ওমানের উন্নয়নে মুখ্য ভূমিকা রাখছে নারীরা

বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ মেয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন আর বৈষম্যের শিকার। তাদের পরিবার এ ব্যাপারে জানা স্বত্তেও অনেক ক্ষেত্রে নিরুপায়। যখন এই ধরনের চিত্র বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নারীদের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে তখন ওমানি নারীরা পুরুষের সাথে তালে তাল মিলিয়ে দেশের অগ্রগতি আর উন্নয়নে মুখ্য ভূমিকা পালন করছে। তারা বেশ আদর্শ অর্থনৈতিক পরিবেশে ওমানের কর্মক্ষেত্র, উৎপাদন খাত আর সম্ভবানাময় নানা ক্ষেত্রে রাখছে অনন্য ভূমিকা।

জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) থেকে প্রকাশিত স্টেট অফ ওয়ার্ল্ড পপুলেশন ২০২০ প্রতিবেদনে ওমা নি নারীদের অবস্থা এভাবেই মূল্যায়ন করা হয়েছে।

এই প্রতিবেদনের ব্যাপারে সংবাদ মাধ্যমে জিসিসির ইউএনএফপিএ’র উপ-আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রতিনিধি আসর আহমেদ তোসন বলেন, “সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ওমানে নারীরা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে, সরকারি কর্মকান্ডে এবং সামগ্রিকভাবে সামাজিক নানা ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছে ব্যাপক হারে। ”

Travelion – Mobile

তিনি বলেন, “রাজধানীর বাইরের কিশোরী মেয়েরাও ছেলে শিক্ষার্থীদের মত পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছে। ন্যাশনাল সেন্টার ফর স্ট্যাটিস্টিক্স এন্ড ইনফরমেশন (এনসিএসআই) এর তথ্য অনুযায়ী, ২০০৩ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত সরকারি খাতে কর্মরত ওমানি নারীর সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে। একইভাবে, গেল কয়েক বছরে নারীরা ব্যবসা এবং সরকারের অনেক শীর্ষ পদে আসীন হয়েছে।”

আরও পড়তে পারেন : বিশ্বের নিরাপদ দেশের তালিকায় পঞ্চম ওমান

ইউএনএফপিএ, জিসিসি দেশগুলো আর ওমানের সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয় পরিচালিত একটি গবেষণা অনুসারে, নারীর প্রতি বৈষম্য দূরীকরণ কমিটির (সিইডিএডব্লিউ) শর্তাবলীর সাথে এবং ওমানের নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার জাতীয় আইনের মধ্যে একটি সামঞ্জস্য পাওয়া গেছে।

তোসন নিশ্চিত করেন “এই জাতীয় আইন নারীদের বিয়ের জন্য একটি যথাযথ বয়স প্রণয়ন করেছে এবং নিজেদের পছন্দে স্বামী বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা দিয়েছে।”

ওমানি নারী এবং অর্থনীতি সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, “নারীরা এখানে কাজ, উৎপাদন এবং সুযোগের দিক থেকে পুরুষদের সমতুল্য অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধায় কাজ করে। ওমানি নারীরা মন্ত্রী পরিষদ এবং ওমান কাউন্সিলের সদস্যপদের মত ভূমিকা দিয়ে রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও বড় ভূমিকা রাখছেন। এই অনন্য অবস্থার সাথে নারীদের সামাজিক মর্যাদারও বিকাশ হচ্ছে। তাছাড়া শিক্ষিত শ্রমিক শ্রেণীর নারীদের ভূমিকাও সকল পর্যায়ে গুরুত্ব পেয়েছে এখানে। ”

তিনি আরো বলেন যে ওমানি নারীরা তাদের স্বপ্নের অনেক কিছুই অর্জন করেছে। তবে তাদের অবশ্যই সামাজিক প্রেক্ষাপটের সাথে পাল্লা দিয়ে নতুন চ্যালেঞ্চের মুখোমুখি হতে হবে বলে মতামত দেন তোসন।

ইউএনএফপিএ-এর নির্বাহী পরিচালক ড. নাতালিয়া কানেম বলেন, দশকের পর দশক ধরে অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে যে নীচ থেকে অর্থাৎ তৃণমূল পর্যায়ে পরিবর্তন আনলে তা কার্যকর ভূমিকা রাখে। আমাদের অবশ্যই সবসময় এক্ষেত্রে মূল কারণ, বিশেষ করে লিঙ্গ-পক্ষপাতদুষ্ট সমস্যাকে মোকাবেলা করা জরুরি।

আরও পড়তে পারেন : আরব বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের মধ্যে ওমানের ৬ শিল্পগোষ্ঠী

করোনা পরিস্থিতিতে নারীদের অবস্থা নিয়ে তোসন বলেন, “ওমানে আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে একযোগে নারীদের সমস্যা মোকাবেলার জন্য কাজ করেছি। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে, মহিলাদের প্রধান সমস্যা ছিল উদ্বেগ, বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলাদের। যাইহোক, আমরা এই সংকটের সময় তাদের সান্ত্বনা দিতে এবং সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে হটলাইনে সেবা দিয়েছি। আমি এটা বলতে পেরে আনন্দিত যে অনেকে এই সেবা থেকে উপকৃত হয়েছে এবং আমরা ওমানকে উদাহরণ হিসেবে ব্যবহার করব যাতে অন্যান্য দেশেও এই ধরনের সেবা চালু করে।”

আরও পড়তে পারেন : ওমানে অন্যরকম লকডাউনে এক মরুচারী

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!