ইস্তাবুলে বিনম্র শ্রদ্ধায় জাতীয় শোক দিবস পালন

তুরস্কের বাণিজ্যিক রাজধানী এবং ঐতিহাসিক শহর ইস্তাবুলে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের উদোগে যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদত বার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয়েছে। ইস্তাবুলে বসবাসরত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি এতে অংশগ্রহণ করেন।

গতকাল রবিবার (১৫ আগস্ট) সকালে কনস্যুলেটে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণের মধ্য দিয়ে এই অনুষ্ঠানের সূচনা করেন কনসালজেনারেল ড. মোহাম্মাদ মনিরুল ইসলাম। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়।

কনস্যুলেটর কর্মকর্তারা দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পড়ে শোনান। এরপর বঙ্গবন্ধুর গৌরবময় জীবন ও কর্মের উপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।

Travelion – Mobile

কনস্যুলেটর ফ্রেন্ডশিপ হলে আয়োজিত আলোচনা সভার সূচনা বক্তব্যে কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মাদ মনিরুল ইসলাম সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের শহিদ সদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানানা।

তিনি বঙ্গবন্ধুর আপোসহীন নেতৃত্ব, অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও জনকল্যাণমুখী রাজনৈতিক দর্শনের বর্ণনা করে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ঠ ভূমিকা ও অসামান্য অবদানের কথা তুলে ধরেন।

কনসাল জেনারেল ড. ইসলাম, বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্রনীতির মূলমন্ত্র ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারোর প্রতি বৈরিতা নয়’- উল্লেখ করে বলেন, বিশ্বশান্তি ও অগ্রগতিতে বঙ্গবন্ধু অবদানের কথা বর্ণনা করেন। ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত এবং সুখী-সমৃদ্ধ যে ‘সোনার বাংলা’ গড়ার স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু দেখেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ তা বাস্তবায়নের পথে অগ্রসারমান।

মুজিব শতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ইস্তাম্বুল বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাভাষা শিক্ষা কোর্স চালুকরণ, তুর্কি ভাষায় বঙ্গবন্ধু্র উপর প্রামান্যচিত্র নির্মাণসহ, কনস্যুলেট কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচি ও উদ্যোগ সম্পর্কে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবহিত করে কনসাল জেনারেল ড. ইসলাম বলেন, এর মধ্য দিয়ে একদিকে যেমন বাংলাদেশ ও তুরস্কের জনগণের মধ্যকার বোঝাপড়া ও যোগাযোগ আরও সুদৃঢ় হবে, অন্যদিকে তা দুই দেশের ভ্রাতৃপ্রতিম সম্পর্ককে আরো মজবুত ও জোরালো করবে।

এসময় বক্তাগণ বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশকে যথাযথভাবে তুরস্কে উপস্থাপনের জন্য কনস্যুলেটের নিরলস প্রচেষ্টা ও উদ্যোগের প্রশংসা করেন। প্রবাসী বাংলাদেশিরা সক্রিয় ও স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। তারা মন্তব্য করেন, বঙ্গবন্ধুর অপরিসীম ত্যাগ, সাহস, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বিশ্ব মানচিত্রে বংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছে। তারা বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ-দর্শন, চিন্তা-চেতনা, সংগ্রাম-কর্ম সম্পূর্ণভাবে ধারণ ও লালন ব্যতীত স্বাধীনতার স্বাদ পরিপূর্ণভাবে আস্বাদন করা সম্ভবপর না।

১৫ আগস্টের বেদনাদায়ক ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে বক্তারা বলেন যে, যারা বাংলাদেশের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অগ্রগতি ব্যাহত করতে চেয়েছিল, তারাই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ইতিহাসের এই জঘন্যতম হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত।

সবশেষে বঙ্গবন্ধু এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে সকল শহিদদের আত্মার মাগফিরাত এবং দেশের ও জনগণের শান্তি, প্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!