করোনাভাইরাস : চীনে এ্যাসেম্বলিং কারখানা বন্ধ করল এয়ারবাস
চীনের তিয়ানজিনে অ্যাসেম্বলিং কারখানা (চূড়ান্ত অ্যাসেম্বলিং লাইন) সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে উড়োজাহাজ নির্মাণের বিশ্বখ্যাত সংস্থা এয়ারবাস। কারখানাটি আবার চালুর কোনও তারিখ দেয়নি সংস্থাটি ।
চীনে চলমান করোনভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার জন্য ক্রমাগত আশঙ্কায় এমন সিদ্ধান্ত ইউরোপভিত্তিক উড়োজাহাজ নির্মাণ সংস্থাটির। কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি কারখানায় প্রয়োজনীয় উৎপাদন সামগ্রীর সরবরাহে স্বল্পতার অন্যতম কারণ বলে জানিয়েছে এয়ারবাস।
করোনাভাইরাসের জেরে বিশ্বের প্রায় সব কয়টি বিমানসংস্থা যখন একে একে ফ্লাইট পরিচালনা স্থগিত করছে- চীনের এভিয়েশন শিল্পে ধ্বস নামছে, তখনই এল এয়ারবাসের এই ঘোষণা। মঙ্গলবার অনেকটা হুট করেই এমন ঘোষণা দিয়ে বসে সংস্থাটি।
২০০৮ এ চালু করা তিয়ানজিনের চূড়ান্ত অ্যাসেম্বলিং লাইনটিতে এয়ারবাসের সর্বাধিক বিক্রিত সিঙ্গেল আইল বা সরু বড়ির এ ৩২০ পরিবারের উড়োজাহাজ তৈরি করা হয়। ৫০০ জনের বেশি কর্মি এই কারখানায় কাজ করেন ।
বিবৃতিতে এয়ারবাস জানিয়েছে,”করোনাভাইরাস পরিস্থিতির বিষয়টি নিয়মিতভাবে নিবিড় পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে” এবং নিয়মিতভাবে এই বিষয়ে তাদের কর্মচারীদের এ সম্পর্কে সব আপডেট জানানো হচ্ছে।
কর্মচারিদের বাড়ি থেকে কাজ করার জন্য চীন সরকারের নির্দেশনা এয়ারবাস চীন শাখা পর্যবেক্ষণ করছে। এক্ষেত্রে তারা কর্মচারিদের আইটি সরঞ্জাম দিয়ে সহায়তা করছে যাতে তারা তিয়ানজিন বা অন্য যে কোন খান থেকে সম্ভব হলে কারখানায় না গিয়েও কাজের সাথে যুক্ত থাকতে পারবে।
তবে এই কাজ গুটিয়ে নেয়ার পরিস্থিতি এয়ারবাসের এ৩২০ পারিবারের উড়োজাহাজ উৎপাদনকে প্রভাবিত করতে পারে।
ফ্রান্সসহ বিশ্বের পাঁচটি দেশে নয়টি স্থানে এয়ারবাসের ফাইনাল অ্যাসেম্বলিং লাইন (FALs) রয়েছে যেখানে সরু বডি এবং প্রশস্ত-বডি উড়োজাহাজ সম্পূর্ণ পরিসীমায় উৎপাদন করা হয়। এর মধ্যে চারটি হ’ল এ৩২০ পারিবারের জন্য নির্ধারিত।
এর অন্যতম একটি কারখানা তিয়ানজিনের চূড়ান্ত অ্যাসেম্বলিং লাইনটিতে প্রতি মাসে কমপক্ষে ছয়টি উড়োজাহাজ তৈরি হয়, যা বিশ্বব্যাপী উৎপাদনের প্রায় ১০%।
সম্প্রতি এয়ারবাস তিয়ানজিন কারখানায় উৎপাদন বাড়িয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল ২০২১ সালে সবগুলো কারখানা থেকে মাসে মোট ৬৩ টি উড়োজাহাজ উত্পাদন করবে তারা।
এছাড়াও এয়ারবাস তার তিয়ানজিন শাখার আওতায় এ ৩৩০ এর ‘সমাপ্তি ও বিতরণ কেন্দ্র’ (কমপ্লিশশন ও ডেলিভারি সেন্টার) পরিচালনা করে, যেটির সক্ষমতা আরো বাড়িয়ে এ৩৫০ পরিবারের উড়োজাহাজকেও এর আওতায় আনার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
চীনের এয়ারবাস কারখানাটি মূলত ইউরোপীয় সংস্থার সাথে তিয়ানজিন মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল এবং চীনের এভিয়েশন শিল্প কর্পোরেশনের একটি কনসোর্টিয়ামের মধ্যে জয়েন ভেঞ্চার।
এক বিবৃতিতে এয়ারবাস জানায়, করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্টি হওয়া ভ্রমণ প্রতিবন্ধকতার কারণে কিছু কৌশলগত চ্যালেঞ্জ সামনে চলে এসেছে।
সংস্থার এ ৩২০ পারিবারের বাকি অ্যাসেম্বলিং কারখানাগুলো টুলস (ফ্রান্স), হামবুর্গ (জার্মানি) এবং মোবাইল (আলাবামা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) এ অবস্থিত। হামবুর্গ বর্তমানে এ ৩২০ পারিবারের উড়োজাহাজের সবচেয়ে বড় অংশ নির্মাণ করছে।