কক্সবাজারে সৈকতপাড়ে করোনা আইসোলেশন সেন্টার
পর্যটননগরী কক্সবাজারে আগামী শনিবার থেকে চালু হচ্ছে করোনাভাইরাস (কোভিড–১৯) রোগীদের ২০০ বেডের আইসোলেশন সেন্টার। সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টের লাগোয়া ১১ তলাবিশিষ্ট তারকা হোটেল ‘সি-প্রিন্সেস’কে বানানো সেন্টারে করোনাক্রান্তদের বিনামূল্যে থাকা-খাওয়া ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে ।
রোহিঙ্গা শিবিরে শরণার্থীদের মানবিক সেবায় নিয়োজিত জাতিসংঘের একাধিক দাতা সংস্থা, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাসহ সহায়তায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে২০০ বেডের এই আইসোলেশন সেন্টার গড়ে তোলা হয়েছে।
জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর প্রতিবেদনে বলা হয়, রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে চিকিৎসক, নার্স ও কর্মী জোগান দিচ্ছে জেলা সিভিল সার্জন অফিস। রোগীদের ওষুধ, খাবার, বেতন–ভাতাসহ আনুষঙ্গিক ব্যয় বহন করছে জাতিসংঘের একাধিক সংস্থাসহ বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা। জেলা প্রশাসন ও সিভিল সার্জন অফিস সমন্বিতভাবে আইসোলেশন সেন্টারের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
করোনা চিকিৎসার অন্যতম উপদান হলো নির্মল বাতাস। সমূদ্রের তীরের নির্মল বাতাস ফুসফুসে আঘাত হানা ভাইরাসটির বিরুদ্ধে লড়াই করতে অনেক শক্তি যোগাবে, সেই চিন্তা থেকেই করোনা রোগীদের জন্য এ রকম মনোরম পরিবেশ চিহ্নিত করেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন এবং তার উদ্যোগেই গড়ে ওঠে আইসোলেশন সেন্টারটি ।
হোটেলটির সব কক্ষ থেকে দেখা যায় পশ্চিম দিকে সমুদ্র এবং পূর্ব দিকের উঁচু পাহাড়ের সারি। সমুদ্রের উত্তাল ঢেউ, নির্মল হাওয়ার সঙ্গে সবুজের সমারোহের মধ্যে করোনা রোগীরা এখানে অবস্থান করবেন।
জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ দিন দিন বাড়ছে। হাসপাতাল-আইসোলেশন সেন্টারে গাদাগাদি অবস্থা, জায়গার সংকট। বহু করোনা রোগীর ঘরে থাকার জায়গা নেই। থাকলেও আলাদাভাবে থাকার পরিবেশ নেই। সবদিক বিবেচনা করে সৈকত তীরের নির্মল পরিবেশে তারকা হোটেলটি আইসোলেশনের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। আশা করছি রোগীরা চিকিৎসার পাশাপাশি মন ভরে শ্বাস নিতে পারবেন। শনিবার সকাল থেকে সেন্টারটি চালু হচ্ছে। করোনা রোগীরা বিনা ভাড়ায় হোটেলে থাকার সুযোগ পাচ্ছেন। তবে অসচ্ছল রোগীদের জন্য বিনা মূল্যে খাবারের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।’
সিভিল সার্জন মাহবুবুর রহমান বলেন, তুলনামূলকভাবে যেসব করোনা রোগীর উপসর্গ নেই, যাঁরা মোটামুটি সুস্থ, তাঁদের এই আইসোলেশন সেন্টারে রাখা হবে। আর যেসব রোগীর বাড়িতে আলাদা থাকার জায়গা বা ব্যবস্থা নেই বা সংক্রমণ ঝুঁকির কারণে বাড়িতে থাকতে চান না, তাঁদেরও এই হোটেলে রাখা হবে।
বুধবার (১৭ জুন) পর্যন্ত কক্সবাজারের করোনা শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৭৬৮ জনের। জেলায় এ পর্যন্ত মারা গেছেন ২৮ জন। সুস্থ হয়েছেন ৪৪৯ জন।