এয়ারবাস ঘুষ কেলেঙ্কারিতে সরে দাঁড়াল এয়ারএশিয়ার সিইও-চেয়ারম্যান
বিভিন্ন দেশে উড়োজাহাজ বিক্রিতে ঘুষ দেয়ার অভিযোগ ৪০০ কোটি ডলারে দফারফা করেছে এয়ারবাস। তবে এ সম্পর্কিত আরো কিছু নতুন তথ্য সামনে আসায় আবারও নতুন করে ফেঁসেছে এয়ারএশিয়া।
তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এয়ারবাসের ঘুষের সুবিধা ভোগ করে নতুন উড়োজাহাজের অর্ডার নিশ্চিত করেন কর্মকর্তারা। এমন অভিযোগ সামনে আসায় প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) টনি ফার্নান্দেস এবং চেয়ারম্যান কমারুদিন মেরানুন তাদের পদ থেকে সাময়িকভাবে সরে দাঁড়িয়েছেন। তবে এ অভিযোগ জোরালোভাবে অস্বীকার করছে এয়ারএশিয়া ।
এয়ারবাস ঘুষ কেলেঙ্কারির পরিপ্রেক্ষিতে,বাজেট এয়ারলাইনটির বিরুদ্ধে অভিযোগ এর বসদের ৫০ মিলিয়ন ডলার ঘুষ দিয়ে ১৮০ টি উড়োজাহাজের অর্ডার নিশ্চিত করা হয়েছিল।
এই অভিযোগগুলির তদন্ত ত্বরান্বিত করতে এয়ারএশিয়ার সিইও এবং বোর্ডের চেয়ারম্যান দুজনই তাদের পদ থেকে সাময়িকভাবে সরে দাঁড়িয়েছেন। তারা তদন্ত চলাকালীন সময়ে তাদের কাজ থেকে কমপক্ষে দুই মাসের জন্য সরে দাঁড়াচ্ছেন বলে জানা গেছে।
এ অবস্থায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পদে আসীন হচ্ছেন সংস্থাটির সিনিয়র এক্সিকিউটিভ থারুমালিংম কানাঙ্গলিংম। উচ্চপদে এই পরিবর্তনগুলি শিগগিরি কার্যকর করা হবে বলে জানা গেছে।
এদিকে রয়টার্স জানিয়েছে, সরে দাড়ালেও উড়োজাহাজ শিল্পের বর্তমান দুর্দিনের কথা বিবেচনা করে উভয় কর্মকর্তাকে বিমানসংস্থাটির উপদেষ্টা হিসেবে রাখা হবে।
বোর্ডের অ-নির্বাহী সদস্যদের নিয়ে গঠিত একটি কমিটি তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলি পর্যালোচনা করবে। তদন্ত এবং পর্যালোচনা থেকে বেরিয়ে আসা তথ্যের ভিত্তিতে তারা যে কোনও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবেন বলে সংস্থাটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে।
সেখানে বলা হয়েছে, “কমিটির মূল লক্ষ্য হ’ল ঘুষের অভিযোগগুলি পর্যালোচনা করা, যেহেতু এটি এয়ারএশিয়া গ্রুপকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে সেহেতু সবকিছু পর্যালোচনা করে যেকোন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।”
তবে প্রাথমিকভাবে সংস্থাটি ঘুষের অভিযোগ অস্বীকার করে এয়ারএশিয়া বলেছে, আমরা ঘুষের অভিযোগ ‘জোরালোভাবে প্রত্যাখ্যান’ করছি। আমাদের দাবি এয়ারবাসের কাছ থেকে ১৮০ টি বিমান কেনার উপহার হিসেবে সেই অর্থ আমাদের দেয়া হয়েছিল।
পদ থেকে সরে দাঁড়ানো এয়ারএশিয়ার দুই প্রধান কামারুদিন এবং ফার্নান্দিসও তাদের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ তীব্রভাবে অস্বীকার করেছেন।
স্থানীয় এক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তাদের বক্তব্য হল, “আমরা এয়ারএশিয়ার পরিচালক হিসাবে আমাদের পক্ষ থেকে অন্যায় বা দুর্নীতি সমস্ত অভিযোগ স্পষ্টভাবে অস্বীকার করছি। আমরা যে সংস্থার সাথে আজীবন ধরে জড়িত সেই সংস্থার বিশ্বজুড়ে গড়ে উঠা ইমজকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে এমন কোন কাজ করার প্রশ্নই আসেনা।”
এদিকে এই দুর্নীতি তদন্তে মালয়েশিয়ার দুর্নীতি দমন কমিশন (এমএসিসি) অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখতে নিজেদের পক্ষ থেকেও তদন্তও শুরু করেছে। এর জন্য তারা যুক্তরাজ্যের তদন্ত সংস্থা এসএফওর সাথেও যোগাযোগ রাখছে বলে জানা গেছে।
এর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্যের সাথে এয়ারবাস ৪০০ কোটি ডলারের সমঝোতার পরিপ্রেক্ষিতে এয়ারএশিয়ার বিরুদ্ধে এসব বিস্তারিত অভিযোগ উঠে আসে আলোচনায়।
সবচেয়ে বড় কথা হল এই অভিযোগটি তখনই এসেছে যখন করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে এই অঞ্চলে বিমানসংস্থাটির চাহিদা কমে যাওয়ায় তারা বেশ খারাপ সময় পার করছে।
আগের খবর
বসদের ঘুষ দিয়ে এয়ার এশিয়ার অর্ডার পেয়েছিল এয়ারবাস