খুলে দেয়া হল ৩০০০ বছরের প্রাচীন রাজপথ

মিশরের ৩,০০০ বছরের পুরনো একটি রাজপথ আবার চালু করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে সমৃদ্ধ লুক্সরের কার্নাক মন্দিরে জমকালো অনুষ্ঠানে মিশরের রাষ্ট্রপতি আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি নতুন করে উদ্ধার করা পথটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোথন করেন।

দক্ষিণ নীল নদের শহরের কেন্দ্রস্থলে প্রাচীন যুগের কার্নাক এবং লুক্সরের মন্দিরের সাথে সংযোগকারী ‘রামস সড়ক’ নামের বেলেপাথর-পাকা পথটির দুপাশে শত শত রাম-মাথাযুক্ত স্ফিংস মূর্তি রয়েছে। রাম হল প্রাচীন মিশরীয় দেবতা আমুনের মূর্ত প্রতীক।

প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তাটি প্রাচীন মিশরীয় পুরাণে “ঈশ্বরের পথ” নামে নামকরণ করা হয়েছে। এই রাজপথের সারিবদ্ধভাবে মরুভূমির বালির নীচে বহু শতাব্দী ধরে হারিয়ে যাওয়া মূর্তিগুলিসহ ফারাও যুগের সড়কটি খুঁজে বের করতে মিশরীয় প্রত্নতত্ববিদদের সময় লেগেছে কয়েক দশক।

Travelion – Mobile

১০০ হেক্টরের বেশি এলাকা জুড়ে স্থাপতি কার্নাক মন্দিরটি প্রায় ২,০০০ থেকে ৪,০০০ বছর আগে নির্মিত হয়েছিল এবং এটি একটি প্রাচীন সূর্য দেবতা আমুন-রাকে উত্সর্গীকৃত। অন্যদিকে লুক্সর মন্দিরটি প্রায় ৩৪০০ বছর আগে আমেনহোটেপ ৩য় দ্বারা নির্মিত হয়েছিল এবং এটি প্রাচীন মিশরীয় থেকে খ্রিস্টান কপ্ট এবং পরবর্তীতে মুসলমানদের অবিচ্ছিন্ন ধর্মীয় উপাসনার স্থান হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে।

মিশরের প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে সমৃদ্ধ লুক্সরের কার্নাক মন্দিরে জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে থুলে দেয়া হয় ৩,০০০ বছরের পুরনো রাজপথ।
‘মিশরের প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে সমৃদ্ধ লুক্সরের কার্নাক মন্দিরে জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে থুলে দেয়া হয় ৩,০০০ বছরের পুরনো রাজপথ।

ফারাওদের সময়ে প্রতি বছর এই সড়ক ধরে যে ধরনের শোভাযাত্রা বের হতো, উদ্বোধনীর দিনে সেরকম আয়োজন করা হয়েছিল। এই অনুষ্ঠানে যে সঙ্গীত ব্যবহার করা হয় তার বাণী নেয়া হয়েছিল মন্দিরের দেয়ালের হায়ারোগ্লিফিকসে লেখা নানা গল্প থেকে।

মিশরের পর্যটন ও পুরাকীর্তি মন্ত্রক আরব বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশটিকে “একটি উন্মুক্ত এয়ার মিউজিয়াম” হিসাবে খ্যাতি বাড়িয়ে পর্যটকদের জন্য একটি অদম্য গন্তব্যে পরিণত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। মিশর সরকার আশা করছে এই নতুন দর্শনীয় স্থান মহামারিতে মুখ থুবড়ে পড়া পর্যটন শিল্পকে চাঙ্গা করতে সাহায্য করবে।

মিশরের পর্যটন খাত দুই মিলিয়ন লোককে নিয়োগ করে এবং দেশটির মোট জিডিপর ১০ শতাংশেরও বেশি যোগ করে। কিন্তু ২০১১ সালের বিপ্লব, একাধিক সন্ত্রাসী হামলা এবং সম্প্রতি মহামারী পরবর্তী রাজনৈতিক অস্থিরতা থেকে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে পর্যটন খাতেথ্বস নামে।

এর আগে গত এপ্রিল মাসে, কায়রোর রাস্তায় ২১ টি কামানের স্যালুটসহ শোভাযাত্রার মাধ্যমে ২২টি ফারাওদের মমি করা দেহাবশেষ নিয়ে যাওয়া হয়েছিল মিশরীয় সভ্যতার সদ্য খোলা জাতীয় জাদুঘরে। আগামী মাসে কায়রোতে গিজা পিরামিডের কাছে আরেকটি নতুন শোকেস, গ্র্যান্ড মিশরীয় যাদুঘর উদ্বোধন হতে চলেছে৷

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!