ওমানে করোনায় বাংলাদেশি দুই ভাইয়ের মৃত্যু

ওমানে করোনাক্রান্ত হয়ে মাত্র সাত ঘন্টা ব্যবধানে দুই সহোদরের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন চট্টগ্রামের রাউজানের চিকদার ইউনিয়নের আবদুল আলীর বাড়ির মরহুম সোলতান আহমদের পুত্র আবুল কালাম (৬২) ও আবুল কাশেম (৫২)।

পরিবারের সূত্রে জানা যায়, ছোট ভাই আবুল কাশেম বুধবার (২ জুন) রাত ১০:১৫ মিনিটে রাজধানী মাস্কাটের কোলা হসপিটালে এবং বড় ভাই আবুল কালাম আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৫:৫০ মিনিটে মাস্কাট রয়েল হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। উভয়ে করোনাক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন বলে তাদের পরিবার নিশ্চিত করেছে। দুই ভাই মাস্কাটের আমরাতে থাকতেন।

বড় ভাই আবুল কালাম দীর্ঘ ৩৮ বছর ধরে ওমানে বসবাস করে আসছেন। এখানে তার স্ত্রী-সন্তানরাও রয়েছেন। তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী। দুই পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের জনক ছিলেন তিনি। ছোট ভাই আবুল কাশেমের পরিবার দেশে থাকে। তিনি তিন কন্যা সন্তানের জনক। তিনিও পেশায় ব্যবসায়ী।

Travelion – Mobile

তাদের ভাতিজা আবু জাফর বলেন, আমরা যেখানে বসবাস করি এই এলাকায় কম বেশি সবাই করোনাক্রান্ত ছিলেন। ঈদের কয়েকদিন আগে থেকে তাদের মধ্যে করোনার লক্ষন দেখা যায়। প্রথমে প্রাথমিক চিকিৎসা, পরে অক্সিজেনের পরিমান কমে গেলে প্রাইভেট ক্লিনিকে, একদম শেষে সরকারী হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই তাদের দু’জনের মৃত্যু হলো।

আবুল কালামের বড় ছেলে সাইফুদ্দিন কামাল বলেন, ‘বাবা হাসপাতালে যেতে চাননি। তিনি বলেছেন, তোমাদের দেখে দেখে মরে যাবো। বাসায় থাকবো। আমরা জোর করে অনেকটা হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলাম। কি এক কঠিন বাস্তবতা আমরা হাসপাতালে দেখারও সুযোগ পাইনি। অবশেষে মৃত্যুর পর লাশটা দেখতে পাচ্ছি।’

বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাত ১০ টার দিকে দুইজনের নামাজে জানাযা শেষে মাস্কাটের আমরাত কবরস্থানে দাফন করা হবে।

এই দুই ভাইয়ের মৃত্যুতে ওমান প্রবাসী এবং এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সামাজিক যােগেযােগ মাধ্যমে কমিউনিটি সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে গভীর শোক এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানো হয়েছে।

চট্টগ্রাম সমিতি ওমানের সভাপতি ইয়াসিন চৌধুরী সিআইপি বলেন, ‘দুই ভাইয়ের একই দিনে প্রবাসে মাটিতে মৃত্যু খুবই হৃদয় বিদারক ঘটনা। তাদের এমন মৃত্যু হলো লাশগুলোও নিজ দেশে নেয়া যাবে না। এখানেই দাফন করতে হবে। আমরা কমিউনিটির পক্ষ থেকে তাদের দাফন-কাফনসহ নানাভাবে পাশে থেকে সহযোগিতা করে যাচ্ছি।’

উল্লেখ্য, করোনাক্রান্ত হয়ে মারা গেল আরব রাষ্ট্রগুলোতে করোনায় মারা যাওয়া মরদেহ দেশে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি নেই।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!