কিভাবে হবেন বৈমানিক

আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন

রোমাঞ্চকর নীল আকাশের সাদা মেঘের ভেলার মাঝে প্লেন চালিয়ে পাইলট হওয়ার স্বপ্নে যারা বিভোর তাদের জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ ! পাইলট হতে হলে কী কী যোগ্যতা লাগে, শিক্ষাগত গ্রাজুয়েশান ও চাকরি ক্ষেত্র নিয়ে যাবতীয় সব কিছু আজ তুলে ধরবো তোমাদের জন্য: পাইলট দুই ধরনের হয়ে থাকে, ১) সামরিক পাইলট : যারা বাংলাদেশ নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী ও […]

রোমাঞ্চকর নীল আকাশের সাদা মেঘের ভেলার মাঝে প্লেন চালিয়ে পাইলট হওয়ার স্বপ্নে যারা বিভোর তাদের জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ !

পাইলট হতে হলে কী কী যোগ্যতা লাগে, শিক্ষাগত গ্রাজুয়েশান ও চাকরি ক্ষেত্র নিয়ে যাবতীয় সব কিছু আজ তুলে ধরবো তোমাদের জন্য:
পাইলট দুই ধরনের হয়ে থাকে,
১) সামরিক পাইলট : যারা বাংলাদেশ নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী ও সেনাবাহিনীতে পাইলট হিসেবে কর্তব্যরত থাকেন। সামরিক পাইলটকে জি ডি পাইলট অথবা জি ডিপি (জেনারেল ডিউটি পাইলট) বলা হয়। এইচএসসি পাশের পর পরই আবেদন করতে হয়।

সাধারণত বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে জি ডিপি পোস্টের জন্য নিয়োগ দেয়া হয়। সেনা আর নৌবাহিনীতে পাইলট হিসেবে আবেদন প্রাথমিকভাবে নেই। রিকোয়ারমেন্টস অনুযায়ী তাদেরকে ডাকা হয়। এক্ষেত্রে তারা ক্যাডেট থেকেই পাইলট হয় না। ভিন্ন ব্রাঞ্চে কমিশনিংয়ের পর পাইলট হয় বিমান বাহিনীতে ট্রেনিং নিয়ে বা ফ্লাইং ক্লাবে ট্রেনিং নিয়ে৷

Travelion – Mobile

১০ মিনিট স্কুলের পক্ষ থেকে এ বছর বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি-সহায়ক অনলাইন লাইভ এডমিশন কোচিংয়ের আয়োজন করা হচ্ছে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে!
চলো যাই লাইভ ক্লাসে!

শিক্ষাগত যোগ্যতা: শিক্ষার্থীর এইচএসসির ও এসএসসির মাঝে যে কোন একটিতে জিপিএ ৫. ০০ অন্যটিতে ৪.৫০ অথবা এর উপরে থাকতে হবে৷ (গণিত থাকতে হবে আবশ্যিক / ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে। ইংরেজী মাধ্যম শিক্ষার্থীদের জন্য এ লেভেলে পদার্থবিজ্ঞান ও গণিত থাকা আবশ্যক এবং দুটি বিষয়ে নূন্যতম ডি গ্রেড থাকতে হবে।
বয়স: ১৬ বছর ৬ মাস থেকে ২১ বছর সময়সীমা।
* প্রার্থীকে বাংলাদেশী নাগরিক হতে হবে।
* শারীরিক যোগ্যতা / ফিটনেস:
এটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক পাইলটদের জন্য৷
উচ্চতা: পুরুষ – ১৬২.৫৬ সে.মি ( ৬৪ ইঞ্চি), নারী ১৫৭. ৪৮ সে.মি (৬২ ইঞ্চি) , কমপক্ষে।
বক্ষ: পুরুষ -৩২”, নারী – ২৮ ”
বক্ষ প্রসারন: ২” ( ৫.০৮ সেন্টিমিটার)
ওজন: বয়স ও উচ্চতা অনুযায়ী
চক্ষু দক্ষতা: ৬/৬, স্বাভাবিক দৃষ্টিক্ষমতা সম্পন্ন।

বাছাই প্রক্রিয়া: এক্ষেত্রে ৬ টি ধাপে বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
১) প্রাথমিক লিখিত পরীক্ষা ( সাধারণ জ্ঞান, আইকিউ ও ইংরেজীর উপর প্রশ্ন থাকে)
২) প্রাইমারী মেডিকেল ( প্রাথমিক স্বাস্থ্যপরীক্ষা)
৩) প্রাইমারী ইন্টারভিউ
৪) ISSB board for 4 days
৫) ফাইনাল মেডিকেল টেস্ট
৬) ফাইনাল সিলেকশন ( এয়ার ফোর্স হেড কোয়ার্টারে ইন্টারভিউ)

ট্রেনিং ও চাকরি: নতুন নির্বাচিত হওয়া ক্যাডেট পাইলটরা জয়েন করার পরে, তাদের তিন বছরের ট্রেনিং পিরিয়ড সম্পন্ন করতে হয়, এরপর তারা কমিশনের জন্য নির্বাচিত হন। প্রথম তিন মাস বাংলাদেশ মিলিটারী একাডেমিতে ও পরে বাকি ট্রেনিং সম্পন্ন হয় বাংলাদেশ এয়ার ফোর্স একাডেমিতে। একাডেমি যশোর জেলার, মতিউর রহমান এয়ার ফোর্স বেসে অবস্থিত। একাডেমিতে ক্যাডেট পাইলটদের ৪ ধাপে ট্রেনিং সম্পন্ন হয়। প্রথম দুই টার্মে ক্যাডেটরা জেনারেল সার্ভিস ট্রেনিং পান ও সার্ভিসের সাথে সম্পৃক্ত সকল বিষয়ে পড়াশুনা করেন। তৃতীয় ও চতুর্থ ধাপে পাইলটের ১২০ ঘণ্টার বেসিক ফ্লাইং ট্রেনিং কমপ্লিট করা লাগে এবং আরেক ধাপে ক্যাডেট পাইলটরা BSC degree in aeronautic, ইঞ্জিনিয়ারিং অথবা যে কোন ব্যাচেলর ডিগ্রিতে অধ্যয়ন করার সুযোগ পান BUP ( Bangladesh university of professionals) এর অধীনে। তিন বছরের ট্রেনিং সফলভাবে সম্পন্ন করার পর পাইলট ক্যাডেটরা এয়ার ফোর্সে কাজ করা শুরু করেন।

এয়ার ফোর্সের অফিসার র‍্যাংকিং:
Air Chief marshal > Air marshal > Air Vice- marshal > Air commodore > Group captain > Wing commander > Squadron leader > Flight lieutenant > Flying officer
এক এক র‍্যাংকে উন্নিত হওয়ার সাথে সাথে বেতন ভাতা ও সুযোগ সুবিধা বাড়বে। এখানে এয়ারফোর্সের বিস্তারিত জানালাম। সেনা ও নৌবাহিনীর ব্যপারে বিস্তারিত আরও জানতে পারো আর্মি ও নেভী ওয়েবসাইটে। বাংলাদেশ আর্মি: http// joinbangladesharmy.army.mil.bd
বাংলাদেশ নেভী: https://www.joinnavy.mil.bd

বেসামরিক পাইলট :
বাংলাদেশ বিমানসহ যেকোনো বিমানের পাইলট হতে চাইলে এইচএসসি পর্যায়ে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পদার্থ, গণিতসহ ন্যূনতম জিপিএ ২.৫০ পেতে হবে। বয়স ন্যূনতম ১৬ বছর এবং শারীরিকভাবে ফিট হতে হবে। এ ছাড়া ইংরেজি বলা ও লেখায় দক্ষ হতে হবে। যারা স্নাতক শ্রেণীতে পড়ছেন বা পাস করেছেন, তারাও পাইলট কোর্সে ভর্তির আবেদন করতে পারবেন। এইচএসসির পর ভর্তি হতে হবে দেশের বা বাইরের কোনো ফ্লাইং ট্রেনিং একাডেমিতে।

প্রথমত, গ্রাউন্ড ও ফ্লাইং প্রশিক্ষণ শেষ করে প্রাইভেট পাইলট লাইসেন্সের (পিপিএল) জন্য আবেদন করতে হয়। বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচলকারী কর্তৃপক্ষের (ক্যাব) নিয়ম অনুসারে লাইসেন্স পেতে কমপক্ষে ৪০ ঘণ্টা ফ্লাইং করতে হয়। ন্যূনতম বয়স হতে হয় ১৭ বছর। পিপিএল পাওয়ার পর আবেদন করতে হয় কমার্শিয়াল পাইলট লাইসেন্সের (সিপিএল) জন্য। এ ক্ষেত্রে ফ্লাইং করতে হয় ১৫০ ঘণ্টা। সিপিএলের জন্য ন্যূনতম বয়স হতে হবে ১৮ বছর। এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে দেশ-বিদেশের এয়ারলাইন্সে ফার্স্ট অফিসার বা কো-পাইলট হিসেবে আবেদন করা যাবে।

নির্বাচিত হওয়ার পর যে ফ্লাইং স্কুল / একাডেমিতে আপনি ভর্তি হবেন তাদের অধীনে অধ্যায়নরত অবস্থায় আপনি শিক্ষানবিশ পাইলট হিসেবে গ্রাউন্ড ও ফ্লাইং লাইসেন্স নিতে পারবেন। শিক্ষানবিশ পাইলটদের দক্ষ পাইলটে পরিণত করার জন্য বাংলাদেশে আছে বেশ কিছু ফ্লাইং একাডেমি। এছাড়া কেউ চাইলে বিদেশ থেকেও পড়ে আসতে পারেন যে কোন ইন্টারন্যাশনাল ফ্লাইং স্কুল থেকে৷

ফ্লাইং একাডেমি:
১) Bangladesh Flying Academy: ১৯৪৮ সাল থেকে পাইলট বানানোর কাজটি করে আসছে এ কোম্পানী।
ঢাকা অফিস: হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, কুর্মিটোলা, ঢাকা। রাজশাহী অফিস: শাহ মাখদুম এয়ারপোর্ট, রাজশাহী।
২) Arirang flying Scool
৩) GAlaxy flying academy limited, Level #12, house #44, road #1, sector #3, uttara model town, dhaka 1230

ভর্তি পরীক্ষা :
পাইলট কোর্সে ভর্তি হতে সবার আগে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। এ পরীক্ষা হয় দু’টি ধাপে- মৌখিক ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা। মৌখিক পরীক্ষায় সাধারণত বিজ্ঞান ও সাধারণ জ্ঞানের ওপর প্রশ্ন করা হয়। এটি সংশ্লিষ্ট একাডেমি নিয়ে থাকে। আর স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয় সিভিল এভিয়েশন অনুমোদিত ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে।প্রায় সবগুলো একাডেমিতে ভর্তি প্রক্রিয়া ও পড়াশোনা প্রক্রিয়া একই। সিভিল এভিয়েশন অথোরিটি এর অধীনে পাশ করতে হয় একজন শিক্ষানবিশ পাইলটকে। অর্জন করতে হয় প্রাইভেট লাইসেন্স ও কমার্শিয়াল লাইসেন্স। পড়াশোনার মেয়াদ ২.৫ বছর, তবে এক্ষেত্রে খরচটা শিক্ষার্থীর নিজের বহন করতে হয়। পুরা পড়াশোনা ও ট্রেনিং শেষ হতে ২৫- ৩০ লাখ বাংলাদেশী টাকা খরচ।

লাইসেন্স পাবার প্রক্রিয়া:
* প্রাইভেট পাইলট লাইসেন্স ( PPL) –
-বয়স কমপক্ষে ১৭ বছর হতে হবে।
– ডাক্তারি পরীক্ষা, ক্লাস ২ মেডিকেল স্টাটাস কোয়ালিফাই করতে হবে প্রত্যেক বছরে।
– অধ্যয়নরত গ্রাউন্ড সাবজেক্টে CAAB এর পরীক্ষায় পাশ করতে হবে।
– flying qualify, CAAB এর পরীক্ষকের অধীনে ৫০ ঘন্টা ফ্লাই করার অভিজ্ঞতা অর্জন। ফ্লাইং পরীক্ষা পাশ করলে তবেই PPL (private pilot licence) লাইসেন্স ইস্যু হয়।
কোনো সমস্যায় আটকে আছো? প্রশ্ন করার মত কাউকে খুঁজে পাচ্ছ না? যেকোনো প্রশ্নের উত্তর পেতে চলে যাও ১০ মিনিট স্কুল ফোরামে!

আমার একটি প্রশ্ন আছে
* কমার্শিয়াল পাইলট লাইসেন্স ( CPL) –
– কমপক্ষে ১৮ বছর বয়সী হতে হবে।
– ডাক্তারি পরীক্ষা, ক্লাস ১ মেডিকেল টেস্ট কোয়ালিফাই।
– CAAB এর অধীনে অধ্যয়নরত গ্রাউন্ড সাবজেক্টে পাশ করা বাধ্যতামূলক।
-CAAB এর পরীক্ষকের কাছে ফ্লাইং পরীক্ষা কোয়ালিফাই করতে হবে। ২০০ ঘনটার মাঝে ১৫০ ঘন্টা সোলো ফ্লাইং কমপ্লিট করতে হবে। তবেই মিলবে CPL ( Commercial pilot licence) . এই কমার্শিয়াল লাইসেন্স পাওয়ার পর ও CAAB এর অধীনে যাবতীয় পরীক্ষা পাশের পর একজন পাইলট তৈরি এয়ারলাইন্সে কাজ করার জন্য। বাংলাদেশে যেসব এয়ারলাইন্স যাত্রী পরিবহনের কাজে জড়িত তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ
Biman Bangladesh
Regent airways
US-bangla Airlines
Novo air
এছাড়াও রয়েছে, মালামাল পরিবহনের জন্য কার্গো এয়ারলাইন্স।

এসব এয়ারলাইনস কোম্পানীর ওয়েবসাইটে নিয়মিত খোঁজ রাখতে হয় ও চাকরির জন্য সার্কুলার দিলে এপ্লাই করতে হয়। একটি বিমানে সাধারণত পাইলট থাকে দুইজন, first officer (F_O) & captain. আর নতুন সদ্য যোগদানকারী পাইলটদের বলা হয় ক্যাডেট পাইলট।

প্রথমে ক্যাডেট পদ থেকে 1st officer ও পরে captain পদে উন্নীত হতে হতে স্যালারী ও সুযোগ-সুবিধাও বৃদ্ধি পায়। একজন বেসামরিক বিমানের পাইলটের মাসিক আয় ১লাখ ২৫ হাজার টাকা থেকে শুরু হয় বাংলাদেশী টাকায়। সময়, অভিজ্ঞতার সাথে বেতন ও সুযোগ সুবিধা বাড়ে। অভিজ্ঞতা বাড়লে অনেক পাইলট বিদেশের বিভিন্ন এয়ারলাইন্সে চাকরি নিতে পারেন।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!