করোনাভাইরাসে সংকটে বিমানসংস্থা, কর্মীদের বিনা বেতনে ছুটি!
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের প্রেক্ষিতে সংকট মোকাবেলার পদক্ষেপ হিসেবে হংকংয়ের জাতীয় বিমানসংস্থা ক্যাথে প্যাসিফিকের কর্মীদের তিন সপ্তাহের বিনা বেতনে ছুটি নিতে হবে।
আগামী মার্চ থেকে জুনের মধ্যে এই অবৈতনিক ছুটি সংস্থাটির পাইলট, কেবিনক্রুসহ ২৭ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারির সবাইকে পালাক্রমে ভোগ করতে হবে ।
বিমানসংস্থাটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) অগাস্টাস ট্যাং কর্মকর্তা-কর্মচারির উদ্দেশ্য এক ভিডিও বার্তায় এই ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, নতুন করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের ফলে ক্যাথে প্যাসিফিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছে।
তিনি জানান, হংকংয়ের কয়েক মাসের রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা ও বিক্ষোভের দ্বারা গত বছর সংকটে পড়েছিল ক্যাথে এবং এখন ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ফলে সংকট আরও বেড়েছে।
“আমি আশা করছি যে আমাদের প্রথম সারির কর্মচারী থেকে শুরু করে প্রবীণ নেতাদের আপনারা সবাই অংশ নেবেন এবং আমাদের বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় সহায়তা করবেন,” তিনি বলেছিলেন।
গত বছরের শেষ দিকে উহান শহরে প্রথম চিহ্নিত হওয়া করোনাভাইরাসটি চীনের চন্দ্র নববর্ষের ছুটিতেও ছড়িয়ে পড়েছে, যা আঞ্চলিক বিমান সংস্থাগুলো সবচেয়ে ব্যস্ত এবং আয়ের সময় ।
এর ফলে কয়েক হাজার আন্তর্জাতিক বিমানসংস্থা করোনার বিস্তার আটকাতে এবং যাত্রীদের নিরাপত্তায় চীনে ফ্লাইটগুলো হ্রাস বা স্থগিত করেছে।
ক্যাথে প্যাসিফিক দুই মাসের জন্য বিশ্বব্যাপী ৩০ শতাংশ এবং চীনের মূল ভূখণ্ডে ৯০ শতাংশ উড়ান স্থগিতকরেছে।
ট্যাং সতর্ক করে দিয়ে বলেন, “ভাইরাসটির কারণে সবচেয়ে কঠিন একটি চীনা নববর্ষের ছুটি অনুভবের অভিজ্ঞতা নিচ্ছে ক্যাথে প্যাসিফিক এবং আমরা জানি না এটি কত দিন স্থায়ী হবে। এ জাতীয় অনিশ্চিত পরিস্থিততে নগদ সংরক্ষণই হচ্ছে এখন আমাদের ব্যবসা রক্ষার চাবিকাঠি।”
তিনি সংকট মোকাবেলায় একাধিক পদক্ষেপের ঘোষণা দেন, যার মধ্যে অন্যতম কর্মীদের স্বেচ্ছায় বিনা বেতনের ছুটির আহবান।
“আমি বুঝতে পারি যে এটি শুনতে বেশ কঠিন এবং আমাদের আরও পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজন হতে পারে। তবে বিশেষ ছুটির পদক্ষেপটিকে সমর্থন করে আপনারা আমাদের প্রয়োজনের সময় সহায়তা করবেন”, তিনি কর্মীদের বলেছিলেন।
তিনি সরবরাহকারীদের তাদের পণ্যের মূল্য হ্রাস করার আহবান জানান এবং বলেন ক্যাথে প্যাসিফিক তার ক্ষমতায় স্বল্পমেয়াদী সমন্বয় করবে।
এর আগে ২০০৯ সালে বৈশ্বিক আর্থিক বিপর্যয়ের প্রেক্ষিতে ক্যাথে স্টাফকে বিনা বেতনের ছুটি নিতে বলে হয়েছিল । ট্যাং বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি এখন ঠিক ততটাই গুরুতর।’
হংকংয়ের অর্থনীতির বর্তমান মন্দার পেছনে রয়েছে, মার্কিন-চীন বাণিজ্য যুদ্ধের দ্বারা ক্ষত, বিক্ষোভ, এবং সাম্প্রপ্তিক করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে পর্যটন এবং বিনোদন শিল্পকে বিশেষত কঠোরভাবে প্রভাবিত করেছে।
১৯৪৬ সালে যাত্রা শুরু করা ক্যাথে প্যাসিফিক বিশ্বব্যাপী ৬০ টিরও বেশি দেশে ১৯০ টিরও বেশি গন্তব্যে যাত্রী ও কার্গো পরিষেবা দিচ্ছে। এয়ারবাস এ ৩৩০, এয়ারবাস এ ৩৫০ এবং বোয়িং ৭৭৭ নিয়ে ১৫২ টি উড়োজাহাজের বহর পরিচালনা করে।
ক্যাথের সম্পূর্ণ মালিকানাধীন সহায়ক সংস্থা ক্যাথে ড্রাগন এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে ৪৪ টি গন্তব্যে চলাচল করে ।
দুটি সংস্থাই বাংলাদেশে নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করে আসছে।