কুয়েতে করোনা রোধে ঋণখেলাপি কয়েদিদের মুক্তি!

জেলাখানায় গাদাগাদি করে থাকে কয়েদিরা। তাই খুব সহজেই এখানে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা কিছুটা বেশি আছে। এমন আশঙ্কা থেকেই বেশ কিছু ঋণখেলাপি কয়েদিদের ছেড়ে দিয়েছে গাল্ফ অঞ্চলের দেশ কুয়েত।

ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রোধে সতর্কতামূলক পদক্ষেপের অংশ হিসেবে সংশোধনগার কর্তৃপক্ষ জেলখানাগুলোতে বিচার বিভাগের নির্দেশনায় এসব কয়েদিদের এমন সুযোগ দেয়।

কুয়েতি দৈনিক আল-আনবা ডেইলির সূত্রমতে, দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের গণজমায়েত রোধের প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরবর্তী নোটিশ না দেওয়া পর্যন্ত অর্থিক দুর্নীতি ও ঋণ সংক্রান্ত বিষয়ে সরকারের দায়ের করা মামলার আসামীদের দিক থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নজর সরিয়ে রাখার নির্দেশও দেয়া হয়েছে।

Travelion – Mobile

সিভিল এক্সিকিউশন প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দেওয়ানি ও আর্থিক অপরাধ-এর সঙ্গে জড়িত থাকার জেরে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া কিছু ব্যক্তির ফাইলপত্র খতিয়ে দেখে তাঁদের ঋণ পরিশোধে আরো সময় দেয়ার নির্দেশনাও দিয়েছে সরকার।

এদিকে কারাবন্দীদের মধ্যে করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে গৃহীত পদক্ষেপ সন্তোষজনক কিনা তা দেখতে কেন্দ্রীয় কারাগার পরিদর্শনে যান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিনিধিদল।

কারাগার কর্তৃপক্ষ থেকে প্রতিনিধি দলকে জানানো হয়, নতুন কয়েদিদের কাছ থেকে পুরনোদের সুরক্ষায় সকলকেই ১৪ দিন বাধ্যতামূলক কোয়রান্টাইনে রাখা হয়েছে।

কুয়েতের আরেক দৈনিক আল-কাবাস ডেইলি জানিয়েছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেশটির ৪,৫০০ বন্দিকে পরীক্ষার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। বিদেশ থেকে আধুনিক র্যা পিড কিট এলেই এই পরীক্ষা করা হবে বলে জানান সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের কর্মকর্তারা।

এদিকে কুয়েতি সোসাইটি ফর হিউম্যান রাইটস (কেএসএইচআর) এর স্বাস্থ্য কমিটির প্রধান ডাঃ মনাল বোহিমাদ কেন্দ্রীয় কারাগার পরির্দশন শেষে নিশ্চিত করেছেন যে বন্দী ও রক্ষীদের মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কেউ নেই।

তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে শুরু হওয়া সচেতনতামূলক কর্মসূচী সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রচেষ্টা পর্যালোচনা করা হয়েছিল এবং আরবী, ইংরেজি, উর্দু, বাংলা, হিন্দি এবং তামিলসহ বিভিন্ন ভাষায় কর্মী এবং বন্দীদের জন্য সচেতনতা আয়োজন করা হয়েছিল।

ডাঃ মাহমুদ আল খালদী জেল সেক্টরের সুরক্ষা ব্যবস্থাপনা দলকে সাধারণভাবে সংক্রামক রোগ, উদীয়মান করোনাভাইরাস এবং এর বিশেষত চিকিত্সা ও সাবধানতামূলক ব্যবস্থা তুলে ধরে বক্তৃতা দিয়েছিলেন।

ডেইলি আল-আনবার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কারাগারে জীবাণুমুক্তকরণ এবং পরিষ্কারের উপকরণ, কােয়ারেন্টিন কক্ষ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সেবা প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কারাবন্দীদের সুরক্ষায় সব ধরনের পরিদর্শকের আগমন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

২৭ ফেব্রুয়ারির পর কারাগারে আসা নতুন কয়েদিদের বিচ্ছিন্ন করে রাখতে বেশ কিছু সতর্কতামূলক ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে কারাগার কর্তৃপক্ষ। এক্ষেত্রে নতুনদের রাখা হয়েছে আলাদা ভবনে। তাদের ওই ভবনে ঢোকানোর আগে প্রত্যেককেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে।

প্রতিনিধিদলটি সেই বিল্ডিংও পরিদর্শন করেছিলেন যেখানে সন্দেহভাজনদের কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে,বিশেষত যাদের শ্বাসকষ্টের লক্ষণ দেখা গিয়েছিল।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!