ওমানে করোনাকালে শুধু ১০০ রিয়ালেই বিয়ে!

বিয়ে একটি দম্পতির জীবনের সব থেকে আনন্দময় মুহূর্তগুলির মধ্যে একটি, তবে মরুর দেশ ওমানে এটি শুধু দু’জন মানুষকে নতুনভাবে জীবন শুরু করার জন্য নিয়ে আসে না, এটি দুটি পরিবার এবং কখনও কখনও দুটি গ্রামকে একত্রিত করে একটি শক্ত বন্ধনে আবদ্ধ করে তোলে আজীবনের জন্য। আর সালতানাতের ঐতিহ্যবাহী বিয়ে আয়োজন বেশ উৎসবমূখর হয়। শত শত অতিথি উপস্থিত হয়ে নাচ-গানে অনুষ্ঠানকে বর্ণিল করে তোলে।

চলমান কোভিড -১৯ মহামারিতে অনেকটা থেমে গেছে সামাজিক নানা অনুষ্ঠান, রীতি-নীতি আর আয়োজন। এই দুর্দিনে বিয়ের অনুষ্ঠান করাটাও বেশ খানিকটা অনিরাপদ ও ঝুঁকিপূর্ণ । তা ছাড়া রয়েছে জনসমাগমে কঠোর সরকারি নিষেধাজ্ঞা। তা সত্ত্বেও ওমানে অনেকেই বসছেন বিয়ের পিড়িতে, বাধছেন ঘর। তবে আগের যেকোন সময়ের চাইতে এইবার বিয়ের খরচটা হচ্ছে অনেক কম।

সাধারণত ওমানি ঐতিহ্যের অংশ হল কনে এবং বর উভয়ের পরিবারের অনেক সদস্যকে বিয়ের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তবে কোভিড-১৯ মহামারি যেন পাল্টে দিয়েছে বিয়ের এসব হিসেব নিকেশ। এখন যেসব বিয়ের অনুষ্ঠান হচ্ছে দেশটিতে তাতে শুধুমাত্র উপন্থিত থাকছে বর-কনের একান্ত ঘনিষ্ঠজনেরা।

Travelion – Mobile

সাধারণত ওমানি ঐতিহ্যের অংশ হল কনে এবং বর উভয়ের পরিবারের অনেক সদস্যকে বিয়ের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তবে কোভিড-১৯ মহামারি যেন পাল্টে দিয়েছে বিয়ের এসব হিসেব নিকেশ। এখন যেসব বিয়ের অনুষ্ঠান হচ্ছে দেশটিতে তাতে শুধুমাত্র উপন্থিত থাকছে বর-কনের একান্ত ঘনিষ্ঠজনেরা।

ওমানের এসব বিয়ে নিয়ে সম্প্রতি টাইমস অব ওমান একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, আগে যেখানে বিয়ের উৎসব এবং বিয়ের চুক্তিতে সাধারণত খরচ হত ৫,০০০ থেকে ১০,০০০ ওমানি রিয়াল সেখানে এখন প্রতিটি বিয়েতে গড়ে খরচ হচ্ছে মাত্র ১০০ ওমানি রিয়াল।

আদ দাখিলিয়ার প্রদেশের উইলিয়াত নিজওয়ার বাসিন্দা খালফান আল জাইদি। তিনি জানান, বিবাহ অনুষ্ঠানের সময় যে পদ্ধতি রীতি-নীতি পালন করা হত তাতে কোন পরিবর্তন হয়নি। কেবল বিয়েতে আমন্ত্রিত অতিথিদের সংখ্যাতে পরিবর্তন এসেছে।

তিনি পত্রিকাটিকে বলেন, “কোভিড-১৯ মহামারি ছড়িয়ে পড়ার আগে, গ্রামের মজলিসে বা মসজিদে বিয়ে অনুষ্ঠিত হত এবং এতে অনেক মানুষ উপস্থিত থাকতেন যাদের মধ্যে ছিলেন পরিবারের সদস্য, বন্ধু, প্রতিবেশীরা এমনকি অন্য প্রদেশের অতিথিরাও। কিন্তু এখন এই উপস্থিতি শুধুমাত্র পরিবারের সদস্যদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। সকল প্রশংসা আল্লাহর কারণ যে কোন পরিস্থিতিতে ইসলামের ঐতিহ্য মেনে চলার বিষয়টিকে তিনি সহজ করে দিয়েছে। ”

আল জাইদি গেল ১৩ জুন ২৫ বছর বয়স্ক হামজা বিন হামাদ বিন মোহাম্মদ আল জাইদি এবং তার বধূর বিয়েতে সভাপতিত্ব করেন। ঐতিহ্যবাহী ইসলামী রীতি অনুযায়ী ভাই-বোনদের উপস্থিতিতে বরের বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান হয়। সেখানে বরের এক ভাই ইসলামি রীতিতে বিয়েকে আনুষ্ঠানিক করার কাজটি করেন।

তিনি আরও বলেন, “বিয়ে করার অনুরোধ প্রথমে আনুষ্ঠানিকভাবে জমা দেওয়া হয় এবং পরে আমরা কনের বাড়িতে যাই তার সম্মতি গ্রহণ করতে।” তিনি স্মরণ করে বলেন, “বিয়ে করতে কোন বাধা বা অসুবিধা ছিল না। এটি বেশ নির্ঝঞ্জাটে অনুষ্ঠিত হয়, এবং নিজওয়াতের রীতিনীতি এবং ঐতিহ্য মেনে এটি সম্পন্ন করা হয়। সাবধানতা মেনে বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার পাশাপাশি অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধিও মানা হয়েছিল বলে জানান জাইদি।

এই ধরনের বিবাহ অনুষ্ঠানের একটি ইতিবাচক দিক হচ্ছে যে এটিতে বরের অতিরিক্ত খরচ হয়না এবং এই ধরণের পরিস্থিতিতে তাকে খরচ গুণতে হয় মোটে ১০০ ওমানি রিয়েল এর মত, জানান জাইদি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে উত্তর আল বাতনাহ প্রদেশের ওমানি নাগরিক জানান, এই পরিস্থিতিতে বিয়ের অনুষ্ঠানের কম খরচ হওয়ায় তরুণ দম্পতিদের জন্য তা খুবই উপকারী। তিনি বলেন, “আমি সম্প্রতি একটি ওমানি মেয়েকে বিয়ে করেছি, এবং অতিথিদের মধ্যে ছিল শুধুমাত্র কনের পরিবার এবং আমার নিজের পরিবার। সব মিলিয়ে, উভয় পরিবারের অতিথি সংখ্যা আট জনের বেশি হয়নি। ”

তিনি আরও বলেন, “এই বিয়ের অনুষ্ঠানে ১০০ রিয়ালের চেয়ে বেশি খরচও হয়নি। কেবল অতিথিদের জন্য খাদ্য, ওমানি হালওয়া এবং ফলের জন্য এটি খরচ হয়েছিল। আমি সেসব তরুণদের এখন বিয়ে করার উপদেশ দিচ্ছি যারা অনুষ্ঠান করে বিলাসী খরচ খরচ করতে অক্ষম। ”

আগে ওমানে একটি বিয়েতে অতিথিদের সরবরাহ করা খাবারের মধ্যে ছিল ষাঁড়, উট বা ভেড়ার মাংস দিয়ে ভাত। অনুষ্ঠানের সবচেয়ে বড় খরচ হত এই খাবারের পিছনে। কারণ অতিথিদের সংখ্যা প্রায় এক বা দুই হাজারের মত হত। এছাড়াও বর সঙ্গীত শিল্পী এবং ব্যান্ড দল ভাড়া করার জন্য অর্থ খরচ করত। সেই সাথে থাকত নানা ধরণের খাবার এবং মিষ্টি যেমন ওমানি হালওয়া, কেক এবং জুস।

করোনাময় বিশ্ব : কেমন আছেন পর্তুগালপ্রবাসী বাংলাদেশিরা (পর্ব ৩)

করোনাময় বিশ্ব : কেমন আছেন পর্তুগালপ্রবাসী বাংলাদেশিরা পর্ব ৩৩০ জুন, মঙ্গলবার – পর্তুগাল : বিকেল ৫ টা , ইউরোপ : সন্ধ্যা ৬ টা, বাংলাদেশ : রাত ১০ টা অতিথি: শাহ আলম কাজল- সভাপতি , বাংলাদেশ কমিউনিটি অব পোর্তো, পর্তুগালমহিন উদ্দিন- প্রবাসী ব্যবসায়ী, পোর্তো কমিউনিটি সংগঠক, পর্তুগালকফিল উদ্দিন ভূঞা- পোর্তো প্রবাসী , নতুন প্রজন্মের উদ্যেক্তাসঞ্চালনায় : আহমেদ তোফায়েল, সাংবাদিক ও উপস্থাপকসমন্বয়ক : রনি মোহাম্মদ, প্রবাসী সংবাদযোদ্ধা, পর্তুগাল

Posted by AkashJatra on Tuesday, June 30, 2020

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!