুবাইয়ের মোহাম্মদ বিন রাশিদ মহাকাশকেন্দ্র (এমবিআরসিএস)।

দুবাইয়ের সাবেক শাসক প্রয়াত শেখ রশিদ আল সাইদের নামে মনুষ্যবিহীন এই চন্দ্রযানটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘রাশিদ রোভার’।

Travelion – Mobile

চন্দ্রযান উৎক্ষেপণের সময় আমিরাতের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মাদ বিন রাশিদ আল মাকতুম এবং দুবাইয়ের ক্রাউন প্রিন্স শেখ হামদান বিন মোহাম্মদ ইউএইর মহাকাশ সংস্থার কন্ট্রোল রুমে উপস্থিত ছিলেন।

মার্কিন মহাকাশযান প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের ফ্যালকন-৯ রকেটের মাধ্যমে ‘রাশিদ’ উৎক্ষেপণ করা হয়। জাপানের মুন ল্যান্ডার হাকুতু-আর মিশনের-১ এর দিকে যাচ্ছে এটি। পরে মুন ল্যান্ডারের মাধ্যমে চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করবে যানটি। অবতরণ সফল হলে হাকুতু-আর’ও হবে চাঁদে নিয়ন্ত্রিত অবতরণ মিশনে সক্ষম প্রথম বাণিজ্যক মহাকাশযান।

আপাতত চন্দ্রযান উৎক্ষেপণে সফল হয়েছে। জ্বালানি কম লাগে এমন একটি রুটে অভিযানটি পরিচালনা করা হচ্ছে। ২০২৩ সালের এপ্রিলে চন্দ্রযানটি চাঁদে পৌঁছার কথা রয়েছে । এখন পর্যন্ত পরিচালনা করা চন্দ্রাভিযানের চার ভাগের তিন ভাগই ব্যর্থ হয়েছে।

চন্দ্রযান উৎক্ষেপণের সময়  কন্ট্রোল রুমে  উপস্থিত আমিরাতের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মাদ বিন রাশিদ আল মাকতুম ও দুবাইয়ের ক্রাউন প্রিন্স শেখ হামদান বিন মোহাম্মদ ।
চন্দ্রযান উৎক্ষেপণের সময় কন্ট্রোল রুমে উপস্থিত আমিরাতের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মাদ বিন রাশিদ আল মাকতুম ও দুবাইয়ের ক্রাউন প্রিন্স শেখ হামদান বিন মোহাম্মদ ।

আরব আমিরাতের মহাকাশ সংস্থার মহাপরিচালক সালেম আল মারিও জানান, ‘রাশিদ’ সফলভাবে অবতরণ করলেই তাদের মিশন সফল হবে।

তিনি বলেন, এটি অনন্য উৎক্ষেপণ। অদ্যাবধি পরিকল্পনা অনুযায়ী সবকিছু হয়েছে। স্পেসএক্স অসাধারণ প্রতিষ্ঠান। তাদের সব কাজই ভালো। চাঁদে যাওয়ার কঠিন যাত্রা শুরু হয়েছে। এ নিয়ে আমাদের আত্মবিশ্বাস আছে। আশা করি, সব ঠিকঠাকভাবে সম্পন্ন হবে।

চাঁদের উত্তর-পূর্ব অংশের অ্যাটলাস গর্তে অবতরণ করবে ‘রাশিদ’। রোভারটি এর মূল কাজ সম্পন্ন করতে চন্দ্রপৃষ্ঠে এক চন্দ্রদিন কাটাবে, যা পৃথিবীর ১৪.৭৫ দিনের সমান। এরপর দ্বিতীয় কাজটি সম্পন্ন করতে কাটাবে দ্বিতীয় চন্দ্রদিন। অভিযান শেষের আগে চাঁদে রাতের কঠিন পরিবেশে রোভারটি টিকতে পারে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে।

চাঁদের মাটির বৈশিষ্ট্য, চান্দ্র শিলার গঠন ও বৈশিষ্ট্যসহ চাঁদের ভূতত্ত্ব নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করবে রশিদ চান্দ্রযান। এটি চাঁদের ধূলিকণা, চন্দ্রপৃষ্ঠ ও প্লাজমাও বিশ্লেষণ করবে এবং কঠিন শিলার ওপর আচ্ছাদিত স্তরের ছবিও তুলবে। ফলে চাঁদের ধুলিকণা ও শিলা পরিবর্তনের বিষয়টি ভালোভাবে বুঝতে সক্ষম হবেন বিজ্ঞানীরা।

রোভার ‘রাশিদ’  নিয়ে উচ্ছ্বসিত আরব আমিরাতের প্রকৌশলীরা। ছবি: আল আরাবিয়া
রোভার ‘রাশিদ’ নিয়ে উচ্ছ্বসিত আরব আমিরাতের প্রকৌশলীরা। ছবি: আল আরাবিয়া

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!