ওমানে সড়কে বাংলাদেশি দুই কিশোর ভাইয়ের মর্মান্তিক মৃত্যু

ওমানে সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশি দুই কিশোর ভাইয়ের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত হয়েছে তাদের সতীর্থ আরো দুই কিশোর। এর মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কজনক।

সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) গভীর রাতে রাজধানী মাস্কাট থেকে দুইশ কি.মি দূরে সেনাও শহরে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত দুই ভাই হলো— জারা (১৪) ও আদিব (১২)। তাদের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলায়। মা সিনাও হাসপাতালের প্রবাসী বাংলাদেশি চিকিৎসক ডা. তানিয়ার কর্মস্থলের সূত্রে সেখানে বসবাস করতো দুই ভাই। বাবা নাহিদুল ইসলাম তুহিন দেশে থাকেন।

বাংলাদেশ দূতাবাস ও কমিউনিটি সংগঠকদের ‘সূত্রে জানা যায়, সিনাওয়ের প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ী শেখ জসিমের ছেলে জিহাদ (১৪) পরিবারের অগোচরে বাবার গাড়ির চাবি নিয়ে রাত আনুমানিক ৩ টার দিকে ঘুরতে বের হয়। এ সময় সে, সহপাঠি বন্ধু দুই সহোদর জারা ও আদিব এবং রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ী মো. করিমের ছেলে আতিককে তাদের বাসা থেকে তুলে নেয়। মা (ডা. তানিয়া) হাসপাতালে রাতের ডিউটিতে খাকার সুযোগ নিয়ে নিহত দুই সহোদর বন্ধুদের সঙ্গী হয়ে ঘুরতে বের হয়েছিল।

দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ গাড়ি। ছবি : সংগৃহীত
দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ গাড়ি। ছবি : সংগৃহীত

রাস্তা ফাঁকা থাকায় অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালাচ্ছিল জিহাদ। এক পর্যায়ে সিনাও শহরের আদম রোডে গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুঘর্টনায় পড়ে। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায় পেছনে থাকা দুই ভাই জারা ও আদিব। গুরুতর আহত হয় চালকের আসনে থাকা জিহাদ ও তার পাশের আসনে বসা আতিক।

Travelion – Mobile

জিহাদকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানী মাস্কাটের খৌলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। আতিককে সিনাওয়ের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। নিহতদের দুই ভাইয়ের মরদেহ স্থানীয় মর্গে রাখা হয়েছে।

এরা সবাই বাংলাদেশ স্কুল সিনাও শিক্ষার্থী। চার বন্ধুর কারোই কাছে ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল না। মূলত বয়সের কারণে তারা কোনভাবেই সড়কে গাড়ি চালানোর উপযুক্ত ছিল না।

দুই কিশোর সন্তানের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোঁকে স্তব্দ পরিবার। মৃত্যুর খবর শুনে বাবা নাহিদুল ইসলাম তুহিন ওমানে রওনা হয়েছেন বলে জানা গেছে।

নিহত দুই ভাই হলো— জারা (১৪) ও আদিব (১২। ছবি : সংগৃহীত
নিহত দুই ভাই হলো— জারা (১৪) ও আদিব (১২। ছবি : সংগৃহীত

অন্যদিকে এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে পুরো ওমানের প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটিতে। বাংলাদেশ সোস্যাল ক্লাব ওমান, ওমান আওয়ামী লীগ, চট্টগ্রাম সমিতি ওমান, বঙ্গবন্ধু পরিষদসহ কমিউনিটি সংগঠনগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গভীর শোক জানিয়েছে। শোকবার্তায় তারা, নিহত দুই সহোদরের আত্মার মাগফেরাত কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয় এবং আহতদের সুস্থতা কামনা করা হয়।

কমিউনিটি সংগঠকরা, এমন বিয়োগান্ত ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না হয়, সে লক্ষ্য প্রবাসী কিশোর সন্তানদের প্রতি অভিভাবকদের আরো বেশি সতর্ক হওয়ার অনুরেধ জানান।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!