এতিমখানায় শৈশব কাটানো লিওনার্দো এখন শীর্ষস্থানীয় ধনকুবে!

১৯৪২ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় স্বামী হারিয়ে চার সন্তান নিয়ে ইতালির মিলানের সড়কে দিন কাটছিল গ্রাজিয়া রোক্কোর। নিজের ও সন্তানদের জন্য খাবার জোগাড় করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছিল। কোনো উপায় না দেখে সাত বছরের ছেলে লিওনার্দো দেল ভেসিওকে মিলানের মার্তিনিত ইনস্টিটিউটের এতিমখানায় রেখে আসেন গ্রাজিয়া। কে জানত, সেই ছেলে একদিন বিশ্বখ্যাত উদ্যোক্তা হবেন, জায়গা করে নেবেন ইতালির শীর্ষস্থানীয় ধনকুবেরদের তালিকায়।

মঙ্গলবার এনডিটিভির খবরে বলা হয়, লিওনার্দো ফরাসি–ইতালিয়ান ফ্যাশন কোম্পানি এসেলরলাক্সোরিকার প্রধান। তাঁর প্রতিষ্ঠান সানগ্লাস, লেন্স, চশমাসহ চোখে ব্যবহৃত বিভিন্ন সামগ্রী ও মেডিকেল প্রযুক্তিপণ্য তৈরি করে। বিশ্বজুড়ে ১০ হাজার কর্মী রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। চশমা ও সানগ্লাসের বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড ওকলে এবং রে–বেন এই প্রতিষ্ঠানের।

শৈশবের স্মৃতিচারণা করে লিওনার্দো বলেন, ‘বিশ্বযুদ্ধের মধ্যে আমার জন্মের পাঁচ মাস আগে বাবা মারা যান। অসহায় মা আমাকে অনাথ আশ্রমে রেখে আসেন। মাত্র ১৪ বছর বয়সে আমি কাজ শুরু করি। তখন আমি একজন দক্ষ কারুশিল্পী হতে চাইতাম। মনে হতো, তাহলে আর ক্ষুধায় কষ্ট পেতে হবে না।’

Travelion – Mobile

২২ মে লিওনার্দোর জন্মদিন। তাঁর বয়স এখন ৮৭ বছর। এই বয়সে এসে জীবনের নতুন লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন তিনি। নিজের প্রতিষ্ঠানকে ১০ হাজার কোটি ইউরোর বেশি বাজারমূল্যের কোম্পানিগুলোর ক্লাবে দেখতে চান এই উদ্যোক্তা। লিওনার্দোর প্রতিষ্ঠানের এখনকার বাজারমূল্য প্রায় ৬ হাজার ৬০০ কোটি ইউরো।

ফ্যাশন টাইকুন লিওনার্দো নিজের অতীত নিয়ে সংবাদমাধ্যমে কথা বলতে খুব একটা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না। সব সময় কাজে ডুবে থাকতে চান তিনি। কখনো দিনে ২০ ঘণ্টাও কাজ করেন। মৃদুস্বরে কথা বলেন। তবে তিনি নিজের এখনকার অবস্থান নিয়ে অহংকার করেন, এমনটাও নয়। সংবাদপত্রে প্রকাশিত বিভিন্ন নিবন্ধ–ফিচারে লিওনার্দোকে মাটির মানুষ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

তরুণ বয়সে কারখানায় কাজ করতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিলেন লিওনার্দো। এতে তাঁর বাঁ হাতের তর্জনী কেটে ফেলতে হয়। এরপর বিভিন্ন দোকানে কাজ করে তাঁর দিন কাটে। সেখান থেকে ফ্যাশন সাম্রাজ্য গড়েছেন এ উদ্যোক্তা। তবে এখনো খুব সাধারণ জীবনযাপন করেন তিনি।

অনেকেই মনে করেন, অচিরেই লিওনার্দোর ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে প্রায় ৩ হাজার কোটি ডলারে, যা তাঁকে ইতালির সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির স্বীকৃতি এনে দেবে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!