ওমানে করােনায় মৃত হিন্দু প্রবাসীর শেষকৃত্য করল মুসলিমরা
করোনার বিধ্বংসী আঘাতে আজ টালমাটাল পৃথিবী। আকাশে-বাতাসে কান্নার রোল। শোকের মাতম আজ সারাবিশ্বে। করোনার হিংস্র থাবা সবকিছুকেই যেন ম্লান করে দিয়েছে। যে রূপ ইতিপূর্বে কেউ আর কখনো দেখেনি বিশ্ব। যেখানে খবর হয় করোনা আতঙ্কে সন্তান তাঁর জন্মদাত্রী মাকে বনে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে, আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে কোনো আলেম জানাজা পড়াচ্ছেন না করোনায় মৃতের!
এই ধ্বংসস্তূপের মধ্যেও জেগে উঠেছে আরেক নতুন পৃথিবী। কান্নার শোরগোল ছাপিয়েও সারা বিশ্বে শোনা গেল মানবতার জয়গান। করোনা মহামারির ভয় আর আতঙ্কের মধ্যে আটকে থাকা মানুষকে কিছু অসামান্য মানবতার কাজ মনে করিয়ে দিচ্ছে এগিয়ে চলার মন্ত্র। মনে করিয়ে দেয় সবার উপরে মানবতা সত্য, মানুষ সত্য।
ওমানে এমনই এক করেনাকালের মানবতার গল্প আলোড়িত করেছে, যেখানে দেখা গেছে দেশটিতে করোনায় মারা যাওয়া এক হিন্দু প্রবাসীর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে মানবতার ফেরিওয়ালা একদল মুসলিমের সহায়তায়।
এরাবিয়ান স্টোরিজের প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, করোনায় মৃত ওই হিন্দুর শেষ বিদায় জানাতে এগিয়ে আসেনি তার কোন নিকট আত্মীয় বা স্বজন। বরং একজন হিন্দু প্রবাসীর শেষ বিদায়ের ধর্মীয় রীতিনীতি সম্পাদন করতে এগিয়ে আসেন ইন্ডিয়ান সোশ্যাল ক্লাবের (আইএসসি) নির্বাহী সদস্য সুহেল খান এবং তাঁর দল । যার মাধ্যমে তারা দেখিয়েছেন ভ্রাতৃত্ববোধ, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আর মানবতার অনন্য দৃষ্টান্ত ।
আইএসসি-র আওয়াধি উইং-এর সঞ্জিত কানোজিয়ার সঙ্গে সুহেল খান পুরো শেষকৃত্যটি সমন্বয় করেন। এ কাজে সাহায্য করেন তাদের বন্ধু জাফেরি, ওবায়দি এবং তামিম। ওমানের বন্দনগরী সোহারে পুরো হিন্দু আচার-রীতিতে এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে করোনায় মারা যাওয়া ওই প্রবাসীর মরদেহ দাহে সহায়তায় করেন তারা।
কররোনার এমন দুঃসময়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এভাবে তাদের এগিয়ে আসার ঘটনা বেশ সাড়া ফেলেছে। ঘটনাটি ওমানের বিভিন্ন ধর্মালম্বী ও সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্যের একটি চমৎকার উদাহরণ হিসেবে আলোচনায় এসেছে।
সুহেল খান এরাবিয়ান স্টোরিজকে বলেন “হিন্দু রীতিনীতি মেনেই আমরা তাঁর শেষকৃত্য করেছি। বড়ই কঠিন সময় পার করছি আমরা। তাই এখন মানুষের জন্য বাইরে এসে তাদের প্রিয়জনের শেষকৃত্যে অংশ নেয়াটাও অনেক কঠিন হয়ে গেছে। তবে আমি আমার দলকে তাদের আন্তরিক সমর্থনের অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।