ওআইসি মহাসচিবের কাছে জাবেদ পাটোয়ারীর পরিচয়পত্র পেশ
বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে ওআইসি মহাসচিব ড. ইউসুফ বিন আহমেদ আল ওথাইমিনের কাছে সৌদি আরবে নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। রাষ্ট্রদূতের পাশাপাশি তিনি ওআইসিতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করবেন।
এ সময় রাষ্ট্রদূত ওআইসির মহাসচিবের সাথে দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। বাংলাদেশের সাথে সংস্থাটির আরও সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যার জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে চলমান মামলার বিষয় উল্লেখ করলে মহাসচিব মামলার তহবিল বাড়াতে সম্পূর্ণ সহায়তা প্রদান ও বাংলাদেশকে এ বিষয়ে রাজনৈতিক ও নৈতিক সহায়তা প্রদানের আশ্বাস প্রদান করেন। রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গাদের দ্রুত মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে ওআইসির পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য মহাসচিবকে অনুরোধ করেন।
বাংলাদেশকে ওআইসির সক্রিয় সদস্য হিসাবে উল্লেখ করে মহাসচিব বাংলাদেশে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুরোধ করেন যা সংস্থাটির সাথে বাংলাদেশের সম্পৃক্ততা বাড়াতে সাহায্য করবে। এছাড়া বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমুহে ওআইসির সদস্যভুক্ত নাগরিকদের বৃত্তির তথ্য প্রদানের অনুরোধ করা হয় যা ওআইসির ডাটাবেজে প্রকাশ করা হবে।
বাংলাদেশকে নারীর ক্ষমতায়নের রোল মডেল হিসাবে প্রশংসা করে মহাসচিব বলেন, এ সফলতা অর্জনে বাংলাদেশের জন্য ওআইসি গর্বিত। বৈঠকে মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের জন্মভূমিতে মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তন ও আইসিজেতে রোহিঙ্গাদের গণহত্যার বিরুদ্ধে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য ওআইসি সর্বদা বাংলাদেশের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন মহাসচিব।
এর আগে সোমবার বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী মক্কার গভর্নর প্রিন্স খালিদ বিন ফয়সালের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় রাষ্ট্রদূত মক্কা অঞ্চলে বসবাসরত বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি অভিবাসীদের সাহায্য করার জন্য গভর্নরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শুভেচ্ছা বার্তা পৌঁছে দেন।
রাষ্ট্রদূত করোনাকালীন বাংলাদেশি অভিবাসীদের চিকিৎসা প্রদান ও জরুরি খাদ্য সাহায্য প্রদানের জন্য গভর্নরের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। রাষ্ট্রদূত গভর্নরকে বাংলাদেশি অভিবাসীদের অভিভাবক হিসেবে উল্লেখ করে করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে তাদের চাকরি ও কাজের নিশ্চয়তা অব্যাহত রাখার ব্যাপারে অনুরোধ জানান।
মক্কার গভর্নর সৌদি আরবের অর্থনীতিতে বাংলাদেশি অভিবাসীদের ভূমিকা উল্লেখ করে তাদের কঠোর পরিশ্রম, সততা ও নিষ্ঠার উচ্চকিত প্রশংসা করেন। হৃদ্যতাপূর্ণ এ বৈঠকে গভর্নর বাংলাদেশের সাথে দীর্ঘদিনের ভাতৃপ্রতীম বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন এবং আগামী দিনে এ সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশাবাদ প্রকাশ করেন। গভর্নর প্রিন্স খালিদ বিন ফয়সাল তার অঞ্চলে বসবাসরত বাংলাদেশি অভিবাসীদের সহায়তার আশ্বাস দেন।
এ সময় গভর্নর জানান, করোনাভাইরাস বিস্তার এর ঝুঁকি না নিয়ে সকল স্বাস্থ্যগত সুরক্ষা মেনে পবিত্র উমরা পালনের জন্য হারাম শরীফ ধীরে ধীরে খুলে দেয়া হবে।
রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বৈঠকের জন্য গভর্নরকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান এবং বাংলাদেশকে অব্যাহত সহায়তা প্রদানের জন্য বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ ও যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এ সময় দূতাবাস ও কনস্যুলেটের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।