চট্টগ্রাম-আমিরাত রুটে সপ্তাহে ৪০ ফ্লাইট, কমছে টিকিট মূল্য

চট্টগ্রাম থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে সপ্তাহে ৪০টি যাত্রীবাহী ফ্লাইট পরিচালনা করছে রাষ্ট্রায়ত্ত ‘বাংলাদেশ বিমান’, দুবাইভিত্তিক ‘ফ্লাই দুবাই’ এবং শারজাহভিত্তিক ‘এয়ার এরাবিয়া’। সবগুলো ফ্লাইট চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সরাসরি যাচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের তিনটি গন্তব্যে। চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের ইতিহাসে আমিরাতে একসঙ্গে এত ফ্লাইট পরিচালনা রেকর্ড।

এপ্রিল থেকে এত বেশি ফ্লাইট পরিচালনার কারণে বিমান সংস্থাগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে; এর ফলে এই রুটে বিমানভাড়া কমেছে। তবে এখনো সহনীয় পর্যায়ে আসেনি। জানুয়ারি মাসে মধ্যপ্রাচ্য রুটে যখন টিকিট নিয়ে হৈচৈ চলছিল, তখন চট্টগ্রাম-দুবাই শুধু যাওয়ার ভাড়া ছিল এক লাখের ওপরে। এখন সেটি কমে ৫২ হাজারে নেমেছে। ফ্লাইট সংকটের কারণে গলাকাটা ভাড়ার ফলে এত দিন প্রবাসী বাংলাদেশিরা মধ্যপ্রাচ্যের দেশে ফিরতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছিলেন।

চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পরিচালক উইং কমান্ডার ফরহাদ হোসেন খান বলেন, ‘আমার জানা মতে আরব আমিরাতে একসঙ্গে এত ফ্লাইট চালুর ঘটনা চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের জন্য রেকর্ড।’ তিনি বলেন, যাত্রী চাহিদা সামাল দিতেই ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। এর ফলে করোনা মহামারির ধকল কাটিয়ে জমজমাট হয়ে উঠছে দেশের দ্বিতীয় বৃহৎ এই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।

Travelion – Mobile

জানা গেছে, চট্টগ্রাম থেকে এখন সবচেয়ে বেশি, সপ্তাহে ২১টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে শারজাহভিত্তিক এয়ার এরাবিয়া। এর মধ্যে চট্টগ্রাম-শারজাহ রুটে সকাল-বিকাল ১৪টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে। আর চট্টগ্রাম-আবুধাবি রুটে সাতটি ফ্লাইট পরিচালনা করছে সপ্তাহে। এই রুটে শুরু থেকেই সর্বোচ্চ যাত্রী পরিবহন করছে এয়ার এরাবিয়া। করোনার পর মূলত পর্যটক ভিসায় যাত্রী বেড়ে যাওয়া এবং ওমরাহ যাত্রীদের টার্গেট করেই এই বিপুল ফ্লাইট পরিচালনা করছে বিমানসংস্থাটি।

এয়ার এরাবিয়া বাংলাদেশের কমার্শিয়াল ম্যানেজার একরামুল কবির রিয়াজ বলেন, ‘রমজানের আগে থেকেই ওমরাহ যাত্রীদের বড় অংশকেই আমরা পরিবহন করছি। প্রতিযোগী বিমান সংস্থার তুলনায় আমাদের ভাড়া অনেক কম, চট্টগ্রাম থেকে সকাল-বিকাল-রাত ফ্লাইট থাকা এবং জেদ্দা বা মদিনাকে বেছে নেওয়ার সুযোগের কারণে যাত্রীরা আমাদেও বেছে নিচ্ছেন। ’

তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম-জেদ্দা/মদিনা-চট্টগ্রাম রুটে আমরা আসা যাওয়ার ভাড়া নিচ্ছি সব মিলিয়ে মাত্র ৭৪ হাজার টাকা। চট্টগ্রাম থেকে শারজাহ বা আবুধাবি হয়ে ওমরাহে যাওয়া যাচ্ছে। আর শারজাহতে গিয়ে এক ঘণ্টা বিশ্রাম এবং মিকাত করারও সুযোগ পাচ্ছেন ওমরাহ যাত্রীরা। ’

এদিকে চট্টগ্রাম থেকে আরব আমিরাত রুটে সপ্তাহে ১৪টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে দুবাইভিত্তিক ফ্লাই দুবাই। বিমানসংস্থাটি শুধু দুবাই রুটেই এই ফ্লাইট চালাচ্ছে চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি।

আর চট্টগ্রাম থেকে আবুধাবি রুটে সপ্তাহে দুটি এবং চট্টগ্রাম-দুবাই রুটে সপ্তাহে তিনটি ফ্লাইট চালাচ্ছে বাংলাদেশ বিমান। একমাত্র বাংলাদেশ বিমানই সবচেয়ে বড় ও বিলাসবহুল ফ্লাইট দিয়ে যাত্রী পরিবহন করছে এই রুটে।

এই রুটে এত ফ্লাইটের পরও বিমানভাড়া কমেনি কেন জানতে চাইলে ফ্লাই দুবাইয়ের এক কর্মকর্তা বলেছেন, চট্টগ্রাম-দুবাই যাওয়ার ভাড়া জানুয়ারিতেও এক লাখ টাকার ভাড়া এখন ৫০ হাজারে নেমেছে। এর চেয়ে আর কত কমবে?

হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন চট্টগ্রামের সভাপতি শাহ আলম বলেন, ‘বেশি ফ্লাইট পরিচালনা করায় বিমানসংস্থাগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা বেড়েছে। আমরা এখন ৫০ হাজার টাকার মধ্যে যাওয়ার ভাড়া পাচ্ছি। তবে করোনার আগের সময়ের মতো ভাড়া এখনো হয়নি। বিমানসংস্থাগুলো চাইলে এই ভাড়া আরো নাগালের মধ্যে নিয়ে আসতে পারে।’

YouTube video

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!